অসাধারণ সাফল্যের সাক্ষর রেখে “ব্যারিস্টার” হলেন ব্যারিস্টার নাজির আহমদের কন্যা ফারহানা আহমদ

Spread the love

ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ফারহানা আহমদ বৃটেনে অসাধারণ সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে গত বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) মাত্র ২২ বছর বয়সে বিশ্বখ্যাত অনারেবল সোসাইটি অব লিংকন্স ইন্ থেকে ব্যারিস্টার হন। বার-এট-ল করার পাশাপাশি মাস্টার অব লজ (এলএলএম) অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবনে তার কোনো একটি বছর, সেশন বা মাস মিস বা গ্যাপ যায়নি।

এলএলএম এবং বার-এট-ল’তে অসামান্য ফলাফল করেছেন ব্যারিস্টার ফারহানা আহমদ। এলএলএম-এর ডিসার্টেশন তথা থিসিসে-এ ফারহানা পেয়েছেন ৭৫% মার্কস। বার-এট-ল’র কয়েকটি মডিউলে তিনি অসাধারণ ফলাফল করেছেন, যেমন ক্রিমিলাল লিটিগেশনে-এ পেয়েছেন ৭৫% মার্কস এবং জুডিশিয়াল রিভিউ মডিউলে-এ পেয়েছেন ৭৭% মার্কস।

ছোটবেলা থেকে প্রত্যুত্পন্নমতি ও প্রখর মেধাবী মেয়ে ফারহানা আহমদ গত বছর বিশ্বখ্যাত লন্ডন ইউনিভার্সিটির সুখ্যাত দ্যা সিটি ল স্কুল থেকে ল ডিগ্রী তথা এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রীতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছিলেন। ডিগ্রীতে তাঁর ওভারল গড় মার্কস ছিল ৭৬.৩%। কিছু সাবজেক্টে তিনি তাঁর ইউনিভার্সিটির ল ডিপার্টমেন্টের অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ মার্কস পেয়েছিলেন। ফারহানা আহমদ ফ্যামিলি ল’তে মার্কস পেয়েছিলেন ৮১.৫%, কোম্পানী ল’তে ৮১.৫%, কমপ্যারাটিভ কনস্টিটিউশনাল ল’তে ৮২%, ক্রিমিনাল ল’তে ৮২.৮%, প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন মডিউল-এ ৮৩%, ইমিগ্রেশন ল’তে ৮৫% এবং এডভান্সড ক্রিমিনাল ল’তে ৮৮%। ল ডিগ্রীতে অধ্যয়ণকালীন সময়ে তিনি তিন তিনটি বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে বার-এট-ল কোর্স এবং একসাথে এলএলএম করার অফার পেয়েছিলেন। একটি থেকে এলএলবি (অনার্স)-এর ফলাফল বের হবার আগেই আনকন্ডিশনাল অফার পেয়েছিলেন। বার-এট-ল কোর্সে তিনি ৫,০০০ পাউন্ডের স্কলারশীপ পেয়েছিলেন।

লন্ডনে জন্ম নেয়া ব্যারিস্টার ফারহানা আহমদের পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বাহাড়া দুবাগ গ্রামে। তিনি বিলেতের প্রতিথযশা আইনজীবী, প্যাকটিসিং ব্যারিস্টার, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এডভোকেট ও নিউহ্যাম কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর এবং টানা তিন টার্মের ডেপুটি স্পিকার ব্যারিস্টার নাজির আহমদ ও কবি মিসেস সালমা আহমদের দ্বিতীয় সন্তান। উল্লেখ্য, ২৩ বছর আগে ১৯৯৯ সালে ব্যারিস্টার ফারহানা আহমদের পিতা ব্যারিস্টার নাজির আহমদও বার-এট-ল’র ফলাফলে শীর্ষস্থান লাভ করে অনারেবল সোসাইটি অব লিংকন্স ইন্ থেকে ব্যারিস্টার হয়েছিলেন। পঞ্চাশ দশকের মাঝামাঝি সময়ে বিলেতে আসা এবং সদ্য প্রয়াত মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ রফিজ আলী ও মিসেস সিতাফ বিবি ব্যারিস্টার ফারহানা আহমদের যথাক্রমে দাদা ও দাদী।

পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে ব্যারিস্টার ফারহানা আহমদ দ্বিতীয়। তাঁর বড় বোন তাসনিয়া আহমদ গত বছর ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টমিনস্টর থেকে সেকেন্ড ক্লাস ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রী লাভ করে শিক্ষকতা পেশায় যাচ্ছেন। তাঁর ছোট বোন তাহমিনা আহমদ লন্ডন ইউনিভার্সিটির কুইন মেরীতে বিএসসি (অনার্স) ম্যানেজমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী এবং প্রথম বর্ষে তার ওভারল মার্কস ছিল প্রথম শ্রেণী। ফারহানার ছোট ভাই এহসান আহমদ এ বছর জিসিএসই’তে অসাধারণ ফলাফল করে এখন দেশ সেরা সিক্সথ ফর্ম ব্রাম্পটন ম্যানর একাডেমিতে এ লেভেল করছে। তাঁর একেবারে ছোট ভাই হাসান মুর্শেদ আহমদও ব্রাম্পটন ম্যানর একাডেমিতে ইয়ার সেভেনের ছাত্র।

এই অসাধারণ সাফল্য লাভের প্রাক্কালে এক প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার ফারহানা আহমদ বলেন “প্রথমেই শ্রদ্ধাবনতচিত্তে শুকরিয়া জানাচ্ছি মহান আল্লাহপাকের প্রতি। এরপর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার শ্রদ্ধেয় পিতামাতা ও শিক্ষকমন্ডলীর প্রতি যাদের সাপোর্ট, সহায়তা ও গাইডেন্স আমাকে এ পর্যন্ত আসতে সহযোগীতা করেছে। আমি আলোকিত সমাজ ও কমিউনিটি বিনির্মানে, আইনের শাষন প্রতিষ্টায় ও সুবিচার নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখতে চাই।”

ব্যারিস্টার ফারহানার স্বপ্ন ভবিষ্যতে একদিন বৃটিশ হাইকোর্টের বিচারপতি হওয়া। তিনি সবার দোয়া প্রার্থী।


Spread the love

Leave a Reply