ইয়েমেনে এবার টমাহক ক্রুজ মিসাইল হামলা চালিয়েছে আমেরিকা
ডেস্ক রিপোর্টঃ যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম জানিয়েছে ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সিএনএন ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স কারও নাম উল্লেখ না করে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে।
হামলার জন্য রাজধানী সানাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে- হুথিদের টিভি চ্যানেল আল মাসিরাহ্ শনিবার ভোরে এমন খবর প্রকাশের কয়েক মিনিট পরেই নতুন হামলার খবর আসলো।
একজন কর্মকর্তা এনবিসিকে বলেছেন, লোহিত সাগরে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে মিসাইল হামলাটি করা হয়েছে।
অন্যদিকে দুজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি রাডার সাইটকে টার্গেট করেছিলো যেটি সমুদ্রসীমায় জাহাজ পরিবহনের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলো।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য একযোগে হুথিদের ত্রিশটির মতো অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানোর একদিন পরেই আবার নতুন করে হামলা চালানো হলো। হুথি বিদ্রোহীরা প্রথম হামলার পরেই পাল্টা প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছিলো।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই সতর্ক করে বলেছেন হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে পণ্য পরিবহনে হামলা অব্যাহত রাখলে যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ জবাব দেবে।
এদিকে আমেরিকা ও ব্রিটেনের হামলার পর ইয়েমেনের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
নতুন হামলা সম্পর্কে আরও যা জানা যাচ্ছে
ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত নতুন হামলা সম্পর্কে এখনো খবরা-খবর আসছে।
তবে হুথিদের টিভি চ্যানেল আল মাসিরাহ্ তাদের এক রিপোর্টে খবর দেয় যে হুথিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইয়েমেনের রাজধানী সানাকে টার্গেট করা হয়েছে।
“আমেরিকান ও ব্রিটিশ শত্রুরা বেশ কয়েকটি হামলার মাধ্যমে রাজধানী সানাকে টার্গেট করেছে,” এমন খবর চ্যানেলটি তার সংবাদদাতাকে উদ্ধৃত করে সামাজিক মাধ্যমে এক্স এ পোস্ট করেছে।
এপির সাংবাদিকরা সানায় বড় ধরণের বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
ইরানকে যা বললেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস ইরানের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন দেশটি যেন তার সহযোগীদের “ক্ষান্ত” দিতে বলে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিমান হামলার পর তিনি এ আহবান জানান।
ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শ্যাপস সতর্ক করে বলেন বিশ্ব তেহরানের ওপর ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলছে।
“আপনাদের অবশ্যই হুথি বিদ্রোহীদের ধরতে হবে। লেবাননের হেজবুল্লাহর মতো যারা আপনাদের হয়ে প্রক্সি দিচ্ছে, কিছু ইরাক ও কিছু সিরিয়ায়, আপনাদের অবশ্যই এসব সংগঠনকে থামাতে হবে”।
রুট পরিবর্তন করছে পণ্যবাহী জাহাজ
বড় শিপিং কোম্পানিগুলো তাদের কার্গো জাহাজগুলোর লোহিত সাগর এড়িয়ে চলার জন্য রুট পরিবর্তন করছে। লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা শুরুর পর এটি এই প্রথম।
ওই অঞ্চলের কিছু ছবিতে গত নভেম্বরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুথিদের প্রথম হামলার পর এবং এখন চিত্র দেখা যাচ্ছে।
তাতে দেখা যাচ্ছে বহু জাহাজ রুট পরিবর্তন করে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার কেপ অফ গুড হোপ এলাকা দিয়ে চলাচল শুরু করেছে।
ম্যারিটাইম ট্রাফিক ওয়েবসাইট অনুযায়ী লোহিত সাগরের রুট ধরে তেল ও গ্যাস ট্যাংকার যাতায়াত খুব বেশি কমেনি।
যদিও ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অফ ইনডিপেন্ডেন্ট ট্যাংকার ওনারস (ইন্টারট্যাংকো) জাহাজগুলোকে সম্ভব হলে ওই এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে।
বাইডেন যা বললেন
যুক্তরােষ্ট্রর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তারা ইরানের সাথে কোন ছায়াযুদ্ধে জড়ায়নি।
“ইরান আমাদের সাথে যুদ্ধে জড়াতে চায় না,” তিনি বলছিলেন হোয়াইট হাউজে কর্মরত সাংবাদিকদের।
তিনি একই সাথে বলেন তার বিশ্বাস হুথিরা একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন হুথিদের বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গাড়ি বহর আলেনটাউন ফায়ার ট্রেনিং একাডেমি অতিক্রমের সময় একদল মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতির কথা জানিয়েছেন একজন সাংবাদিক।
‘আমরা নভেম্বরে মনে করবো’ এবং ‘নো ভোট ফর জেনোসাইড জো’ -এমন শ্লোগান দিতে শোনা গেছে তাদের।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা।
ওদিকে ইয়েমেনেও হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে রাজধানী সানায় হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বলে জানা গেছে।