মন্তব্য প্রতিবেদন : “আইএস সৌদি আরবের সৃষ্টি ,অতএব শরণার্থী বিষয়ে মুসলিম দেশগুলোরও দায়দায়িত্ব আছে”

Spread the love

10984618_750005745096843_2962012956715571005_nমোঃমশাহিদ আলী:
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ১৫ হাজার সিরিয় শরণার্থী গ্রহন করবেন । পাশাপাশি আইএস”র ওপর বিমান হামলা করবেন । সিদ্ধান্তটা সঠিক বলে আমি মনে করি ।.যাদের কারনে আজকে হাজার হাজার শরণার্থী সাগরে ভাসছে । আয়লান” র মতো শত শত শিশুদের জীবন দিতে হচ্ছে এই আইএস এর কারনে । তাদেরকে এতো সহজে ছেড়ে দেয়াটা অনুচিত হবে বলে আমি মনে করি । ইসলাম কখনো আইএস”র মতো অমানবিকতা সাপোর্ট করেনি । ইসলাম মানবতার ধর্ম ,শান্তির ধর্ম । মানুষ হত্যার জন্য ইসলাম না । যারা মনে করেন আইএস পশ্চিমাদের সৃষ্টি তাদের কে বলবো ধারনাটা পুরোপুরি সঠিক না । কারন আইএস পশ্চিমারা একা সৃষ্টি করেনি , এর পেছনে সৌদি আরবও জড়িত রয়েছে । সব গুলো মুসলিম রাষ্ট্রের যুদ্ধের জন্য প্রধানত দায়ি সৌদি আরব । কারন প্রভু রাষ্ট্রগুলো দিয়ে যদি সমকক্ষ মুসলিম দেশগুলোকে ধবংশ করা না যায় তাহলে সৌদি আরব কিভাবে মুসলিম বিশ্বে প্রতিনিধিত্ব করবে ? যার অংশ বিশেষ হিসেবে পারমানবিক অশ্রের অযুহাত দিয়ে ইরাক পতন, ফিলিস্তিন যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সে লক্ষে ইসরাইল বাহিনী দিয়ে একের পর এক আক্রমন ,সিরিয়া যুদ্ধ এসবইতো কলকাঠি সৌদি আরবের । এদিকে সিয়া – সুন্নি দ্বন্ধে ইয়েমেনে সরাসরি যুদ্ধ করছে সৌদি আরব ।সেখানেও হত্যা করা হচ্ছে মানুষকে । ধংবশ করা হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি । আরেকটা বিষয় মনে রাখতে হবে সৌদি আরব সরকার পশ্চিমাদের অনুগত একটি পুতুল সরকার মাত্র ।
আইএস বাহিনীর ঘৃণ্যতা থেকে বাঁচার তাগিদে যে সকল নারী পুরুষ ও শিশুরা ইউরোপের দিকে ছুটে এসেছে তাদের জন্য কি একটুও অন্তর কাঁদেনি এই সৌদি সরকারের ? যে মুহুর্তে হাজার হাজার শরণার্থী ইউরোপে এসে একটুকু আশ্রয়ের জন্য সংগ্রাম করছে ,আয়লান্ দের মতো শিশুরা সাগরে প্রাণ দিচ্ছে ঠিক সেই মুহর্তে যুক্তরাষ্ট ভ্রমণে এসে পুরো একটি হোটেল ভাড়া করে বিলাসিতা করছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। যুক্তরাষ্ট্রের ‘পলিটিকো’ সাময়িকীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন এলাকার ২২২টি কক্ষের ফোর সিজন হোটেল পুরোটাই সৌদি বাদশাহর জন্য ভাড়া নেওয়া হয়। ৭৯ বছর বয়স্ক বাদশাহ শনিবার পর্যন্ত ওই হোটেলে ছিলেন। ওই হোটেলে আরো ছিলেন সৌদি রাজপরিবারের সদস্য, সৌদি কূটনীতিক ও কর্মচারীরা। আর বৃহস্পতি থেকে শনিবার পর্যন্ত হোটেলে থাকার জন্য আগে থেকে যারা বুকিং করেছিলেন, তাঁরা শহরের অন্য হোটেলে চলে যান।
বিলাসিতার কারণে খবরের শিরোনাম হওয়া সৌদি আরবের রাজপরিবারের জন্য এই প্রথম নয়। গত মাসে সৌদি রাজার অবসর কাটানো উপলক্ষে ‘ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরা’-এর একটি সৈকত খালি করে দেওয়া হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বাদশাহের বিমান অবতরণের স্থানে সারিবদ্ধ ছিল কয়েক ডজন লিমো।সৌদি বাদশাহর তাকলাগানো বিলাসিতায় মার্কিনিদের কোনো বিকার নেই। কারণ সৌদি রাজপরিবারের খরচে চাঙ্গা হয়ে ওঠে ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউনের অর্থনীতি। একই নীতি গ্রহন করেন সৌদি অধিবাসীরাও । লন্ডনে এসে ট্যুরিস্ট হিসেবে শুধু আমোদ প্রমোদের জন্য সর্বোচ্চ অর্থ খরছ করেন এই সৌদি আরবিয়ানরা । গত বছর এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান দিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে ডেইলিমেইল । রিপোর্টে আরো বলা হয় সৌদিদের খরছকৃত এসকল অর্থের বেশির ভাগই ব্যায় হয় নারী আর মদের পেছনে । শুনতে কিংবা ভাবতে ঘৃনা হয় এসকল ঘৃণ্য কর্যকলাপ দেখলে । ইসলাম তো কখনো এসব শিক্ষা দেইনি ? যারা ইসলামের লাইসেন্স নিয়ে কথা বলেন ( আলিম ওলামা ) তারাও তো এমন জগন্যতা সাপোর্ট করবেন না ।
কি বিলাসিতা সৌদি আরবিয়ানদের ! আজ এদের কারনে সারা দুনিয়া জুড়ে ইসলাম কলংকিত ,মুসলমনারা নির্যাতিত । এই কথা গুলো কি একবার ভেবে দেখেছেন সৌদি পক্ষের চাটুকারা ? ইসলাম মানবতার ধর্ম ,শান্তির ধর্ম ,যে কাজটি মুসলিমরা করার কথা ছিল সেই কাজটি আজ অমুসলিমরা করে মানবতার উতকৃষ্ট উদাহর সৃষ্টি করছে । তার উদাহরন ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী ইউহা সিপিলা । তিনি তাঁর ব্যবহৃত ঘরটি সিরিয়ান উদ্বাস্তুদের জন্য খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ফিনল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর নগর অউলুর কাছে ‘কেমপেলে’তে প্রধানমন্ত্রীর এই বিলাসবহুল বাড়ি। তিনি অবকাশ যাপনকালে মাঝেমাঝে এ বাড়িটি ব্যবহার করে থাকেন। এই একটিমাত্র উদাহরন কি যতেষ্ট নয় সৌদি আরবিয়ানদের জন্য ? শরণার্থীদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে জার্মান ,অস্ট্রিয়া, ব্রিটেন সহ মানবতার দাবীদার ইউরোপ দেশগুলো । কোথায় আজ ধনাঢ্য মুসলিম দেশগুলো । কেউতো এসকল শরণার্থীদের জন্য হাত বাড়িয়ে দেননি ? সৌদি আরব তো একটা বিবৃতিও দেইনি এসকল শরণার্থীদের আশ্রয় বিষয়ে । বরং ইরানের বিরুদ্ধে ষড়যন্তের অংশ হিসেবে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক করছেন সৌদি বাদশা ।হাজার কোটি ডলারের অস্র কিনছে সৌদি আরব ? এটা তো ইসলাম শিক্ষা দেইনি । ইসলাম সব সময় অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছে । একজন অমুসলিম যদি অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে পারে , নিজের ব্যবহৃত বাড়িটি শরণার্থীদের জন্য খোলে দিতে পারে তাহলে একজন মুসলিম হিসেবে আমরা কেন সেটা করতে পারিনা ? এমন অমানবিকতা কোন কালে কোন যুগে ইসলাম গ্রহন করেনি একমাত্র আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগ ছাড়া । অতএব শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানো মুসলিম দেশগুলোর উপর নৈতিক দায়িত্ব বর্তায় বলে আমি মনে করি । সেই সাথে আইএস সৃষ্টির মূল জন্মদাতা এবং মুসলিম দেশগুলোকে ধংশের ষড়যন্ত্র হিসেবে প্রভু রাষ্ট্রগুলোর সাথে কলকাঠি নাড়িয়ে সহযোগিতাকারী সেই সৌদি আরবের দৃষ্টান্তমুলক শাস্থি হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি । একই সাথে মুসলিম দেশগুলোকে এটা বুঝা উচিত যে শুধু পশ্চিমারা না মধ্যপ্রাচ্যের ধনাঢ্য মুসলিম দেশগুলো এসকল অনাকাংখিত পরিস্থিতির জন্য প্রধানত দায়ী ।


Spread the love

Leave a Reply