ইতিহাস করলো ক্রোয়েশিয়া
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃইতিহাস রচনা করলো ক্রোয়েশিয়ার ‘গোল্ডেন জেনারেশন’। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছালো ক্রোয়েশিয়া। গত রাতে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২০ মিনিটের লড়াই শেষে ২-১ গোলে জয় কুড়ায় ক্রোয়াটরা। আর ক্রোয়েশিয়া দেখায় দারুণ প্রত্যাবর্তনও। মস্কোর লুঝনিকি ভেন্যুতে আগে গোল খেয়ে শেষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মদ্রিচ বাহিনী। আগামী রোববার একই মাঠে ফ্রান্সের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নামবে ক্রোয়েশিয়া।
রাশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইানালে গোল করে আপত্তিকর উদযাপনে ডোমাগো ভিদার উপর ক্ষেপে ছিল ফিফা।সেমিফাইনালের আগে ফিফার কাছে মাফ চেয়ে পার পেলেও রাশিয়ানদের ক্ষমা মেলেনি। লুঝনিকিতে যতবার তার পায়ে বল গেছে, ততবারই পুরো স্টেডিয়াম তাকে কটাক্ষ করে চিৎকার করেছে। তবে আমুদে ও উৎসব প্রিয় রাশিয়ানরা তাই বলে কিন্তু ইংল্যান্ডকে সমর্থন করেনি! এই ক্রোয়েশিয়ার কাছে হরে উৎসব ম্লান হয়েছে স্বাগতিকদের। এর পরেও অধিকাংশ রাশান ক্রোয়েশিয়ার পতাকা হাতে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছেন। রাশিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ড ফাইনাল খেলবে এটা অনেকেই তারা চান না। ২০১৮ বিশ্বকাপ আয়োজকের বিডিংয়ে রাশিয়ার বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ইংল্যান্ড। আয়োজক নিশ্চিত হওয়ার পরও ইংল্যান্ড অনেক সমালোচনা করেছে রাশিয়া নিয়ে। পিটার্সবার্গ থেকে মস্কোর সেমিফাইনাল দেখতে আসা মধ্য বয়সী চামরিচ বলেন,‘ ইচ্ছে ছিল লুঝনিকি (মস্কো ) নিজ দেশের খেলা দেখব। সেটা হচ্ছে না। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল মাঠ থেকে দেখাও খুবই সৌভাগ্যের। ক্রোয়েশিয়ার কাছে আমরা হারলেও আমরা ক্রোয়েশিয়ার সমর্থনই করব।’ এমনই মন্তব্য আরেক রুশ সুন্দরীর,‘রাশিয়া বিশ্বকাপ অনেক ভালো হচ্ছে। রাশিয়া বিশ্বকাপে নতুন ফাইনালিস্ট ও নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখতে চাই। সেক্ষেত্রে আমার পছন্দ ক্রোয়েশিয়া। মদ্রিচ, রাকেটিচদের নিয়ে দারুণ মিডফিল্ড তাদের।’ রাশানরা ক্রোয়োশিয়াকে সমর্থন যোগালেও গ্যালারিতে ইংলিশ সমর্থকের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি। মাঠেও তাদের কোনঠাসা করে রাখে হ্যারি কেইনের দল। ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই কিয়েরান ট্রিপিয়ারের দারুণ এক ফ্রি কিক দেয়ালের উপর দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে (১-০)। এতে লিড পায় ইংল্যান্ড। ডি বক্সের বাইরে ডেলে আলিকে ফেলে দিয়েই বিপদ ডেকে আনেন ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ। ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে ফ্রি কিক থেকে গোল পায় ইংল্যান্ড। এছাড়া চলতি বিশ্বকাপে ১২ গোলের মধ্যে সেট পিসে করা তাদের নবম গোল ছিল এটি। ম্যাচের শুরুতেই গোল করে মানসিকভাবে এগিয়ে যায় থ্রি লায়নরা। প্রথম গোলের ধাক্কায় ক্রোয়েশিয়ার গুছিয়ে উঠতে চলে যায় আরো কিছু সময়। এই সুযোগে বারবার ক্রোয়াটদের রক্ষণ কাঁপিয়ে তোলেন হ্যারি কেইন, ডেলে আলিরা। ম্যাচের ২২তম মিনিটে বাজে এক ভুল করে বসেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক দানিয়েল সুবাসিচ। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তিনি দিয়ে দেন রাহিম স্টার্লিংয়ের পায়ে। স্টার্লিং দুর্দান্ত চতুরতায় তা কেইনকে দিলেও, অফসাইডের ফাঁদে ধরা পড়েন ইংলিশ অধিনায়ক। সেই যাত্রায় বেঁচে যান সুবাসিচ। এর খানিক বাদে উইং দিয়ে ইংল্যান্ডের রক্ষণে আক্রমণ সাজায় ক্রোয়েশিয়া। ছোট ছোট পাসে সামনে এগিয়ে হুট করেই বুলেট গতির শট নেন আন্তে রেবিচ। তবে ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড সতর্ক থাকায় গোলবঞ্চিত হয় ক্রোয়েশিয়া।