ইউরো ২০২৪ঃ নেদারল্যান্ডসকে বিদায় করে ফাইনালে ইংল্যান্ড

Spread the love

ইংল্যান্ড ২: ১ নেদারল্যান্ডস

ঘড়ির কাঁটা ৯০ মিনিট ছুঁই ছুঁই। অতিরিক্ত সময়ের প্রস্তুতিও প্রায় সম্পন্ন। কিন্তু খেলাটাকে আর দীর্ঘায়িত চাইলেন না ওলি ওয়াটকিনস। বদলি নামা এই অ্যাস্টন ভিলা স্ট্রাইকার নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে করলেন দুর্দান্ত এক গোল।

তাঁর এই গোলেই নেদারল্যান্ডসকে ২–১ গোলে হারিয়ে ইউরোর টানা দ্বিতীয় ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ‘থ্রি লায়ন্স’রা। এই জয়ে প্রথমবারের মতো নিজ দেশের বাইরে আয়োজিত কোনো মেজর টুর্নামেন্টে ফাইনালের টিকিট পেল ইংলিশরা। পাশাপাশি এ জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোর ফাইনালে গেল ইংল্যান্ড। আগামী রোববার রাতে বার্লিনের ফাইনালে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ স্পেন। যারা অন্য সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়েছে ২–১ গোলে।

ডর্টমুন্ডের সিগনাল ইদুনা পার্কে দর্শকেরা স্থির হয়ে বসার আগেই ইংলিশ গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দেন ডাচ তারকা জাভি সিমন্স। বক্সের কাছাকাছি জায়গায় ডেকলান রাইসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ইংলিশ রক্ষণ তাক করে রীতিমতো কামান দাগান এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। সিমন্সের সেই শট থামানোর কোনো উপায় ছিল না ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডের। ম্যাচের ৭ মিনিটেই এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।

গোল খেয়ে জেগে ওঠার চেষ্টা করে ইংল্যান্ড। পরপর কয়েকবার আক্রমণে গিয়ে ডাচ রক্ষণকে কাঁপিয়ে দেয় তারা। তেমনই এক আক্রমণ ঠেকাতে গিয়েই ইংল্যান্ডকে পেনাল্টি উপহার দেয় নেদারল্যান্ডস। হ্যারি কেইনের শট ঠেকাতে গিয়েই তাঁকে ফাউল করে বসেন নেদারল্যান্ডসের ডেনজিল ডামফ্রিস। ভিএআরে যাচাই করে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। যদিও রেফারির এই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের সুযোগ আছে।

May be an image of 1 person, playing football, playing American football and text that says "19 SH Nip DQRT"

পেনাল্টিতে অবশ্য কোনো ভুল করেননি কেইন। সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও ইংলিশ অধিনায়কের শট ঠেকাতে পারেননি ডাচ গোলরক্ষক।

সমতা ফিরিয়েও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ম্যাচের ২৩ মিনিটে দারুণভাবে ডাচ ডি–বক্সের ভেতর কোবি মাইনুর কাছ থেকে বল পেয়ে নেদারল্যান্ডস গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে গোলের উদ্দেশে বল বাড়ান ফিল ফোডেন।

ইংল্যান্ডকে পেনাল্টি উপহার দেওয়ার দায়টা গোললাইন থেকে অবিশ্বাস্যভাবে  সেই বল ফিরিয়ে শোধ করেন ডামফ্রিস। ইংলিশ আক্রমণের ধাক্কা সামলে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে নেদারল্যান্ডস। ৩০ মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে ডামফ্রিসের নেওয়া হেড বারে লেগে ফিরে না আসলে তখনই ব্যবধান বাড়াতে পারত নেদারল্যান্ডস।

ডাচদের পর পোস্ট হতাশ করে ইংল্যান্ডকেও। ৩২ মিনিটে ডাচ বক্সের বাইরে থেকে ফিল ফোডেনের নেওয়া শট ফিরে আসে ফিরে আসে পোস্টে লেগে। গতকাল কাছাকাছি জায়গা থেকেই প্রায় একই রকম শটে অবিশ্বাস্য এক গোল করে ফ্রান্সের বিপক্ষে স্পেনকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন লামিনে ইয়ামাল। তবে আজ সামান্যের জন্য হতাশ হতে হয়েছে ফোডেনকে।

আগের ম্যাচগুলোতে নিজেদের পারফরম্যান্সের জন্য সমালোচনার মুখে ছিল ইংল্যান্ড। তবে সেমিফাইনালের প্রথমার্ধে সেটা অনেকটাই পুষিয়ে দেয় ‘থি লায়ন্স’রা। মাঝমাঠ দখলে রেখে দারুণ সব আক্রমণ তৈরি করে তারা। বিপরীতে নেদারল্যান্ডসকে এ সময় প্রতি–আক্রমণের ওপর নির্ভর করেই খেলতে হচ্ছিল।

বিরতির পর দুই দলই সতর্কতার সঙ্গে শুরু করে। রক্ষণ সুরক্ষিত রেখে আক্রমণে চোখ রাখে তারা। যে কারণে এ সময় খেলা কিছুটা মন্থরও হয়ে পড়ে।  এ সময়ও অবশ্য ইংল্যান্ডের পায়েই বেশিরভাগ সময় বল ছিল। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে প্রথমার্ধের মতো ফাঁকা পাচ্ছিল না তারা। ডাচ ডিফেন্ডাররা জায়গা সংকুচিত করে আনার কারণেই মূলত সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইংলিশ ফরোয়ার্ডদের।

May be an image of 1 person, playing American football, playing football and text

অন্য দিকে নেদারল্যান্ডস সুযোগ পেলেই চেষ্টা করছিল দ্রুত গতিতে প্রতি–আক্রমণের যাওয়ার। তবে সফল হয়নি তারাও। এর মধ্যে ৬৫ মিনিটে ফ্রি–কিক থেকে ভার্জিল ফন ডাইকের রীতি শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঠেকিয়ে ইংল্যান্ডকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক সিমন। তবে আকস্মিক তৈরি হওয়া সুযোগগুলো বাদ দিলে ৭০ মিনিট পর্যন্ত কিছুটা নিষ্প্রাণ খেলায় হয়েছে।

এর মধ্যে ম্যাচের ৭৯ মিনিটে দারণ এক আক্রমণে কাইল ওয়াকারের পাসে গোল করেন বুকায়ো সাকা। কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে বাতিল হয় গোলটি। ৮৪ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে কাছাকাছি গিয়েও গোল পায়নি নেদারল্যান্ডস। ৮৮ মিনিটে একইভাবে সুযোগ হাতছাড়া করে ইংল্যান্ডও। তবে ৯০ মিনিটে আর সুযোগ মিস করেননি ওলি ওয়াটকিনস। কোল পালমারের কাছ থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ইংল্যান্ডকে ২–১ গোলের এগিয়ে দেন ওয়াটকিনস। আর বদলি নামা এ্ই অ্যাস্টন ভিলা ফরোয়ার্ডর গোলই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।


Spread the love

Leave a Reply