রাত পোহালেই গণভোট : দ্বিধাবিভক্ত যুক্তরাজ্যবাসী

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্ক:

আর মাত্র কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা। রাত পোহাতেই শুরু যুক্তরাজ্যের গণভোট। যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না-থাকা নিয়ে আয়োজিত এ গণভোটকে কেন্দ্র করে দুই মেরুতে ভাগ হয়ে গেছে দেশটির জনগণ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ ধরে রেখে যুক্তরাজ্যকে বিশ্বে নেতৃত্বের আসনে নিয়ে যেতে চান এক পক্ষ। অন্য পক্ষের দাবি, ইইউয়ে থাকার ফলে অন্য দেশগুলো সুবিধা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, পিছিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য।

ইইউ ত্যাগ করে সার্বভৌম যুক্তরাজ্যের একক স্বত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রচার চালাচ্ছে ‘দি লিভ’ গ্রুপ। দি লিভ অর্থাৎ ‘ত্যাগ কর’ গ্রুপের পক্ষে শেষ সময়েও সামান্য কিছু সমর্থন বেশি দেখা গেছে বিভিন্ন জরিপে। কিন্তু ‘দি রিমেইন’ অর্থাৎ ‘থেকে যাও’ গ্রুপের সংগঠকদের দাবি, যুক্তরাজ্যবাসী শেষ পর্যন্ত ইইউয়ে থাকার পক্ষেই ভোট দেবেন।

ইইউ ত্যাগ করা ও থাকার পক্ষের সমর্থকরা স্পষ্ট বিভাজন রেখার দুই পাশে দাঁড়িয়ে ২৩ জুন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চলেছেন। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে দেশটিতে।

মঙ্গলবার দুই পক্ষের নেতৃত্ব স্থানীয়দের মধ্যে চূড়ান্ত বিতর্ক হয়েছে। ‘দি গ্রেট ডিবেট’ নামে এ বিতর্কের আয়োজন করে বিবিসি। বিতর্কে অংশ নেওয়া ছয়জনের মধ্যে দি লিভ গ্রুপের বরিস জনসন ও দি রিমেইন গ্রুপের রুথ ডেভিডসন চরম বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে তারা নিজ নিজ পক্ষের সমর্থকদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করেন।

শেষ সময়ের এ বিতর্ক ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিতার্কিকদের প্রধান টার্গেট ছিল দোদুল্যমান ভোটারদের সমর্থন আদায়। যেসব ভোটার এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, তারা কোনো পক্ষে ভোট দেবেন, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণে মরিয়া হয়ে বিতর্ক চালিয়েছেন দুই পক্ষের বিতার্কিকরা।

বিতর্কের সময় দশর্কসারি থেকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়। অভিবাসন, অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্বের বিষয়গুলো উঠে এসে দর্শকদের প্রশ্নে। প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে লন্ডনের প্রাক্তন মেয়র বরিস জনসন বলেন, যুক্তরাজ্য যদি ইইউ ত্যাগ করার পক্ষে ভোট দেয়, তাহলে এ দিন হবে আমাদের স্বাধীনতা দিবস।

বুধবার সকালে জনসন বিবিসিকে বলেন, ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট দিলে যুক্তরাজ্য ইইউ-এর বোঝা ঘাড় থেকে নামাতে পারবে এবং গণতন্ত্রবিরোধী শাসন থেকে মুক্ত হতে পারবে।

এদিকে দি গ্রট ডিবেটে অংশ নিয়ে লন্ডনের বর্তমান মেয়র সাদিক খান তার পূর্বসূরি জনসনকে আক্রমণ করে তার বিরুদ্ধে ‘ঘৃণার প্রকল্প’ গ্রহণ করার অভিযোগ করেন। যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিভক্তিবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যও জনসনকে আক্রমণ করে কথা বলেন সাদিক খান। এ ছাড়া কর্মসংস্থান নিয়ে কথা বলেন বিতার্কিকরা। যুক্তরাজ্যের অভিবাসীরা কর্মক্ষেত্র নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত। এখন তো ইইউয়ের যেকোনো দেশে গিয়ে বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ আছে। কিন্তু ইইউ ত্যাগ করলে যুক্তরাজ্যবাসী ও অভিবাসীদের জন্য এ সুযোগ থাকবে না।

সব মিলিয়ে কোন পথে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য, তা দেখতে অপক্ষো করতে হবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত। এক কঠিন সময়ের মুখে রয়েছে দেশটির জনগণ।


Spread the love

Leave a Reply