ইরানে নৈতিকতা রক্ষার পুলিশ বাহিনী ‘বিলুপ্ত করা হয়েছে’
ডেস্ক রিপোর্টঃ ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল একটি ধর্মীয় সম্মেলনে বলেছেন, ইসলামি নীতি- নৈতিকতা নিয়ে খবরদারি করার জন্য তৈরি সেদেশের বিশেষ পুলিশ বাহিনীকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
হিজাব না পরার জন্য এই বাহিনীর হাতে আটক মাহসা আমিনি নামে ২২ বছরের এক তরুণীর মৃত্যুর পর ইরানে গত আড়াই মাস ধরে চলা সহিংস বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে মোহাম্মদ জাফর মোনতাজেরির কাছ থেকে এই ঘোষণা এলো।
তবে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী বা সরকারের আরও উঁচু মহল থেকে এমন সিদ্ধান্তের কথা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।
নারীদের ইসলামি ড্রেস কোড বা পোশাক পরিধান সহ ইসলামি বিভিন্ন নীতি-নৈতিকতার প্রয়োগ নিশ্চিত করাই ছিল মরালিটি বা নৈতিকতা বিষয়ক এই পুলিশ বাহিনীর অন্যতম প্রধান কাজ।
তবে বিবিসি ফার্সি ভাষা বিভাগের সংবাদদাতা সিভাশ আরদালান বলছেন, মরালিটি পুলিশ ভেঙে দেওয়ার অর্থ এই নয় যে ইরানে হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা রহিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার এই সিদ্ধান্ত যদি সত্যিই নিয়ে থাকে তাহলে তা তা চলমান বিক্ষোভ প্রশমিত করবে সে সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, বিক্ষোভকারীরা নতুন করে তিন দিনের ধর্মঘট ডেকেছে।
তবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি এবং লন্ডনের দৈনিক গার্ডিয়ান সহ ডজন খানেক আন্তর্জাতিক মিডিয়া খবর দিয়েছে, হিজাব বাধ্যকতামুলক করে জারী করা আইনটি সরকার পুনর্বিবেচনা করছে।
শনিবার ইরানের সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ মি. মোনতাজেরিকে উদ্ধৃত করে খবর দিয়েছে (হিজাব বাধ্যতমুলক করার) আইনটিতে পরিবর্তন আনার কোনও পথ রয়েছে কিনা “পার্লামেন্ট এবং বিচার বিভাগ তা খুঁটিয়ে দেখছে।“
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পর্যালোচনা কমিটি বুধবার পার্লামেন্টের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের সাথে বৈঠক করেছে। “এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল জানা যাবে,” – মি. মোনতাজেরিকে উদ্ধৃত করে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সহিংস বিক্ষোভে সরকারি হিসাবেই মৃত্যুর সংখ্যা দুশ ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী তেহরানসহ বেশ কিছু শহরে বহু নারী প্রতিবাদ জানাতে হিজাব পরছেন না।
ইরানে ইসলামি বিপ্লবের বছর চারেক পর ১৯৮৩ সালের এপ্রিলে নারীদের মাথার চুল ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক করে আইন জারী করা হয়।