‘আমরা সিলেটবাসী’ নামে একটি সংগঠনের সংবাদ সম্মেলনঃ সাঈদী সিলেট বাসীকে কটাক্ষ করে বলেছিল ‘‘আপনারা সিলেটীরা লন্ডন না আসলে দেশে রিস্কা চালাতেন’’
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ প্রবীন সাংবাদিক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী‘র বক্তব্যকে বিকৃত করে অপপ্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘আমরা সিলেটবাসী’ নামের একটি সংগঠন।২ জানুয়ারী দুপুরে ব্রিকলেনের কাফে গ্রীল রেষ্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় আমরা গভীর দু:খের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে কতিপয় হীন এবং স্বার্থান্বেষী মহল, সম্প্রতি লন্ডনের একটি বাংলা টেলিভিশনে বিশিষ্ট সাংবাদিক সাহিত্যিক অমর একুশে গানের রচয়িতা জনাব আবব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সরল মনে দেওয়া তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশকে অপব্যাখ্যা করে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্টী। এই মিথ্যাচারের সঙ্গে যারা জড়িত তারা সবাই একটি বিশেষ রাজনৈতিক চিন্তাধারায় বিশ্বাসী যা আমাদের প্রিয় মাতৃভুমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থি।
সংবাদ সম্মেলনে আমরা সিলেট বাসীর পক্ষ থেকে এই জঘন্য মিথ্যাচারের প্রতিবাদ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয় যারা নিছক রাজনীতির স্বার্থে সর্বসাধারণের অনুভূতিকে রাজনৈতিক দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করে সেইসব হীন মানুষদের আমরা ধিক্কার দিই। তারা বলেন ১৯৯৬ সালে বৃটেনের ওল্ডহ্যামের কুইন এলিজাবেথ হলে মানবতা বিরুধী অপরাধী সাঈদী সিলেট বাসীকে কটাক্ষ করে বলেছিল ‘‘আপনারা সিলেটীরা লন্ডন না আসলে দেশে রিস্কা চালাতেন’’। তখন এই অপপ্রচারকারী সাঈদীর পাশে বসা ছিল ( কোন বিশেষ ব্যক্তিকে ইংগিত ) । দেশে বিদেশে সিলেটবাসী সাঈদীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে সে ছিল নীরব।
‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় সিলেট অঞ্চলের বিলাত প্রবাসী সর্বস্তরের মানুষের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই যে, উক্ত অনুষ্ঠানে জনাব আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী অত্যন্ত খোলামনে এবং কৃতজ্ঞচিত্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বিলাতে বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রচার প্রসার ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য প্রবাসী সিলেটবাসীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রকৃত অর্থে এই অনুষ্ঠানে তিনি বাঙালি কমিউনিটির উন্নয়ন সংগ্রামে মধ্যবিত্ত এবং শিক্ষিত সমাজের নানা ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে এ ব্যাপারে তাঁর হতাশা ব্যক্ত করেন। সেখানে আবদুল গাফফার চৌধুরী আরো বলেন যে, চার যুগেরও বেশী সময় ধরে তিনি বিলাতে বসবাস করছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁর দুর্দিনে যারা তাঁকে রাজনৈতিক এবং আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন তাঁরা সবাই বিলাত প্রবাসী সিলেট অঞ্চলের মানুষ। এই সাধারণ সিলেটবাসীরাই বিলাতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ এবং প্রসারের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রেখেছেন এবং আজও রাখছেন। অথচ আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর তথাকথিত শিক্ষিত এবং সংস্কৃতিবান মানুষ আছেন যারা এই সাধারণ প্রবাসীদের কটাক্ষ করে বলেন ‘‘লাঙল টু লন্ডন‘‘। যারা এ ধরনের কথা বলে বিলাত প্রবাসী সহজসরল সাধারণ মানুষকে নিয়ে হাসি-তামাশা করে তাদের নিন্দা জানানোর উদ্দেশ্যেই তিনি এ বক্তব্যের অবতারণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয় আমরা লক্ষ্য করছি যে, কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করছে। এই সুযোগে তারা নিজেরা ‘‘অতি সিলেট দরদী‘‘ সাজার ভান করছে। এই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠি প্রবাসী সিলেটবাসীকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। সিলেটের বিলাত প্রবাসীরা ভাল করেই জানেন, দেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে জনাব আবদুল গাফফার চৌধুরী সব সময় ছিলেন সম্মুখসারির যোদ্ধা। তার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার এবং মিথ্যাচার সুপরিকল্পিত এবং সুচিন্তিত। আর এর মূল লক্ষ্যবস্ত কোন ব্যক্তি নন বরং আমাদের স্বাধীনতার চেতনা এবং এর ধারকবাহকদের কণ্ঠরোধই স্বাধীনতা বিরুধীদের আসল লক্ষ্য। আসলে গাফফার চৌধুরীকে হেও প্রতিপন্ন করতে ওই স্বাধীনতা বিরুধী জামাত চক্র ও তাদের দোষররা সিলেটবাসীর সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে তা সকলেই জানেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় একজন মানুষ সিলেটীদের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে তার নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। ১৯৯৬ সালে বৃটেনের ওল্ডহ্যামের কুইন এলিজাবেথ হলে মানবতা বিরুধী অপরাধী সাঈদী সিলেট বাসীকে কটাক্ষ করে বলেছিল ‘‘আপনারা সিলেটীরা লন্ডন না আসলে দেশে রিস্কা চালাতেন’’। তখন এই অপপ্রচারকারী সাঈদীর পাশে বসা ছিল। দেশে বিদেশে সিলেটবাসী সাঈদীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে সে ছিল নীরব। বাঙ্গালীর গর্ব আব্দুল গাফফ্রা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অর্থ কি সকলেই জানেন। সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের সর্বস্থরের মানুষের প্রতি স্বাধীনতা বিরুধীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখের সংগঠনের আহবায়ক সাবেক কাউন্সিলার গবেষক নূরুদ্দিন আহমদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আমরা সিলেট বাসীর আহবায়ক কমিটির সদস্য প্রবীন সাংবাদিক ইসহাক কাজল, সাংবাদিক সৈয়দ আনাছ পাশা, সাংবাদিক জুয়েল রাজ। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির পক্ষে জামাল খান, সাংবাদিক আনসার আহমেদ উল্লাহ, সাংবাদিক শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল প্রমুখ।