‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর লোক, আমার বাবা এমপি’

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকায় একটি স্কুলের সামনে রাস্তায়।

পুলিশ সার্জেন্ট ঝোটন শিকদারের ফেসবুক পাতায় পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পার্কিং করা নিয়ে কালো রঙের গাড়িতে পেছনের সিটে বসা এক মহিলার সাথে তার কথা কাটাকাটি চলছে।

ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, “গাড়ি ডাবল করে রেখে মানুষকে হয়রানি করছেন কেন? উত্তর দেন।”

ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ মহিলা বলে ওঠেন, “আমাকে চেন তুমি? কার গাড়ি জানো?”

ক্ষুব্ধ ঐ নারীকে এরপর বলতে শোনা যায়, “কার গাড়ি ছবি তোলো তুমি? এটা সরকারি দলের লোকের গাড়ি…বেশি তেড়িবেড়ি করবা না। তোমার মত সার্জেন্ট, কয় টাকা বেতনের চাকরি করো…আমরা প্রধানমন্ত্রীর লোক…অমার বাবা জাতীয় কমিটির সদস্য, এমপি..”

জবাবে সার্জেন্ট শিকদারকে বলতে শোনা যায়, “আমি দুই টাকা বেতনের চাকর..।”

ঐ মহিলাতে তখন বলতে শোনা যায়, “চাকরই তো।”

ঝোটন শিকদার মঙ্গলবার এই পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজটি পোস্ট করার পর তা নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।

বিশ ঘণ্টায় ১২ হাজার লোক পোস্টটি শেয়ার করেছেন। পাঁচ হাজার মানুষ মন্তব্য করেছেন। সিংহভাগ মানুষই ঐ মহিলার ক্ষমতা প্রদর্শনের তীব্র সমালোচনা করছেন।

আচার্য মিলন নামে একজন লিখেছেন, “…মেয়েকে ভদ্রতার শিক্ষা না দেওয়ায় তার ক্ষমতাশালী বাবাকে ক্ষমতাহীন করা হোক…”

শেখ শফিউল্লাহ নাম একজন মন্তব্য করেছেন, “মহিলাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক। তিনি রাস্তায় সরকারি দলের নাম বিক্রি করছেন।”

সামিয়া আরিন নামে একজন লিখেছেন, “…বাচ্চারা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেল শৃঙ্খলা কাকে বলে। তাও ধামড়া ধামড়া মানুষগুলোর একটুও লজ্জা লাগেনা অনিয়ম করতে।”

বিবিসিকে সার্জেন্ট ঝোটন শিকদার:
টেলিফোনে সার্জেন্ট ঝোটন শিকদার বিবিসিকে বলেন, ঐ মহিলার গাড়িটি “ডাবল করে” পার্কিং করে রাখার ফলে পুরো রাস্তাটিতে প্রচণ্ড যানজট তৈরি হয়ে যায়।

“আমি উনাকে বললাম দ্রুত তার ড্রাইভারকে ফোন করে ডেকে গাড়িটা যেন সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করেন, কিন্তু বদলে তিনি আমাকে ধমকাতে শুরু করে দেন।”

এই ঘটনা এবং তা ফেসবুকে প্রচার নিয়ে কোনো চাপের মুখে পড়েছেন কিনা – জানতে চাইলে মি শিকদার বলেন, উচ্চপদস্থ একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি তার মুখ থেকে জানতে চেয়েছিলেন।

ঝগড়ার ছবি কেন তুললেন, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “অনেক সময় মহিলারা হয়রানির নানা অভিযোগ করেন। আমি তাই প্রমাণ রাখার জন্য ছবি তুলেছি।”

ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করা কি পুলিশের বিধির ভেতরে পড়ে? এই প্রশ্নে সার্জেন্ট শিকদার স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, “ভাল করেছি কি মন্দ করেছি মানুষ সেই সিদ্ধান্ত নেবে। বিধি ভঙ্গ করেছি কিনা তা আমার সিনিয়রদের কাছে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমার নিজের কোনো অনুতাপ নেই। ”
তবে ফেসবুকে শত শত মানুষ সার্জেন্ট শিকদারের প্রশংসাই করছেন।

কালো রঙের ঐ গাড়ির বিরুদ্ধে বেআইনি পার্কিং করে যানজট তৈরির একটি মামলা হয়েছে।

যাত্রী ঐ মহিলার সাথে কথা বলার জন্য বিবিসির পক্ষ থেকে ফেসবুকে মেসেজ করা হয়েছিল। তিনি এখনও সাড়া দেননি।


Spread the love

Leave a Reply