লন্ডনে ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের সমর্থনে বিশাল জনসমাগমঃ সংস্কার ও বিচার সম্পূর্ন না করে বাংলাদেশে কোন নির্বাচনে হবে না

Spread the love

বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ  প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের সমর্থনে পূর্বলন্ডনের আলতাব আলী পার্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিশাল জনসমাগম চলছে। বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। উপস্থিত নাগরিকরা ড ইউনুসের পক্ষে বিভিন্ন শ্লোগান দিচ্ছেন। সমাবেশে বিএনপি নেতা কর্মীরা অংশ গ্রহন করেনি। বিএনপি ছাড়াও বিপুল সংখ্যক সাধারন প্রবাসি উপস্থিত হয়ে ডঃ ইউনূসের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেন। সমাবেশ থেকে বক্তারা জানান সংস্কার ও বিচার সম্পূর্ন না করে এবং জুলাই বিপ্লবের সনদের স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন নির্বাচনে হবে না। রিফর্ম বাংলাদেশের ব্যানারে আয়োজিত এই সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রশাজীবীরা অংশ নেন।

বক্তারা বলেন আমরা প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধ । ফ্যাসিস্ট আওয়া মীলীগের পুনর্বাসন বাংলাদেশের মাটিতে হবে না। ভারতীয় দালালদের হাতে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতা দিতে চাই না। ড; ইউনূস একমাত্র ব্যক্তি যিনি একজন নোবেল বিজয়ী। বিশ্বের ইতিহাসে একমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ডঃ ইউনূস বাংলাদেশকে উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। ডঃ ইউনূসের নেতৃত্বে আজ দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে । আমাদের ঘুরে দাঁড়ানো দেখে ভারত ও তার দালালরা খুশি না। বক্তারা বলেন আমরা কোন চাঁদাবাজকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় চাই না। দেশের কল্যানে ড; ইউনুসকে অন্তত ৫ বছর ক্ষমতায় দেখতে চান প্রবাসি বাংলাদেশিরা।


বক্তারা বলেন জুলাই গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের বিচার না করে নির্বাচন দিলে জুলাই শহীদদের প্রতি প্রতারণা করা হবে। জুলাই শহীদদের রক্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রথমে বিচার কার্যক্রম সম্পর্ন করতে হবে, সংস্কার করতে হবে , তারপর নির্বাচন হবে।

বক্তারা  টিউলিপ সিদ্দিককে উদ্দেশ্য করে বলেন, মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে টিউলিপ সরাসরি জড়িত, দুর্নীতি লুটপাটের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি টিউলিপ। তারা  টিউলিপকে পার্লামেন্ট থেকে বহিস্কার করার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের প্রতি দাবী জানান।

সমাবেশে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই সহ বেশ কিছু সামাজিক সংগঠন একাত্বতা পোষণ করে ড; ইউনূসের সমর্থনে বক্তব্য রাখে। কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণি পেশাজীবী মানুষের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। নায়ক শালমান শাহ মাতা নীলা চৌধুরী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তবর্গ উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।

প্রবাসিরা বলেন একটি রাজনৈতিক দলের মতের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে পারে না। একটি দল নয়, দেশের জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেও্যা হোক। এই জন্য প্রয়োজনে গণভোট দেওয়া হোক।
সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নারী উপস্থিত হয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। নারি প্রবাসিরা জানান, আমরা চাই ডঃ ইউনূসকে ৫ বছর সময় দেওয়া হোক। ডঃ ইউনূস একজন সম্মানিত মানুষ। বাংলাদেশের জন্য উনাকে প্রয়োজন । নারী প্রবাসীরা সংস্কার এবং বিচার কার্যক্রম সম্পূর্ন না করে নির্বাচন দিলে শহীদদের প্রতি অন্যায় করা হবে বলে মত প্রকাশ করেন।

May be an image of one or more people and crowd

সমাবেশে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে  কমিউনিটি নেতা ব্যারিস্টার আতাউর রহমান প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে ৪ দফা দাবী পেশ করেন।

দাবীগুলো হচ্ছেঃ

১/প্রবাসিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করণ, ম্যনাচেস্টার বার্মিংহাম থেকে এন আই ডি কার্ড সেবা প্রদান নিশ্চিত করণ।

২/ মন্ত্রী পরিষদে প্রবাসীদের অংশ গ্রহণ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের অংশ গ্রহন নিশ্চিত করন।
৩/ প্রবাসীদের সম্পদ সুরক্ষা অধিকার ও বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা ।
৪/ ওসমানী বিমানবন্দরে পূর্নাংজ্ঞ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা।

উল্লেখ্য ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস ৪ দিনের সরকারী সফরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। ইতিমধ্যে তিনি এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ওয়ার্শ, মেনজিস এভিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ওয়াইলি এবং অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের একদল সংসদ সদস্যের সাথে পৃথক বৈঠক করেছেন।

এই সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যানার পেস্টুন নিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন।

সফরের অন্যতম গুরুত্ব বহন করছে ড. ইউনূসের বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ। ওই সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে, লন্ডনে অবস্থানকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে লন্ডনের একটি অভিজাত হোটেলে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে পারে।


Spread the love

Leave a Reply