অধরাই রইল স্বপ্নের শিরোপা
নিজস্ব প্রতিবেদক
সব ভালো হলেও শেষটা হলো না। টাইগারদের নিয়ে স্বপ্ন দেখা ১৬ কোটি ক্রিকেট অন্তপ্রাণ বাঙালীর আক্ষেপ আরও বাড়ল। রোববার রাতে এশিয়া কাপের ফাইনালে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে মাশরাফিরা। ৭ বল হাতে রেখেই বাংলাদেশের দেওয়া ১২১ রানের লক্ষ্যে পৌছায় ধোনির দল।
এর আগে নির্ধারিত ১৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে মাহমুদুল্লাহ ১৩ বলে ৩৩ রান ও সাব্বির রহমান ২৯ বলে ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন। কালবৈশাখী বাগড়া দেয়ায় সাতটার ম্যাচ শুরু হয় রাত সাড়ে ৯টায়। ২০ ওভারের খেলার পরিধি কমিয়ে নিয়ে আসা হয় ১৫ ওভারে।
প্রথমে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার দলকে এনে দিয়েছিলেন শুভসূচনা। কিন্তু চতুর্থ ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার, নেহরার বলে পান্ডের ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে তিনি ১৪ রান করেছেন। পরে পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে তামিম ইকবালও বুমরাহ’র এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন। তিনি করেছেন ১৩ রান।
তামিম-সৌম্যের বিদায়ের পর সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে দারুন খেলছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দারুন খেলতে থাকতে থাকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান দশম ওভারের প্রথম বলে অশ্বিনের ডেলিভারিতে বুমরাহ’র ক্যাচে পরিণত হন। তিনি ১৬ বলে ২১ রান করেছেন। পরে ১১.৩ ওভারে রান আউট হয়ে যান মুশফিকুর রহিম, পরের বলেই শট খেলতে গিয়ে জাদেজার বলে কোহলির ক্যাচে পরিণত হন অধিনায়ক মাশরাফি। তবে শেষদিকে মাহমুদুল্লাহ ও সাব্বিরের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই লড়ার মত পুঁজি (১২০ রান) সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়েছিল ভারত। ১.৩ ওভারে পেসার আল আমিন হোসেন ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মাকে সৌম্যের ক্যাচে পরিণত করেন। কিন্তু এরপরই শুরু হয় ভারতীয়দের প্রতিরোধ। বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ান জুটি বেধে ম্যাচকে অনেকটাই নিজেদের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে ১২.৪ ওভারে শিখর ধাওয়ানকে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন পেসার তাসকীন আহমেদ। শিখর ৪৪ বলে ৬০ রান করেছেন।
তবে শিখরের আউটে প্রভাব পড়েনি ভারতের। উল্টো ব্যাট করতে নেমে ঝড়ো ব্যাটিং করে ভারতের জয়কে আরও সহজই করেছেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ৬ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২০ রান সংগ্রহ করে ভারতকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। ১৩.৫ ওভারেই ৮ উইকেটের জয় নিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। অপরাজিত আরেক ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ২৮ বলে ৪১ রান করেছেন।
এ ম্যাচে দুটি পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশ মাঠে নেমেছিল। দলে ফিরেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন, পেসার আবু হায়দার রনি। এছাড়া ইনজুরির শংকা কাটিয়ে দলে ছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আর দল থেকে বাদ পড়েন স্পিনার আরাফাত সানি ও ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। তবে ভারত অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামে।
এর আগে টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হারলোও টানা ৩ ম্যাচে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আরব আমিরাতের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল মাশরাফিরা। তাদের সেই জয়রথ আবার থেমেছে ভারতের কাছে। আরও একবার এদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের হতাশ করলো এশিয়া কাপের ফাইনাল। এর আগে ২০১২ সালের প্রথমবারের মত এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠলেও ঘরের মাঠেই পাকিস্তানের কাছে মাত্র ২ রানে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ, তবে ওইবার টুর্নামেন্টটি ছিল ৫০ ওভারের।