অ্যাকশনে র্যাব : গাজীপুরে ২ জঙ্গি নিহত, সুন্দরবনে ২ জলদস্যু
ঢাকা ও চট্রগ্রামের পর গতরাতে গাজীপুরে পরিচালিত হয় জঙ্গিবিরোধী অভিযান। এসময় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি পরিত্যক্ত ঘরে র্যাবের অভিযানে দুই ‘জঙ্গি’ নিহত হয়। এছাড়াও সোমবার সকালে সুন্দরবনে র্যাবের অভিযানকালে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় দুই ‘জলদস্যু’। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার ঘটনা এবং আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যত হার্ড লাইনে প্রশাসন।
রোববার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চট্টগ্রাম বাইপাস সড়কের পাশে জুগিতলার একটি পরিত্যক্ত ঘরে অভিযান শুরু করেন র্যাব-১ এর সদস্যরা। জঙ্গি সদস্যরা অবস্থান করছেন- গোপন সূত্রে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই ঘর ঘিরে ফেলেন র্যাবের সদস্যরা। এসময় ঘরের ভেতর থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। জবাবে র্যাব সদস্যরা পাল্টা গুলি চালায়।
অভিযান শেষে রাত ২টার দিকে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এখানে দুজন মারা গেছেন। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। অভিযানে র্যাবের এক সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ঘর থেকে তিনটি বোমা, বোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম, একটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে। মুফতি মাহমুদ জেএমবির দিকে ইঙ্গিত করে জানান, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কয়েকজন এখানে মিলিত হয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করে বলে তাদের কাছে খবর ছিল।
এখানে কী দুজনই ছিল- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তাদের সদস্যরা চারপাশ ঘিরে রেখেছিল। কারও পালানোর সুযোগ ছিল না।
এদিকে, সোমবার সকালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের তাম্বুলবুনিয়া খালে র্যাব-৮ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আকাশ বাবু বাহিনীর প্রধানসহ দুই বনদস্যু নিহত হয়েছে। এ সময় ১৭টি দেশি -বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৪৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব।
নিহতরা হলেন- বনদস্যু বাহিনীর প্রধান কাশেম ওরফে আকাশ (৪০) ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড ফরিদ ম্যাইজা (৪৫)। র্যাব-৮ এর অপারেশন অফিসার ও উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির জানান, র্যাবের একটি দল সুন্দরবনে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় রোধে নিয়মিত টহল দিচ্ছিল।
টহলের অংশ হিসেবে সোমবার সকালে সুন্দরবনের ভিতর থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলি উড়তে দেখে বনদস্যুদের আস্তানার সন্ধান সনাক্ত করে র্যাব। পরে টহল দলটি সুন্দরবনের তাম্বুলবুনিয়া খালে অভিযান শুরু করলে বনদস্যুরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি বর্ষণ শুরু করে। র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপি উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় চলে।
এক পর্যায়ে বনদস্যুরা পিছু হটে। এ সময় বনের ওই এলাকায় র্যাব সদস্যরা তাল্লাশি চালিয়ে ১৭টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৫০ রাউন্ড গুলি ও দুই বনদস্যুর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় জেলেরা নিহত দুই বনদস্যু আকাশ বাহিনীর প্রধান কাশেম ওরফে আকাশ ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড ফরিদ ম্যাইজা বলে সনাক্ত করে।