যে কারণে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ( ভিডিও সহ)

Spread the love

5869fa43d3ed00b49a84c4701b03f80b-58f653c6ed7d3বাংলা সংলাপ ডেস্কঃব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে হঠাৎ করেই আগাম নির্বাচনের পরিকল্পনা ঘোষণা করায় অবাক হয়েছেন অনেকেই। ১৮ এপ্রিল ২০১৭ মঙ্গলবার লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিটের অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি আগাম নির্বাচনের ডাক দেন। ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদপূর্তির এতো আগে নির্বাচনের ডাক দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে ঠিক কী কারণে থেরেসা মে-এর প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত? ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজেও অবশ্য এ সিদ্ধান্তের একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার ভাষায়, ব্রেক্সিটের পর ‘জাতি ঐক্যবদ্ধ হলেও পার্লামেন্ট দ্বিধাবিভক্ত’। বিরোধী দল লেবার পার্টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চূড়ান্ত বোঝাপড়ার চুক্তির বিরোধিতার হুমকি দিয়েছে। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা সরকারকে অচল করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থায় নতুন নির্বাচন না দিলে ‘তাদের রাজনৈতিক খেলা অব্যাহত থাকবে।’

থেরেসা মে বলেন, ব্রেক্সিট–পরবর্তী যুক্তরাজ্যে দরকার নিশ্চয়তা, সেই সঙ্গে স্থায়িত্ব এবং শক্তিশালী নেতৃত্ব। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে গিয়ে দেশ পরিচালনার জন্য এই নেতৃত্ব খুব জরুরি। ব্রেক্সিট ইস্যুতে দেশ এক হলেও পার্লামেন্ট এক হতে পারছে না। পার্লামেন্টের মধ্যকার বিভাজনের কারণ আমাদের সফলভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের সক্ষমতা কমে যাবে। এটা দেশকে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার মুখে ঠেলে দিবে। ফলে আমি মনে করি, দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই মুহূর্তে নির্বাচন প্রয়োজন। আগামী ৮ জুন নির্বাচনের জন্য বুধবার পার্লামেন্টে প্রস্তাব তোলা হবে। ব্রেক্সিট কার্যকরকে সামনে রেখে আগাম নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে সহায়তা করবে। এটি যুক্তরাজ্যের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় স্বার্থেই আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছৈ। ব্রেক্সিটের পর দেশের স্থিতিশীলতার নিশ্চিত করতে ‘অনিচ্ছা সত্ত্বেও’ তিনি আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অবশ্য মনে করছেন, জেরেমি করবিনের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল লেবার পার্টির বর্তমান বেহাল অবস্থার সুযোগ নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। কারণ সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলোতে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে লেবার পার্টি। এক জরিপে বলা হয়েছে, ভোটারদের কাছে কনজারভেটিভ পার্টির গ্রহণযোগ্যতা যেখানে ৪২ শতাংশ; সেখানে লেবার পার্টির গ্রহণযোগ্যতা মাত্র ২৭ শতাংশ। ফলে দলটির এমন দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে হয়তো নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন থেরেসা মে।

২০১৬ সালের জুনে ব্রেক্সিট ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের গণভোটের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যমেরন পদত্যাগ করলে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন থেরেসা মে। গত কয়েক মাসে তিনি একাধিকবার আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। ফলে মঙ্গলবার তার এই আকস্মিক ঘোষণা সবাইকে অবাক দেয়।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আগাম নির্বাচন সংক্রান্ত ওই প্রস্তাব পাসের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ এমপি’র সমর্থন প্রয়োজন হবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এ সমর্থন পেতে থেরেসা মে-এর সরকারকে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। কারণ, তার দলের পাশাপাশি বিরোধী দল লেবার পার্টি’র এমপিরাও হয়তো আগাম নির্বাচনের পক্ষেই ভোট দেবেন। প্রস্তাবটি পাস হলে নির্ধারিত সময়ের তিন বছর আগেই যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র: বিবিসি, ইন্ডিপেনডেন্ট।

/এমপি/টিএন/


Spread the love

Leave a Reply