ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ভোট কাল

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি পাসের মধ্য দিয়ে ব্রেক্সিট বিতর্কের অবসান ঘটবে; নাকি চুক্তি প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে চলমান নাটকীয়তা আরও দীর্ঘায়িত হয়—মঙ্গলবার সেটি দেখার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব।

যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন প্রশ্নে ভোটাভুটি হবে। গত ১১ ডিসেম্বর এই ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চুক্তিটি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী মে শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করেন। দীর্ঘ প্রায় এক মাস পর মঙ্গলবার সেই ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তবে চুক্তি নিয়ে যে বিতর্ক তার কোনো সুরাহা হয়নি। বিরোধী দলগুলো এই চুক্তির বিরোধী। আর সরকারি দলের প্রায় ১০০ এমপি চুক্তির বিপক্ষে অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন বলে ধারণা। এসব বিরোধী এমপি সংসদে বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন এবং পাসের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ব্রেক্সিট কার্যকরে সরকারের ক্ষমতাকে বেশ সীমিত করেছেন।

সম্পাদিত ব্রেক্সিট চুক্তিতে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাদের সমর্থন পাওয়া গেলে যুক্তরাজ্য যে ইইউর সংঘ ছাড়ছে, সেটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে অবসান ঘটবে দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে চলমান ব্রেক্সিট নাটকীয়তার। আর চুক্তিটি প্রত্যাখ্যাত হলে আরও উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার ঘনঘটা নিয়ে দীর্ঘায়িত হবে চলমান বিতর্ক। সে ক্ষেত্রে আদৌ ব্রেক্সিট কার্যকর হবে কি না, তা নিয়েও আছে গুঞ্জন।

ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকরের পক্ষে-বিপক্ষে ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে সুস্পষ্ট বিভাজন আছে। তবে শেষ পর্যন্ত সম্পাদিত চুক্তিতে উল্লেখিত আয়ারল্যান্ড সীমান্ত ব্যবস্থাপনার (বেক স্টপ অ্যারেঞ্জমেন্ট) বিষয়টি মুখ্য বিবেচ্য হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে নর্দান আয়ারল্যান্ড আইনিভাবে যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা।

গত এক মাসে প্রধানমন্ত্রী মে এই আশঙ্কা নিরসনে ইইউর কাছ থেকে বাড়তি আশ্বাস আদায়ের চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু সে কাজে তিনি কতটা সফল, তার বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করেননি। আজ মঙ্গলবার ভোটাভুটির আগে মে তাঁর চুক্তির পক্ষে সমর্থন চেয়ে সংসদে আবারও ভাষণ দেবেন।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী মে বলেন, সাংসদেরা যদি সম্পাদিত ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন না করেন, তাহলে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের ঝুঁকি তৈরি হবে। ওই পরিস্থিতিতে ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়তো না-ও হতে পারে। তিনি বলছেন, চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার অর্থ হবে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া। গণভোটের ফলাফল যদি বাস্তবায়ন করা না হয়, তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি চরম অবজ্ঞার নজির তৈরি করবে এবং রাজনীতির প্রতি মানুষের আস্থায় চিড় ধরাবে বলে হুঁশিয়ার করে দেন তিনি।

বিরোধী দলের নেতা জেরেমি করবিন বলেন, তাঁর দল চুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নেবে। সরকার সংসদে চুক্তি পাসে ব্যর্থ হলে তাঁর দল সরকারের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত অনাস্থা প্রস্তাব উপস্থাপন করবে। করবিন বলছেন, বেক্সিট চুক্তি নিয়ে অচলাবস্থা নিরসনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত। ওই নির্বাচনে বিজয়ী দল ব্রেক্সিট কার্যকরে নতুন করে সমঝোতা শুরুর অধিকার পাবে।

সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হলে প্রধানমন্ত্রী মে তিন দিনের মধ্যে বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপনের সুযোগ পাবেন। সেই প্রস্তাবও যদি প্রত্যাখ্যাত হয়, তবে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হবে যুক্তরাজ্যকে। অথবা সংসদ চাইলে ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা বাড়িয়ে নিতে পারে। মধ্যবর্তী নির্বাচন বা পুনরায় গণভোটের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারে সংসদ।


Spread the love

Leave a Reply