ইসলামের জন্য যেসব অবদান রেখেছেন এরশাদ

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃদীর্ঘ ৯ বছর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান থাকাকালে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তার নেয়া কার্যক্রম ও সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বাংলাদেশের ইতিহাসে।

এরশাদ যেখানে পা রেখেছেন সেখানে বিজয়ের চিহ্ন একেছেন। জীবনে সোনালী রাজনীতির ভাজে ভাজে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে গ্রাম বাংলার মানুষের ভালোবাসা। বাংলা ও বাঙালিকে তিনি প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। তাই বাংলার মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন পল্লীবন্ধু।

বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিষয়টি বিবেচনা করে ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষনা করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ ছাড়াও ইসলাম ও মুসলমানদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি। দেশের মসজিদ- মাদরাসা নিয়েও তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ১৯৮৮ সালে প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করেন। তার এ ঘোষণায় মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। এছাড়াও সরকারিভাবে মসজিদের বিদ্যুতের বিল মওকুফ ও শুক্রবারকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণার কারণে মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে ক্রমেই প্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন এরশাদ।

ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে শুধু ঘোষণা দিয়েই আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেননি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে ইসলামি নির্দেশনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

স্বাধীনতার পর থেকে দেশের সাপ্তাহিক ছুটি ছিল রোববার। মুসলমানদের বিশেষ ইবাদতের দিন শুক্রবারে কোনো ছুটি ছিলোনা। যার কারণে জুমার নামাজে ভোগান্তিতে পড়তে হতো কর্মজীবিদের। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উদ্যোগেই সাপ্তাহিক ছুটি রোববারের পরিবর্তে শুক্রবার করা হয়।

রেডিও-টেলিভিশনে নামাজের আগে আজান সম্প্রচারের কোনো ব্যবস্থা বাংলাদেশে ছিলোনা। এরশাদের নির্দেশেই রেডিও এবং টেলিভিশনে সর্বপ্রথম আজান সম্প্রচার চালু হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় এখনও নামাজের আগে দেশের রাষ্ট্রীয় রেডিও-টেলিভিশনে আজান দেয়া হয়।

দেশের সর্বসাধারণের ধর্মীয় আবেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে মসজিদ-মন্দিরের পানি ও বিদ্যুৎ বিল মওফুক করা ছিল এরশাদের অন্যতম জনপ্রিয় পদক্ষেপ। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর বিদ্যুৎ ও পানির বিল রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করার সিদ্ধান্ত এরশাদকে হিন্দু-মুসলিম সবার কাছেই জনপ্রিয় করে তোলে।

জীবনের পড়ন্তবেলায় বিভিন্ন ইসলামি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নিজের নেয়া পদক্ষেপগুলোর কথা জানাতেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি।

২০১৭ সালের ২৫ মে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শরীয়াহ আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত একটি সেমিনারে অংশ নিয়ে এরশাদ বলেন, আমি ইসলামের জন্য অনেক কিছু করেছি। শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটি, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম, মসজিদ-মাদ্রাসা-মন্দিরে পানি ও বিদ্যুৎ বিল মওফুক করেছি। ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বললে সহ্য হয় না। দেশকে সামাজিক অবক্ষয় থেকে রক্ষা করতে এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নেতৃত্বে বাকি ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হন। কথা দিলাম, আজীবন আমি আপনাদের সাথে থাকব।

প্রসঙ্গত, জেনারেল এরশাদের শাসনামল নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, ক্ষমতাচ্যুত হবার পরেও তিনি কখনো নির্বাচনের পরাজিত হননি। এমনকি কারাগারে থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেন এরশাদ। এ থেকেই বোঝা যায় তিনি কতোটা জনপ্রিয় ছিলেন।


Spread the love

Leave a Reply