হরিজন হওয়ায় স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হয় শিশুটিকে

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্ক:  মৌলভীবাজারে হরিজন হওয়ার কারণে একটি শিশুকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করার পর ইউএনও’র হস্তক্ষেপে আবারো শিশুটিকে স্কুলে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।

কুলাউড়া উপজেলার ওই বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলটির প্রধান শিক্ষক বিবিসি বাংলাকে জানান, অন্য বাচ্চাদের অভিভাবকদের আপত্তির কারণে শিশুটিকে ক্লাস করতে বাধা দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু পরে আবার প্রথম শ্রেণীর ওই শিক্ষার্থীকে ক্লাস করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এর পর থেকে ৭ বছর বয়সী ওই শিশুটি নিয়মিত ক্লাস করছে বলেও জানানো হয়।

ওই শিশুটির বাবা বিবিসি বাংলাকে জানান, গত ১৩ই জানুয়ারি ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করান তিনি।

কিন্তু সেদিন রাতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে ফোন করে জানায় যে, তারা হরিজন সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে তার সন্তানকে ওই স্কুলে ক্লাস করতে দেয়া সম্ভব নয়। তাকে যেন অন্য কোন স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়।

“আমাকে জানায় যে, অন্য বাচ্চার অভিভাবকরা নাকি সমস্যা করতেছে,” বলেন ওই শিশুটির বাবা।

এর পর শিশুটির বাবা এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করেন।

এর পর গত বৃহস্পতিবার (১৬ই জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্কুল কর্তৃপক্ষকে ডেকে ক্লাস করতে না দেয়ার কারণ জানতে চান।

সেসময় স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায় যে, তারা শিশুটিকে ভর্তি করালেও অন্য শিশুদের অভিভাবকরা আপত্তি তোলে যে, একজন হরিজন শিশুর সাথে তাদের বাচ্চা পড়াশুনা করবে না। এ কারণেই তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কিন্তু ইউএনওর হস্তক্ষেপে শনিবার স্কুল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে আবার ক্লাস করার অনুমোদন দিতে বাধ্য হয়।

জীবনের নানা ক্ষেত্রে বৈষম্য:

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি মংলা বাসপর জানান, শুধু স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে নয়, দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজ-কর্মেও তাদের এ ধরণের বৈষম্যের মুখে পড়তে হয়।

তিনি জানান, কুলাউড়া থানায় ৪০টির মতো হরিজন পরিবার রয়েছে। এসব পরিবারের সদস্যদের সামাজিক কোন অধিকার নেই।

মিস্টার বাসপর বলেন, হোটেলে খাবার খেতে গেলেও বৈষম্যের শিকার হতে হয় তাদের।

অন্যদের সাথে চেয়ার টেবিলে বসে খাবার খেতে দেয়া হয় না তাদের।

“হোটেলের সামনে গেলে অন্য বাচ্চারা ঢুকে খাচ্ছে, আমাদের বাচ্চারা বাইরে কাগজে নিয়ে মাটিতে বসে খায়,” তিনি বলেন।

এছাড়া চাকরি এবং বাসস্থানের মতো সমাজের প্রতিটি স্তুরে হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষেরা বৈষম্যের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন মিস্টার বাসপর।


Spread the love

Leave a Reply