উপহার দেয়া হয়েছিল কোহিনূর : ভারতের স্বীকারোক্তি

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্ক:

জগদ্বিখ্যাত হীরক খন্ড কোহিনূর চুরি করা হয়নি, বা জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়াও হয়নি। অমূল্য এ রত্ন স্বেচ্ছায় ব্রিটিশদের উপহার দেয়া হয়েছিল। এমনটাই স্বীকারোক্তি দিয়েছে ভারত সরকার।  মহারানি ভিক্টোরিয়ার মুকুটে শোভা পাওয়া এ রত্ন বর্তমানে টাওয়ার অব লন্ডনে প্রদর্শনীর জন্য রাখা আছে। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে রানী এলিজাবেথ এই মুকুট মাথায় পরেন।

বহু বছর যাবৎ বিভিন্ন মহলে কোহিনূরসহ মোগল আমলের বেশকিছু প্রাচীন সামগ্রী ফিরিয়ে আনার দাবি করে আসছিল ভারত। সে লক্ষে চেষ্টাও কম হয়নি। অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস ফ্রন্ট নামের একটি সংগঠন এ নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত করেছিল। এরই জের ধরে কোহিনূর ফেরত আনার জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং আরো কী প্রচেষ্টা চালানো হবে তা ৬ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে আদালতে জানাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছিলো।

তবে সরকারের পদক্ষেপে এটি পরিষ্কার যে কার্যত কোহিনূর ফেরত পাবার আশা ছেড়ে দিয়েছে ভারত। কারন সোমবার ভারতের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, ব্রিটিশরা কোহিনূর চুরি করে নিয়ে যায়নি, ওটা তাদের উপহার দিয়েছিলেন মহারাজা রঞ্জিত সিং। সুতরাং ব্রিটিশদের কাছ থেকে ওই হীরা ফেরত চাওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। এছাড়াও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইনজীবী আরও জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মনোভাবও একই রকম। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কোহিনূর ফেরত পাবার দাবি ভারত সরকার আর কোনো দিনই জানাবে না।

২০১৩ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও যখন ভারত সফরে আসেন সাফ জানিয়েছিলেন, কোহিনূর আমাদের। তা ভারতকে ফেরত দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

কোহিনূরের সর্বজন স্বীকৃত ইতিহাস হচ্ছে, ত্রয়োদশ শতকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের গুন্টুর থেকে ৭৯৩ ক্যারেটের একটি হীরার খোঁজ মেলে। কালে কালে বহুবার পর তা এখন ১০৫ ক্যারেটের স্বচ্ছতম কোহিনূরে রুপ নেয়। আবিষ্কারের পর আকারে প্রায় একটি মুরগির ডিমের মতো বড় এই হীরাটি দিল্লির খিলজী ও মোগল শাসকদের হাতে চলে যায়। মোগল সম্রাট শাহজাহান এই হীরাকে তার ময়ুর সিংহাসনে স্থাপন করেন।

পরে পারস্যের শাসক নাদির শাহ দিল্লি আক্রমণ করে এই ময়ুর সিংহাসন এবং কোহ-ই-নূর পারস্যে নিয়ে যান। পারস্য সাম্রাজ্যের পতনের পর এই হীরা আফগানিস্তানের শাসকদের হাতে চলে যায়। তাদের কাছ থেকে এটি অধিকার করেন পাঞ্জাবের রাজা রণজিৎ সিং। রণজিৎ সিংয়ের পূত্র দুলীপ সিং ১৮৪৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নিজেই এই অমূল্য সম্পদ উপহার দিয়েছিলেন।

তবে কেউ কেউ দাবি করেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বহুমূল্যবান কোহিনূর লুট করে নিয়েছিলো। এবার ভারত সরকারের স্বীকারোক্তি এই বিতর্ক অবসানের পথ খুলে দিল।


Spread the love

Leave a Reply