অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দিলেন শিক্ষকরা

Spread the love

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘রূপান্তরের রূপরেখা প্রস্তাব’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ রূপরেখা দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে রূপরেখা প্রস্তাব করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বুঝতে পারছি একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে একটা অসাধারণ প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এ রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তির জন্য আমাদের অবশ্যই একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এই পরিবর্তনটা এই সরকারের পদত্যাগের মাধ্যমে সূচিত হবে।

রূপরেখাগুলো হলো-

১. অবিলম্বে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর সম্মতিক্রমে নাগরিক ও রাজনৈতিক শক্তিসমূহের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষক বিচারপতি, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের অংশীজনদের নিয়ে একটি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অন্তভূক্তিমূলক অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। এই সরকারের সদস্য নির্বাচনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভূমিকা পালন করবেন। এই সরকারের কাছেই শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করবে।

২. শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলো অংশীজনের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে সর্বদলীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নাগরিকদের নেতৃত্বে একটি  ছায়া সরকার গঠিত হবে। এই ছায়া সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতে করবে, যেন দেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয়। একই সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত দাবি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

৩. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে সেগুলো হলো-

ক) জুলাই হত্যাকাণ্ড এবং জনগণের ওপর জোর জুলমের দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য জাতিসংঘের সহয়তায় তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং তাদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করবে।

খ) সাম্প্রতিক সময় করা মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক ও হয়রানিমূলক সকল মামলা বাতিল করতে হবে। এসব মামলায় আটক কিংবা বিনা মামলায় আটক সবাইকে মুক্তিদান করবে।

গ) সরকার গঠনের ৬ মাসের মধ্যে একটি সংবিধান সভা গঠনের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।

নির্বাচিত সংবিধান সভায় এমন এক গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রস্তাব করবে যে সংবিধানে স্বৈরতান্ত্রিক,সাম্প্রদায়িক ও জনবিদ্ধেষী বৈষম্যমূলক কোনো ধারা থাকবে না।

৪. শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের অভ্যুত্থানের মূল শক্তির মধ্যে সংলাপের ভিত্তিতে একটি ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে হবে যেখানে বৈষম্য ভিন্নতার মেলবন্ধনে জনগণের বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথ নির্দেশ করবে।

৫. আমাদের প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, মূল অংশীজনের তালিকা প্রণয়ন এবং শিক্ষার্থী-জনতার ছায়া সরকার গঠনের প্রয়োজনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক যেকোনো দায়িত্বগ্রহণ বা পালন করতে প্রস্তুত আছে। এই রূপরেখা একটি প্রাথমিক প্রস্তাব মাত্র। প্রয়োজনে এই প্রস্তাবকে আরও বিস্তৃত করার জন্য আমরা ভবিষ্যতে কাজ করতে আগ্রহী।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন ও অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।


Spread the love

Leave a Reply