ইরানে একাধিক শহরে ফের ইসরায়েলি হামলা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে সতর্ক করলো ইরান
লাইভঃ ইরানের একাধিক শহরে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
বিবিসি ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ফার্সের বরাতে জানিয়েছে, মাত্র কিছুক্ষণ আগে ইসরায়েল ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের চারটি স্থানে হামলা চালিয়েছে।
ফার্স আরও জানিয়েছে যে আজ শনিবার সকালে ইরানের খোররামাবাদ শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। পাশাপাশি, দেশটির কেরামানশাহ শহরেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
তবে ইস্ট আজারবাইজান প্রদেশের তাবরিজ শহরে অবস্থিত তাবরিজ রিফাইনারি’র জনসংযোগ বিভাগ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে যে তাদের কোনও স্থাপনার ওপর আক্রমণ করা হয়নি বা কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
তাতে এও জানানো হয়েছে যে পরিশোধনাগারের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে সতর্ক করলো ইরান

তেহরানের প্রতিশোধমূলক হামলা বন্ধে ইসরায়েলকে সাহায্য না করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সকে সতর্ক করেছে ইরান।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি এই তিনটি দেশ ইসরায়েলকে সহায়তা করে, তবে এই অঞ্চলে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি এবং জাহাজগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করবে তেহরান।
হামলা বন্ধ না করলে ‘তেহরান পুড়বে’- ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ইরান যদি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যায় তাহলে ‘তেহরান পুড়বে’ বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।
সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি মূল্যায়নের সময় করা মন্তব্যে কাৎজ বলেছেন, “ইরানের একনায়ক, দেশটির নাগরিকদের জিম্মিতে পরিণত করেছে।”
“তারা এমন একটি বাস্তবতা তৈরি করছেন, যেখানে তাদের, বিশেষ করে তেহরানের বাসিন্দাদের, বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর অপরাধমূলক হামলার চরম মূল্য দিতে হবে।”
ইরানের নয় জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত: ইসরায়েল সেনাবাহিনী

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের নয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।
এর আগে, ইরানের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতের প্রাথমিক হামলার পর ইসরায়েল অবশ্য ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞ নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল ।
এখন তারা বলছে, অভিযানের “শুরুতেই” নয়জন নিহত হয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পৃথক বক্তব্যে ইসরায়েলি একজন সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, হামলায় এসফাহান এবং নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রয়টার্সকে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরানের ১৫০ টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করা হয়েছিল।
ইসরায়েলের দিকে ছোড়া বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
একে আমরা ‘প্রতিরক্ষা যুদ্ধ’ হিসেবে দেখছি- ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক প্রধান
“এটিকে প্রতিরক্ষা যুদ্ধ হিসেবে দেখছি আমরা,” ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক প্রধান এবং ইসরায়েলি নৌবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ আমি আয়ালন শনিবার সকালে বিবিসির নিউজআওয়ার প্রোগ্রামে এ মন্তব্য করেছেন।
তিনি ব্যাখ্যা করেন,”ইরানকে অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখেন বেশিরভাগ ইসরায়েলি”।
“তারা সামরিক পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের খুব কাছাকাছি। আমাদের গোয়েন্দা তথ্যে আমি যতটা বুঝতে পেরেছি, এটা স্পষ্ট ছিল যে আমরা যদি এখনই এটি (হামলা) না করি, তবে আমাদের আর সেই সামর্থ্য থাকবে না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই হামলায় ভূমিকা সম্পর্কে উপস্থাপক সিলিয়া হ্যাটন জানতে চাইলে আয়ালন বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি এই ধারণা দিয়েছিলেন যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী যা কিছু করবেন তার সবই সে সমর্থন করবে।”
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু “খারাপ লোকের ভূমিকায় অভিনয় করবেন” এবং আক্রমণ করবেন, “আর আমেরিকা হবে ভালো লোক”।
একদিন পর ইরান যখন “আমেরিকার সাথে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর না করার পরিণতি বুঝতে পারবে”, তখন “তার (ট্রাম্প) পক্ষে এই চুক্তি অর্জন করা সহজ হবে।”
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাত সৈন্য ‘সামান্য আহত’ – ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে যে মধ্য ইসরায়েলে ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর রাতে তাদের সাত সৈন্য “সামান্য আহত” হয়েছেন।
সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে যে সৈন্যদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্স ইহুদি ও মার্কিন স্থাপনাগুলির নিরাপত্তা জোরদার করেছে
এএফপি জানিয়েছে, ফ্রান্স তার ভূখণ্ডে ইহুদি ও মার্কিন স্থাপনাগুলির নিরাপত্তা জোরদার করছে, ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিটেইল্যুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রধানদের কাছে পাঠানো এক অভ্যন্তরীণ আদেশের উদ্ধৃতি দিয়ে এই খবর জানিয়েছে ।
মিঃ রিটেইল্যু নির্দেশ দিয়েছেন যে “উপাসনাস্থল, স্কুল, রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক ভবন… উৎসবমুখর, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় সমাবেশ”-এর আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা উচিত।
এই আদেশ “ইসরায়েলি ও মার্কিন স্বার্থের পাশাপাশি ইহুদি সম্প্রদায়ের স্থাপনাগুলির ক্ষেত্রেও” প্রযোজ্য।
“বিদেশী শক্তির দ্বারা সন্ত্রাসী বা বিদ্বেষপূর্ণ কর্মকাণ্ডের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে এমন স্থানগুলির প্রতি “বিশেষ নজরদারি” জারি করা উচিত।
নাম্বার ১০ সংঘাতের ‘কূটনৈতিক সমাধান’ সমর্থন করে
শনিবার বিকেলে এক কথোপকথনে কেয়ার স্টারমার এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাতের “উত্তেজনা কমানোর প্রয়োজনীয়তা” নিয়ে একমত হয়েছেন।
ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্রের মতে, দুই নেতা মধ্যপ্রাচ্যের “গুরুতর উদ্বেগজনক পরিস্থিতি” নিয়ে আলোচনা করেছেন।
“প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত অংশীদারদের সাথে তার কথোপকথনের বিষয়ে আপডেট করেছেন এবং পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে যুক্তরাজ্য আগামী দিনে একটি কূটনৈতিক সমাধানকে সমর্থন করার জন্য তার মিত্রদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত,” রিড-আউটটি আরও বলা হয়েছে।
আরও জানতে সাথে থাকুন…