‘ইসরায়েল গাজা যুদ্ধে অন্য দেশগুলিও জড়িয়ে পড়তে পারে কি?’
গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সম্ভাব্য অভিযানের দিকে এখন সবার নজর। এই সংঘাত কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে মোড় নেবে? হামাস কি যুদ্ধাপরাধী? মিশরই বা কেন মুসলমান প্রতিবেশীদের প্রবেশপথ বন্ধ করে রেখেছে?
সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা পাঠকদের কাছ থেকে এরকমই শত শত প্রশ্ন পেয়েছে বিবিসি। তারা জানতে চান, যে এই সংঘর্ষের পরিণাম কি হবে, এর প্রভাব কতখানি পড়তে পারে এবং অন্য দেশগুলি এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে কিনা?
এই মুহূর্তে বিবিসির যে সাংবাদিকরা ইসরায়েল-গাজার রণাঙ্গনে রয়েছেন, সেখান থেকেই তারা পাঠকদের সবচেয়ে বেশি জানতে চাওয়া কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে কি?
ব্রিটেনের স্কেলমাসদেল থেকে ক্রেইগ জনসন জানতে চেয়েছেন, যদি ইরান সরাসরি এই সংঘর্ষে জড়িত হয়, তাহলে কি যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র দেশগুলিও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে? এর ফলে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হতে পারে?
বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক, জেরেমি বোয়েন এখন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চল থেকে রিপোর্টিং করছেন। তার জবাব:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, ইরান বা তার লেবাননি মিত্র হেজবুল্লাহ গোষ্ঠীর এই যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা আছে কী না, তার উত্তরে তিনি বারবার বলেছেন যে, তারা যেন কিছুতেই এর মধ্যে না ঢোকে।
ইরানকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার কড়া বার্তা দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি দুটি যুদ্ধবিমান বহনকারী জাহাজ পাঠিয়েছে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, যদি কেউ এতে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে তাদের শুধু ইসরায়েল নয়, মার্কিন সৈন্যদের মোকাবিলাও করতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যের একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের দ্বারা পরিচালিত হয়। অন্য অংশটির ওপর প্রভাব রয়েছে ইরান ও তাদের সমর্থক গোষ্ঠীর।
যুদ্ধের ঝুঁকি সম্পর্কে উভয় পক্ষই সচেতন। তারা এও জানে, স্নায়ু যুদ্ধ থেকে যদি তা সম্মুখ সমরে পরিণত হয়, তাহলে তা মধ্যপ্রাচ্যের সংঘর্ষকে আরও বড় করে তুলবে এবং সারা বিশ্বেই তার প্রভাব পড়বে।
ইসরায়েলের মূল উদ্দেশ্য কী?
‘স্কটিশ বর্ডার্স’ এলাকা থেকে লুসিয়ানো সিসি জানতে চেয়েছেন, ‘যে স্থলযুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার পেছনে ইসরায়েলের মূল উদ্দেশ্য কী?’
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিবিসির আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা লিজ ডুসেটের উত্তর:
অতীতের যুদ্ধগুলিতে ইসরায়েল ‘হামাসকে কঠোরভাবে আঘাত করার’ অঙ্গীকার করেছিল, যাতে তাদের পক্ষে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপের ক্ষমতা ধ্বংস হয়ে যায়। সেই সঙ্গে তাদের ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গগুলিও যাতে ধ্বংস হয়।
কিন্তু এবারের ব্যাপারটা অন্যরকম। ইসরায়েল ‘হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার’ অঙ্গীকার করছে এবং এমনভাবে তারা হামাসকে সমূলে উপড়িয়ে ফেলতে চায়, যেমনটা করা হয়েছির ইসলামিক স্টেটকে।
হামাসের অবকাঠামো ধ্বংস করা, সুড়ঙ্গ গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং তাদের কমান্ড ও কন্ট্রোল নেটওয়ার্ককে পঙ্গু করে দেওয়ার মতো সামরিক শক্তি ইসরায়েলের রয়েছে।
তবে গাজায় কী অপেক্ষা করছে সে সম্পর্কে ইসরায়েল কতটুকু জানে তা স্পষ্ট নয়। ইসরায়েলি নিরাপত্তা সম্পর্কে অভাবনীয় রকম নিখুঁত তথ্য, যা দিয়ে তারা ইসরায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দিতে পেরেছে, হামাসের সেই সামরিক শক্তি ইসরায়েলিদের হতচকিত করে দিয়েছে।
হামাসও সম্ভবত একইরকম ভাবে প্রস্তুত কারণ তারা ভাল করেই জানে যে ইসরায়েলের দিক থেকে কী হিংস্র প্রতি আক্রমণ হবে।
তবে ইসলামিক স্টেট গ্রুপের থেকে হামাস কিছুটা আলাদা। হামাস হলো এমন একটি সংগঠন যারা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবেই ফিলিস্তিনি সমাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
একটি সামরিক আক্রমণ হয়তো তাদের অবকাঠামো বা স্থাপনা বিধ্বস্ত করতে পারে কিন্তু তাদের পুরো শক্তিকে ধ্বংস করতে পারবে না। এর ফলে হামাসের অনেক সদস্য হয়তো আদর্শের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করার ইচ্ছা আরও জোরালো হয়ে উঠবে।
হামাস কেন আক্রমণ করল?
যুক্তরাজ্যের অ্যান্ড্রু পার্কার প্রশ্ন করেছেন: হামাসের প্রাথমিক আক্রমণের লক্ষ্য কী ছিল?
বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার বলেছেন :
হামাসের মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-দেইফ এর কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে’।
তিনি বলেন, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলিদের ক্রমাগত উস্কানি আর তাদের হাতে ফিলিস্তিনিদের অপমানের জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এর পেছনে আরও কিছু কারণ থাকতে পারে, যেগুলো তারা প্রকাশ করছে না।
হামলার আগে, ইসরায়েল ও সৌদি আরব তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে এগোচ্ছিল।
হামাস এবং তাদের সমর্থক ইরান উভয়ই এর বিরোধিতা করেছিল। সৌদি আরব এখন ওই আলোচনা স্থগিত রেখেছে।
কিন্তু ওই হামলার অন্য একটি দিকও আছে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দক্ষিণ-পন্থী সরকার যে বিচার বিভাগীয় সংস্কার চালু করেছে, তার ফলে ইসরায়েলি সমাজে তীব্র বিভাজন ঠিকই লক্ষ্য করেছে হামাসের নেতৃত্ব।
তারা ইসরায়েলকে বেদনাদায়ক আঘাত করতে চেয়েছিল – এবং এতে তারা সফল হয়েছে।
মিশর কেন সীমান্ত বন্ধ রাখছে?
যুক্তরাজ্যের নাগরিক ডায়ানা প্রশ্ন করেছেন: মুসলমানরা তো একই পরিবার আর ইসলামী ভ্রাতৃত্বের কথা বলে। মিশরের মুসলমানরা কোন যুক্তিতে গাজার সঙ্গে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে রেখেছে?
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন জানাচ্ছেন:
ইসলাম একটি ধর্মবিশ্বাস, কিন্তু সবসময়ে তা জাতীয় নিরাপত্তার রাজনীতির বাইরে বের হতে পারে না।
আমি নিশ্চিত যে লক্ষ লক্ষ মিশরীয় মুসলমান চাইছেন যাতে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের দুর্দশা কমে।
কিন্তু স্বাভাবিক সময়তেও মিশরের সরকার গাজা থেকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে নিয়মিত প্রবেশের অনুমতি দেয় না। হামাস যখন ২০০৭ সালে গাজা দখল করে, তারপর থেকে ইসরায়েলের গাজা অবরোধে মিশরও কিছুটা অংশ নিয়েছিল।
হামাসের শিকড় রয়েছে প্রায় এক শতাব্দী আগে মিশরে গড়ে ওঠা ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এই। ইসলামী শিক্ষা ও বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করতে চায় ‘ব্রাদারহুড’।
মিশরের সেনাবাহিনী অবশ্য এর বিরোধিতা করে। একজন নির্বাচিত মুসলিম প্রেসিডেন্টকে ২০১৩ সালে ক্ষমতাচ্যুত করে তারা।
মিশরের বর্তমান সরকারের সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক রয়েছে এবং একটা সময়ে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমও ছিল তারা। কিন্তু তারা ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ঢল চায় না।
সদ্য স্বাধীন হওয়া ইসরায়েল যখন জবরদস্তি তাড়িয়ে দেওয়া শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য গাজায় যে সব শিবির গড়া হয়েছিল, ৭৫ বছর পরে এখনও সেগুলো টিঁকে আছে।
হামাস কি যুদ্ধাপরাধী?
যুক্তরাজ্য থেকে সাইমন জিজ্ঞাসা করেছেন: পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। হামাস নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও কেন একই প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না? এটা কি বড় ধরনের যুদ্ধাপরাধ ছিল না?
আমাদের কূটনৈতিক সংবাদদাতা পল অ্যাডামস উত্তরে জানাচ্ছেন:
ইসরায়েল সাতই অক্টোবরের আগে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়নি যদিও বহু বছর ধরে দফায় দফায় সংঘাত বেঁধেছে।
ইসরায়েলের জন্য এটা যুদ্ধ নয়, এটা ছিল সন্ত্রাসী হামলা।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার তার নিজস্ব কায়দায় ন্যায়বিচার চালাচ্ছে এবং ইতিমধ্যেই গণহত্যার জন্য দায়ী বলে তারা মনে করে, এমন দুজন হামাস কমান্ডারকে ইসরায়েল হত্যা করেছে।
নিঃসন্দেহে তারা আরো অনেককে হত্যার চেষ্টা করবে।
কাতার ও লেবাননে বসবাসরত সংগঠনটির রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, কারও মতে যারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর যে পরিকল্পনা সামরিক শাখা করেছে, সে সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না।
জাতিসংঘ কেন বিমান হামলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে না?
লন্ডন থেকে সাদুল হক প্রশ্ন করেন: সবাই যদি এটা মেনে নেয় যে সাম্প্রতিক হামলাগুলোয় ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে এবং আরও করবে, তাহলে কেন জাতিসংঘ আর অন্যান্য দেশ হস্তক্ষেপ করছে না?
আমাদের কূটনৈতিক সংবাদদাতা জেমস ল্যান্ডেল এই উত্তর দিয়েছেন:
অনেক দেশ ইসরায়েলকে তাদের বিমান হামলা বন্ধ করার কথা না বলার প্রধান কারণ হল হল তারা এটা স্বীকার করে যে ওই দেশটির ওপরে হামাস আক্রমণ করেছে এবং আত্মরক্ষার অধিকার তাদের আছে।
ইসরায়েল কীভাবে আত্মরক্ষা করবে, সেই পদ্ধতিতে সংযম দেখানোর কথা বলছে বিভিন্ন দেশ।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, ‘আমি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময়ে বলেছি যে বেসামরিক মানুষের ওপরে যাতে সবথেকে কম প্রভাব পড়ে, সেই চেষ্টা করতে হবে।“
জাতিসংঘও ইসরায়েলকে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, “আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকার আইনকে অবশ্যই সম্মান জানাতে ও তুলে ধরতে হবে। বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে এবং তাদের কখনও মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না।’
ইসরায়েল জোর দিয়ে বলেছে যে তাদের যুদ্ধবিমান এবং রকেট-মিসাইলগুলি গাজায় হামাসকে লক্ষ্য করেই চালানো হচ্ছে। যদিও এই হামলায় অনেক বেসামরিক নাগরিক নিহত আর আহত হচ্ছেন।
ফিলিস্তিনিরা অভিযোগ জানিয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত ইসরায়েলি হামলার সময়ে কোনও বাছবিচার হচ্ছে না। অন্যদিকে, ইসরায়েল বলছে, এর কারণ হল হামাস বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
ইসরায়েল কেন আগে থেকে হামাসের হামলার কথা জানতে পারে নি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পাঠক প্রশ্ন করেন: গাজায় হামাস ঠিক কোথায় অবস্থান করছে , তা জানার জন্য ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পর্যাপ্ত গোয়েন্দা ও নজরদারি রয়েছে, কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব যে তারা জানত না যে হামাস ইসরায়েলকে আক্রমণ করতে যাচ্ছে বা হামলার কোনও সতর্কতা আগে থেকে পেল না?
জেরুজালেমে আমাদের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা ইয়োলান্দ নেল বলেছেন:
গাজার ওপরে নজরদারী চালানো হয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে, এর আগে সাংবাদিকদের সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যবস্থাপনায় যে ড্রোন আর অন্যান্য ক্যামেরার মাধ্যমে নীচে কোথায় কী হচ্ছে তার পরিষ্কার ছবি একেবারে সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যায়।
এছাড়াও তাদের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার এক বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে।
ইসলামিক জিহাদের সঙ্গে মে মাসের লড়াইয়ে আমরা দেখেছি যে শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিরা কে কোথায় রয়েছেন, তার কতটা নিখুঁত তথ্য ছিল ইসরায়েলের কাছে।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা এটা স্বীকার করেন যে হামাসের অভূতপূর্ব আর মারাত্মক সব হামলার ক্ষেত্রে আগেও বড়সড় গোয়েন্দা আর নিরাপত্তা ব্যর্থতার ঘটনা হয়েছে।
তবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে তাদের কাছে হামাস-লক্ষ্যগুলির একটা দীর্ঘ এবং নিখুঁত তালিকা আছে। স্থলবাহিনী লড়াই শুরু হলে এক এক করে ওইসব লক্ষ্যবস্তুর কাছে পৌঁছিয়ে যাবে ইসরায়েলি বাহিনী।
হামাসের সঙ্গে হেজবুল্লাহর তুলনা
গাজা উপত্যকা থেকে আরও উত্তরে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। একজন পাঠক জানতে চান: লেবানন যদি জড়িয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে হামাসের তুলনায় হেজবুল্লাহ কত বড় শক্তি?
এ বিষয়ে দক্ষিণ লেবানন থেকে হুগো বাচেগা জানাচ্ছেন:
লেবাননের সামরিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনকারী এক গোষ্ঠী হেজবুল্লাহকে ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে হামাসের চেয়েও শক্তিশালী হিসেবে দেখে আসছে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীর কাছে আনুমানিক এক লাখ ৩০ হাজার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
এই অস্ত্রাগারের বেশিরভাগই ছোট, মানব-বহনযোগ্য এবং ভূমি থেকে ভূমিতে ছোঁড়ার আর্টিলারি রকেট।
তবে এর মধ্যেই রয়েছে বিমান-বিধ্বংসী এবং জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, পাশাপাশি ইসরায়েলের গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রও।
হামাসের কাছে যা আছে তার তুলনায় এগুলি অনেক বেশি উন্নত।
হেজবুল্লাহর নেতা দাবি করেছেন যে তাদের এক লক্ষ যোদ্ধা রয়েছে, যদিও এই নিরপেক্ষ হিসাব অনুযায়ী সংখ্যাটা ২০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে। এদের অনেকেই প্রশিক্ষিত, এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে অংশ নেওয়া যোদ্ধা।