ইসরায়েলের কাছে রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করেছে ব্রিটেন
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃইসরায়েলের কাছে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। ক্যাম্পেইন এগেইন্সট আর্মস ট্রেডের পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র রফতানিকারী কোম্পানিগুলোকে গত বছর ২২ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড সমমূল্যের লাইসেন্স দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র বিক্রেতা কোম্পানিগুলোর জন্য ইসরায়েল অষ্টম সর্ববৃৎ বাজারে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স উইলিয়াম আগামী মাসে ইসরায়েল সফরে যাচ্ছেন- খবরটি নিশ্চিত হওয়ার কয়েকদিনের মাথায় নতুন এ পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হলো।
ব্রিটিশ সরকারের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালের যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হয় এমন ১২টি অস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করেছে যুক্তরাজ্য। ২০১০ সালে সেসময়কার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ড বলেছিলেন, ‘অনেকটা নিশ্চিতভাবেই’ বলা যায়, গাজায় হামলা চালাতে ব্যবহৃত ইসরায়েলি সরঞ্জামাদিগুলো যুক্তরাজ্য-সরবরাহকৃত।
ক্যাম্পেইন এগেইন্সট আর্মস ট্রেডের নতুন পরিসংখ্যান বলছে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ আগের রেকর্ডগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র রফতানিকারী কোম্পানিগুলোকে গত বছর ২২ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড সমমূল্যের লাইসেন্স দিয়েছে যুক্তরাজ্য, যা আগের বছরের চেয়ে অনেক বেশি। ২০১৬ সালে এর পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড। তারও আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ২ কোটি পাউন্ড। গত পাঁচ বছরে ইসরায়েল যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ৩৫ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের অস্ত্র কিনেছে।
ব্রিটিশ অস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইসরায়েলে রফতানির জন্য গত বছর যে লাইসেন্সগুলো দেওয়া হয়, তার মধ্যে আছে-ছোট অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র, অস্ত্র পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র এবং স্নাইপার রাইফেল। ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্য যেসব লাইসেন্স ইস্যু করেছিল, তার মধ্যে আছে-অস্ত্র বিধ্বংসী গোলা, বন্দুক, ক্ষেপণাস্ত্র উপকরণ, গ্রেনেড লঞ্চারের উপকরণ এবং দাঙ্গা প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
যুক্তরাজ্য ইসরায়েলকে ঘনিষ্ঠ এবং গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে। তবে সম্প্রতি কয়েকটি বড় বড় ইস্যুতে যুক্তরাজ্যকে প্রকাশ্যে ইসরায়েলের সমালোচনা করতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ পশ্চিমা মিত্রের মতোই ব্রিটিশ সরকারও যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলি দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তাছাড়া ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় শক্তিধর দেশের স্বাক্ষর করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা নিয়েও মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের বিরোধ রয়েছে। ওই চুক্তি থেকে সরে আসায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসা করেছিল ইসরায়েল। তবে যতোই মতানৈক্য থাকুক না কেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে ইসরায়েলের প্রতি লন্ডনের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক।
শুক্রবার (২৫ মে) ব্রিটিশ সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী উইলিয়ামের কার্যালয় কেনসিংটন প্রাসাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ জুন জর্ডান সফরের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করবেন উইলিয়াম। এর কয়েকদিন পর তেল আবিব যাবেন তিনি। পরবর্তী তিনদিন জেরুজালেম,তেল আবিব এবং পশ্চিম তীরের রামাল্লায় কাটাবেন ব্রিটিশ রাজপুত্র। তবে উইলিয়াম কোথায় যাবেন এবং কার সঙ্গে দেখা করবেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানায়নি কেনসিংটন প্রাসাদ।