রানিকে আড়াল করে সামনে ট্রাম্প

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃবিতর্ক পিছু ছাড়লেও, তিনি বিতর্কের পিছু ছাড়েন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৌলতে এ বার বিড়ম্বনায় পড়লেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ব্রিটেনে বেশ গরম) তাপমাত্রায় উইনসর প্রাসাদের বাইরে অতিথিদের অপেক্ষায় বসেছিলেন রানি। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির দেখা নেই। পাক্কা দশ মিনিট দেরিতে হাজির হন ডোনাল্ড ও মেলানিয়া। তত ক্ষণে বার কয়েক ঘড়ি দেখা হয়ে গিয়েছে রানির।
চমক অপেক্ষা করছিল আরও। অতিথিদের দেখে উঠে দাঁড়ান ৯২ বছর বয়সী প্রবীণা।
কিন্তু রাজপরিবারের রীতি মেনে ঝুঁকে তাঁকে সম্মান দেখানোর বদলে হাত বাডিয়ে দেন ট্রাম্প ও তার স্ত্রী। তবে অনেকেই বলছেন, হাত মেলানোর সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাধারণত যে ধরনের শক্তি প্রদর্শন করে থাকেন, এ দিন অন্তত সেটা করেননি। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র হাত কষে চেপে ধরে প্রায় কালশিটে ফেলে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। নবতিপর বৃদ্ধার হাত সেই চাপ নিতে পারত না।
গতকালই ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে প্রকাশিত ট্রাম্পের একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল। তাতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-কে ব্রেক্সিট নিয়ে চোখা চোখা ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। মে-র প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস জনসনের প্রশংসা করে বলেন, উনি অসাধারণ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা রাখেন। সে সব নিয়ে হইচই মিটতে না মিটতে ফের সমালোচনার ঝড়।
উইনসর প্রাসাদ চত্বরে ‘গার্ড অব অনার’-এর সময় রানির মুখের সামনে দিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন ট্রাম্প। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে এক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, রানির পাশাপাশি না হেঁটে নিজের তালে হাঁটতে হাঁটতে কয়েক পা এগিয়ে যান ট্রাম্প। রানিকে একেবারে আড়াল করে। পিছন থেকে রানি কী ভাবে এগোবেন, বুঝে পাচ্ছেন না। এক সময়ে প্রেসিডেন্টকে ডেকে হাত নেড়ে কিছু একটা বোঝালেন তিনি। কিন্তু সেই একই ব্যাপার, কোনও হেলদোল দেখা গেল না ট্রাম্পের চলনে।
বাইরে ট্রাফালগর স্কোয়্যারে তখন ‘ট্রাম্প-রোকো’ বিক্ষোভ চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতিবাদে পার্লামেন্ট স্কোয়্যারের কাছে উড়ছে ট্রাম্পের ‘বেবি-বেলুন’। রাগী দেখতে ‘ট্রাম্প-শিশুটির’ হাতে মোবাইল ফোন। আর তাতে জ্বলজ্বল করছে টুইটারের চিহ্ন। হাজার দশেক মানুষ গত কাল বিক্ষোভ দেখাতে ভিড় করেন লন্ডনে। কারও হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘ট্রাম্পকে ডাম্প করো’। কোথাও লেখা, ‘মিথ্যেবাদী’। কারও মুখে স্লোগান, ‘ট্রাম্পের দেশে মানবাধিকার দুঃস্বপ্নের মতো’। ট্রাম্পের টার্নবেরি গল্ফ রিসর্টের আকাশসীমাকে ‘উড়ান-নিষিদ্ধ অঞ্চল’ ঘোষণা করা হয়েছিল। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পরিবেশ আন্দোলনকারী সংস্থা ‘গ্রিনপিস’-এর এক কর্মী প্যারাগ্লাইডিং করে ওই অঞ্চলে ঢুকে পড়েন। তাঁর লক্ষ্যই ছিল প্রেসিডেন্টের নজরে পড়া। যাতে তাঁর হাতের ব্যানারটি দেখতে পান ট্রাম্প। তাতে লেখা ছিল— ‘ট্রাম্প: ওয়েল বিলো পার#রেজিস্ট’। এখনও পুলিশের হাতে অধরা ওই বিক্ষোভকারী।
ব্রিটেনে যখন এ হেন বিক্ষোভ চলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তখন ব্রিটিশদের ক্ষোভের আঁচে ঘৃতাহুতি করেই গিয়েছেন সারা দিন ধরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ লিখেছেন, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প রানির মুখের সামনে দিয়ে হেঁটেছেন?!?!?!’’ কারও কথায়, ‘‘ট্রাম্পের এত সাহস হয় কী করে?’’


Spread the love

Leave a Reply