সৌদি আরবকে কাছে টানছেন ট্রাম্প

Spread the love

_95754249__95738887_trump_sauid976বুধবারের এক বিকালেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন পরিষ্কার করেছেন উপসাগর এবং মধ্যপ্রাচ্যে বারাক ওবামার নীতি বিসর্জন দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আমেরিকা এবং সৌদি আরবের যৌথ এক বাণিজ্য সম্মেলনে হাজির জয়ে মি টিলারসন বলেন, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে ওয়াশিংটন।

আর ঐ দিন কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি সৌদি আরবের এক নম্বর শত্রু ইরানকে উত্তর কোরিয়ার সাথে তুলনা করেন। মি টিলারসন বলেন ইয়েমেন, ইরাক, সিরিয়া এবং লেবাননে আমেরিকার স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ইরান।

ইরানের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান এবং একইসাথে নতুন করে সৌদি আরবের প্রতি ঝোঁকার নীতি ষ্পষ্ট হতে থাকে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যখন তৎকালীন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন তেহরানকে লক্ষ্য করে আক্রমণের বাক্যবাণ ছোড়েন।

মি ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামার শাসনামলে সৌদিদের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক দিন দিন শীতল হয়েছে। মি ওবামা ইয়েমেন সৌদি সামরিক তৎপরতা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। সৌদিদের বিমান হামলায় বেসামরিক লোকজনের মৃত্যুর সমালোচনা করেছেন তিনি। তারপর সৌদিদের উদ্বেগ অনুরোধ উপেক্ষা করে ইরানের সাথে পারমানবিক চুক্তি করেন।

আমেরিকার সেই নীতি এখন ইতিহাস হওয়ার পথে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস মাতিস ব্যক্তিগতভাবে প্রচণ্ড রকমের ইরান বিরোধী। বুধবার তিনি রিয়াদে গিয়ে ‘ইরানের দুষ্কর্ম ঠেকাতে’ সৌদি আরবের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।

বারাক ওবামাইরানের সাথে পারমানবিক চুক্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরছেন বারাক ওবামা

নতুন করে সৌদি-আমেরিকা উষ্ণতার অর্থ কী?

আমেরিকায় বিবিসির বারবারা প্লেট উশের বলছেন প্রথমত – ইরানের সাথে আমেরিকার পারমানবিক চুক্তির ভবিষ্যৎ নড়বড়ে হয়ে পড়বে। মি ট্রাম্প হয়তো সরাসরি চুক্তি বাতিল করবেন না, কিন্তু ইরানের ওপর চাপ বাড়াতেই থাকবেন তিনি। ফলে পারমানবিক চুক্তিটি এমনিতেই অকার্যকর হয়ে পড়বে।

দ্বিতীয়ত, ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে আমেরিকার সংশ্লিষ্টতা বাড়বে যেটা বারাক ওবামা কমিয়ে দিয়েছিলেন। সৌদিদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। কিনতু ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু করছে। জেনারেল মাতিসের সৌদি আরব সফরকারী দলের একজন কর্মকর্তা ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে ইয়েমেনে সামরিক হামলা না বাড়ালে হুতি বিদ্রোহীরা মীমাংসার টেবিলে আসবে না। সৌদি আরবও সব সময় এই যুক্তি তুলে ধরে।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকেই ইরানকে শায়েস্তা করতে আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি রাষ্ট্রগুলোর সাথে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রচলিত ঐ নীতিতে একটি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছিলেন। তার বিশ্বাস ছিলো- তেহরানের সাথে পারমানবিক চুক্তি করলে ইরানে উদারপন্থীরা শক্তিশালী হবে।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ইঙ্গিত দিচ্ছে ইরানকে তারা মুখোমুখি মোকাবেলা করতে ইচ্ছুক।


Spread the love

Leave a Reply