আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও আমলারা

Spread the love

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে সরকারি বিনিয়োগকে ঘিরে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সরকারি কর্মকাণ্ডের জন্য যেসব পণ্য ও সেবা কেনা হয়েছে, এ সময় তাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাত লাখ কোটি টাকা। এই অর্থ থেকে ঘুষ হিসেবেই চলে গেছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো। এ ঘুষ নিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা, আমলা ও তাঁদের সহযোগী ব্যক্তিরা। শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

সরকারি খাতে মূলত অর্থ ব্যয় হয়েছে সড়ক, সেতু, বিদ্যুৎ অবকাঠামো, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ ইত্যাদি কাজে।

শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুষের টাকার মধ্যে ৭৭ হাজার থেকে ৯৮ হাজার কোটি টাকা গেছে আমলাদের কাছে। আর রাজনৈতিক নেতা ও তাঁদের সহযোগী ব্যক্তিদের কাছে গেছে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা গেছে তাঁদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংঘবদ্ধ চক্রের কাছে। ঘুষের বেশির ভাগই দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থে কিংবা অন্য কোনো জিনিস উপঢৌকন হিসেবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঠিকাদারেরা এ অর্থ পৌঁছে দিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও আমলাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে, যে সদস্যদের বড় অংশই বিদেশে থাকেন। ঘুষের অর্থের একটা অংশ বিনিয়োগ হয়েছে আবাসন খাত, মৎস্য, কৃষি ও পরিবহন খাতে। ঘুষের অর্থের নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরকে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

মূলত সরকারি তহবিল থেকে গত ১৫ বছরে দেশে বাস্তবায়িত বড় প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন হয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ঋণও ছিল। এভাবে প্রকল্প করার কারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ এখন ১৫৫ বিলিয়ন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় ১৭ লাখ কোটি টাকার বেশি। মাথাপিছু ঋণের পরিমাণও এখন ৯৮ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্প পাসের প্রস্তাব যখন উত্থাপন করা হয়, তার আগের প্রক্রিয়াগুলোতেই পেশাদারির অভাব থাকে। অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে এগুলোর যথাযথ দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মূল্যায়ন ছাড়াই। আবার কিছু প্রকল্প নেওয়াই হয়েছিল ‘লোকদেখানো’র জন্য।


Spread the love

Leave a Reply