আর্মেনীয় নিধনকে ‘গণহত্যা’ স্বীকৃতি জার্মানির : রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করল তুরস্ক

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্ক:

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আর্মেনীয়দের ওপর পরিচালিত অটোম্যান সাম্রাজ্রের হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জার্মান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে একটি প্রস্তাব পাসের পর জার্মানি থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে তুরস্ক। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

আর্মেনিয়ার দাবি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ১৫ লাখ আর্মেনীয়কে হত্যা করে অটোম্যান তুরস্ক। যদিও সংখ্যাটা অনেক বাড়িয়ে বলা হয়েছে, এমন যুক্তিতে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তুরস্ক। তবে, জার্মানির আগেও ফ্রান্স-রাশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশ এ হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে।

তুরস্কের স্থানীয় একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হুসেইন আভনি কারস্লিগলু দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে তুরস্কে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এর আগে, আর্মেনিয়া হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জার্মানির ওই প্রস্তাব পাস হলে তা দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় তুরস্ক। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেন, এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হলে তা হবে অযৌক্তিক। দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী নুমান কুর্তুলমাস জার্মানির ওই প্রস্তাব পাসকে ঐতিহাসিক ভুল বলে মন্তব্য করেছেন।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলকে ফোন করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এরদোয়ান বলেন, জার্মানি যদি এ ধরনের খেলায় মেতে উঠে তাহলে তা দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে। তবে সকল হুমকি উপেক্ষা করে ঐতিহাসিক প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয় জার্মানির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে ১৯১৪ সালে জার্মানি ও অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেয় তুর্কি অটোমান সাম্রাজ্য। আর্মেনীয়রা তখন অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনেই ছিল। তবে যুদ্ধ চলাকালে অটোমান কর্তৃপক্ষ আর্মেনীয়দের ‘ঘরের শত্রু’ বলে প্রচারণা চালাতে থাকে। ১৯১৫ সালের ২৪ এপ্রিল অটোমান সরকারের শত্রু সন্দেহে আর্মেনীয় সম্প্রদায়ের কয়েকশ নেতা ও বুদ্ধিজীবীকে কনস্টান্টিনোপলে (বর্তমান ইস্তাম্বুল) বন্দি করা হয়। পরবর্তীতে তাদের বেশির ভাগকেই হত্যা করা হয়। কাউকে কাউকে দেওয়া হয় নির্বাসন। আর্মেনীয়রা ওই ২৪শে এপ্রিল দিনটিকেই গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। একই সাথে ওই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বহুবছর যাবৎ।


Spread the love

Leave a Reply