সালাহর হ্যাটট্রিকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে উড়িয়ে দিল লিভারপুল

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ দুই বড় দলের লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থাকল কোণঠাসা হয়ে। আধিপত্য করল লিভারপুল। দুই তারকার দ্বৈরথে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো বিবর্ণ; অন্যদিকে হ্যাটট্রিকের আলো ছড়ালেন মোহামেদ সালাহ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড থেকে দুর্দান্ত জয় নিয়ে ফিরল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।

প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার ৫-০ গোলে জিতেছে লিভারপুল। পঞ্চম মিনিটে নাবি কেইতা দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দিয়োগো জটা। দুই অর্ধ মিলিয়ে ১২ মিনিটে হ্যাটট্রিক উপহার দেন সালাহ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ইউনাইটেড। তবে এর আগেই পাঁচ গোল খেয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তারা।

দারুণ এ জয়ে ৯ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে লিভারপুল। দুঃস্বপ্নময় হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে আছে ইউনাইটেড। ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে চেলসি। তৃতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ২০।

বলের নিয়ন্ত্রণে একচছত্র আধিপত্য করে লিভারপুল। ৬৪ শতাংশ সময় বল দখলে রাখে তারা। ইউনাইটেডের চেয়ে (১২টি) আক্রমণেও এগিয়ে (১৯টি) ক্লপের দল। ইউনাইটেড চারটি শট লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হলেও পায়নি জালের দেখা। লিভারপুল লক্ষ্যে রাখা ৮টি প্রচেষ্টা থেকে তুলে নেয় পাঁচটি গোল।

স্বাগতিক সমর্থকদের স্তব্ধ করে দিয়ে পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় লিভারপুল। রবের্তো ফিরমিনোর বাড়ানো বল ধরে সালাহর সামনে সুযোগ ছিল নিজেই শট নেওয়ার। কিন্তু মিশরের ফরোয়ার্ড ছোট পাস বাড়ান ডান দিকে তার চেয়ে ভালো অবস্থায় থাকা কেইতাকে। ঠাণ্ডা মাথার শটে দাভিদ দে হেয়াকে পরাস্ত করেন গিনির এই মিডফিল্ডার।

প্রথম গোলের রেশ থাকতেই ত্রয়োদশ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় লিভারপুল। এই গোলে অবশ্য হ্যারি ম্যাগুইয়ার ও লুক শয়ের দায় বেশি। দুই ডিফেন্ডারের বোঝাপড়ায় ঘাটতি ছিল, একই সঙ্গে দুজনে ছোটেন বলের জন্য; কিন্তু কেউ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। সুযোগে কেইতা পাস দেন ডান দিকে থাকা ট্রেন্ড অ্যালেক্সান্ডার-আর্নল্ডকে; এই ডিফেন্ডারের নিচু ক্রসে নিঁখুত স্লাইডে জালে জড়িয়ে দেন জটা।

ধীরে ধীরে গুছিয়ে ওঠা ইউনাইটেড ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। ২২তম মিনিটে ডি-বক্সের বাঁ দিক থেকে লুক শয়ের কোনাকুনি শট পোস্টের অল্প বাইরে দিয়ে যায়। একটু পর রোনালদোর ক্রস বিপদমুক্ত করেন এক ডিফেন্ডার। ২৯তম মিনিটে গ্রিনউডের কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে লিভারপুলকে জয়ের পথেই রাখেন গোলরক্ষক আলিসন।
৩৮তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় লিভারপুল। নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে সতীর্থের ছোট পাসে সালাহর শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। কিন্তু বল চলে যায় ডান দিক থাকা কেইতার কাছে। তার ক্রসে ছয় গজ বক্সের ভেতর থেকে সালাহর নিখুঁত টোকা চোখের পলকে জালে জড়ায়।

এ নিয়ে টানা ১০ ম্যাচ গোল করলেন সালাহ এবং লিভারপুলের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে টানা তিন ম্যাচে গোল করার কৃতিত্বও দেখালেন তিনি।

হতাশায় মেজাজ হারিয়ে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে হলুদ কার্ড দেখেন রোনালদো। বল দখলের লড়াইয়ে জোনস পড়ে যান, বল তখন ছিল তার পেটের কাছে। বল বের করতে উপর্যুপরি কিক মেরে কার্ড দেখেন এই তারকা ফরোয়ার্ড।

যোগ করা সময়ের শেষ দিকে ইউনাইটেডের রক্ষণ আবারও হয়ে যায় এলোমেলো। নিজেদের মধ্যে দারুণ বোঝাপড়ায় অ্যান্ডি রবার্টসন থেকে বল যায় জটার পায়ে। এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের পাসে সালাহর শটে খুঁজে পায় জাল। বল নাগালের বাইরে থাকায় দে হেয়ার করার ছিল না কিছুই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সালাহ। পল পগবাকে ছিটকে দিয়ে জর্ডান হেন্ডারসন বল বাড়ান সালাহকে। দে হেয়া পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এলেও আটকাতে পারেননি সালাহর শট।

৫২তম মিনিটে জালের দেখা পেয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু তিনি নিজেই অফসাইডে থাকায় ভিএআর সাহায্যে গোল দেননি রেফারি। ইউনাইটেডের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা কার্যত শেষ হয়ে যায় ৬০তম মিনিটে; কেইতাকে কড়া ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পগবা। ১৫ মিনিট আগে ম্যাসন গ্রিনউডকে তুলে পগবাকে নামিয়েছিলেন ইউনাইটেড কোচ।

৬২তম মিনিটে ব্রুনো ফের্নান্দেসকে উঠিয়ে এদিনসন কাভানিকে নামান ইউনাইটেড কোচ। কিন্তু উরুগুয়ের ফরোয়ার্ডও পারেননি ছাপ রাখতে। একজন কম নিয়ে বাকিটা সময় তাই সুলশারের দলও পায়নি ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ।


Spread the love

Leave a Reply