ইউরোপের বাংলা মিডিয়া ও একজন ফয়সল চৌ:
সাইদুল ইসলাম:
বিখ্যাত দার্শনিক বার্টান্ড রাসেল বলেছিলেন “মানষ ঘুমিয়ে যে সপ্ন দেখে সেটা সপ্ন নয়, বরং যে সপ্ন মানুষকে ঘুমাতে দেয় না সেটাই সপ্ন”। পৃথিবীতে এ রকম বহু স্বপ্নবাজের আগমন ঘটেছে, যিনিরা সপ্ন দেখেছন,সপ্ন বুনেছেন নিজস্ব ছকের জালে এবং নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে গেছেন স্বপ্নের বাস্তবায়নে। এ রকম এক সপ্নবাজের জন্ম সিলেটের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলি গ্রামে। তিনি চেয়েছেন মানুষের কাছে যেতে, ভালবাসা পেতে এবং খুব কাছ থেকে মানুষের মনের কথাগুলো শুনতে ও হৃদয় দিয়ে মানুষের কষ্ট অনুভব করতে। নাড়ীর স্পন্দন জানার ইচ্ছাই ছিল তাঁর সপ্ন। অামি যার কথা বলছি তিনি অার কেউ নন, তিনি ইউরোপের বাংলা মিডিয়ার অগ্রজ সৈনিক, ইউকে-বাংলা প্রেস ক্লাবের অাহ্বায়ক ও চ্যানেল অাই ইউরোপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রদ্ধাভাজন রেজা আহমদ ফয়সল চৌ: সোয়েব। সদালাপী এই ব্যাক্তি তাঁর লেখনী ও চ্যানেল অাই এর জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘স্ট্রেইট ডায়ালগ’ উপস্থাপনায় সত্যকে সহজভাবে তুলে ধরে পাঠক ও দর্শক শ্রেনীতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও সোনাম অর্জন করেছেন। ১৯৮৯ সালে সিলেট থেকে তাঁর সম্পাদনায় ‘সাপ্তাহিক সিলেট’ কথা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি ৯০ এর দশকে যখন বিলেতে অাগমন করেন তখন সাপ্তাহিক নতুন দিন পত্রিকা সহ বেশ কয়েকটি বাংলা পত্রিকায় মাতৃভূমি,ভাষা,সংস্কৃতি, রাজনীতি,সমাজনীতি সহ কমিউনিটির বিভিন্ন সমস্যা পরিষ্কারভাবে তাঁর লেখনীতে তুলে ধরেছেন এবং তাঁর এই নিরন্তর প্রচেষ্টা চ্যানেল অাই এর মাধ্যমে এখনও অব্যাহত অাছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ১/১১ এর সময় তিনি যখন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক অামাদের সময়ের লন্ডন প্রতিনিধির দায়িত্বে ছিলেন,তখন ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দীন সরকারের সমালোচনা ও দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে তিনি কলম সৈনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হোন ও দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেন। বিভিন্ন সময় নাড়ির টানে অাঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা এই সাহসী ক্ষনজন্মা তাঁর টক শো অনুষ্ঠান ‘স্ট্রেইট ডায়ালগ’ অনুষ্টানে বাংলাদেশ থেকে অাগত অনেক বাঘা বাঘা মন্ত্রী, এমপি, বিরোধীদলীয় নেতা,আমলা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদেরকে কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি করে সত্য কথা অাদায়ের চেস্টা ও অবলীলায় নিজের স্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেন। এ জন্য সুদূর বিলেতে থেকেও বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদের হুমকি ধামকির শিকার হতে হয় তাকে।বাংলাদেশ থেকে অামদানিকৃত নোংরা রাজনীতি যখনি বিলেতের বাংলা কমিউনিটিকে বিভক্তের চেষ্টা চালিয়েছে ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে তখনই সিদ্ধহস্তে কলম ধরেছেন এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে। এতে কারো কারো চক্ষুশোলে পরিনত হয়েছেন। কিন্তু বরাবরই সমস্ত রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে নিজস্ব নীতিতে অটল থেকে এগিয়ে চলেছেন অাপন পথে। মাতৃভক্ত এই মানুষটির কাছে কেউ কোন আবদার নিয়ে গেলে তিনি না বলতে পারেন না। নিজের শত কস্টের বিনিময়ে হলেও চেস্টা করেন অাগন্তুককে হাসি মুখে বিদায় দেবার। তাঁর হাত ধরে তরুণ প্রজন্মের অনেকেরই গনমাধ্যমে অাগমন ঘটেছে। অনেককে সুযোগ কের দিয়েছেন তাঁরই মত করে স্বপ্নবাজ হওয়ার।শিশ্যরাও তাঁরই কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলেছেন গুরুর দেখিয়ে দেয়া পথে। বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড: কামাল হোসেন সহ রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপি,আমলা, ডাক্তার, শিক্ষক, সাংবাদিক, কৃষক,ব্যবসায়ী, শিল্পী,সহ সকল পেশার মানুষদের তিনি অামন্ত্রন জানিয়েছেন তাঁর স্ট্রেইট ডায়ালগ অনুষ্টানে। অতিথিরাও সবসময় তাঁর হাঁসিমাখা অাতিথেয়তায় ধন্য। একমাত্র পুত্র জামী ও সহধর্মিণী ডা: অানোয়ারা অালীকে নিয়ে ব্যক্তিগত জীবনেও বেশ সুখেই অাছেন তিনি। উনার সহধর্মিণীও কমিউনিটির বেশ পরিচিত মুখ।যিনি টাওয়ার হ্যামলেটসে্র সাবেক কাউন্সিলার ও কনজারভেটিভ পার্টির নেত্রী। গোলপগঞ্জের এই কৃতিসন্তান বর্তমানে টাওয়ার হ্যামলেটসে্ সিনিয়র জিপি হিসেবে কর্মরত অাছেন। অামার উপলব্ধিতে মিথ্যা এবং অন্যায়ের বেড়াজালে যখন বিবেক,সমাজ, রাস্ট্র আচ্ছন্ন তখন সাহস এবং সততার একটি আশ্রয়স্থলের নাম হচ্ছে রেজা আহমদ ফয়সল চৌ: সোয়েব। বিশ্বাস করি এই সাহসী সৈনিক আজকের রুগ্ন সমাজকে আলোর পথ দেখাতে অব্যাহত রাখবেন তাঁর সংগ্রামী প্রচেষ্টা।