একজন শেবুল চৌধূরী; সমাজ প্রগতির লড়াইয়ে যিনি আজীবন সৃষ্টিশীল
কিছুদিন আগে হটাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিলাম ব্রিটেনের চারণ কবি উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জন্মস্থান ঘুরে আসব। আমি, বাংলা সংলাপ সম্পাদক মসাহিদ আলী এবং কমিউনিটি সংঘঠক সুফি সুহেল আহমেদ সকাল ১০টায় লন্ডন থেকে রওয়ানা দিলাম উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জন্মস্থান স্টাফরডশায়ারের পথে। যথারীতি সেখানে পৌঁছলাম, উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বাড়ী, মিউজিয়াম এবং সমস্ত শহর চষে বেড়ালাম। তখন বেলা গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা ৭টা, উদ্দেশ্য লন্ডনের পথে রওয়ানা হব। হটাৎ করেই সিদ্ধান্ত পাল্টালাম, স্থির করলাম বারমিংহামে আমাদের প্রিয় শেবুল ভাইকে একটু দেখে আসব। আগেই আমরা জেনেছি শেবুল ভাইয়ের ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এরপরও শেবুল ভাই সবসময় কর্মচঞ্চল। যিনি সারা জীবন সাংবাদিকতা, পরিবেশবাদী এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। মনটাকে ফিরাতে পারছিনা। ন্যাভিগেশন সার্চ করে দেখলাম আরও এক ঘন্টা ড্রাইভ করতে হবে সেখানে যেতে। ভাবলাম শেবুল ভাইকে একটা ফোন করি কারন আমি আগেই জেনেছি যে তাঁকে রাতে ডাক্তারের পরামর্শ মত বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় কারন ইতিমধ্যে তাঁর ক্যামথেরাপি দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। যথারীতি ফোন করার সাথে সাথেই অপর প্রান্ত থেকে শেবুল ভাই সেই সাবলীল কন্ঠে হ্যালো বললেন। আমি শেবুল ভাইকে সালাম দিয়ে বললাম, আমি আপনাকে এক নজর দেখার জন্য স্টাফরডশায়ার থেকে রওয়ানা দিচ্ছি, আমাদের আরও ৫০ মিনিট লাগবে আপনার এখানে পৌছতে। তিনি সায় দিলেন আমরা ড্রাইভ করে রাত ৮টায় শেবুল ভাইয়ের বাসায় পৌঁছলাম। আমাদের কথায় কখনই বুঝতে দেইনি যে তিনি অসুস্থ। শেষ পর্যন্ত বলেই ফেললাম, ‘শেবুল ভাই আমি আপনাকে অসুশ্ততার কথা মনে করে’ কষ্ট দিতে চাইনা। তখনও আজীবন কর্মচঞ্চল এই মানুষটির অবিরাম স্পৃহা উপলদ্ধি করলাম সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেও আমাদের প্রতি তাঁর হ্রদয়াপ্লুত ভালবাসা এবং নির্মল আতিথেয়তায়। দুই ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করলাম একসাথে, অনেক গল্প, অনেক কথা আর প্রবাস জীবনের স্মৃতিময় সোনালী অতিতের অনেক কল্পকাহিনী শুনে শুনে।
এইতো জানুয়ারি মাসে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নির্বাচন হল লন্ডনের একটি ভ্যানুতে। সকলের সাথে আমাদের শেবুল ভাইও সুদূর বারমিংহাম থেকে এলেন নির্বাচনী আমেজ উপভোগ এবং তাঁর মূল্যবান ভোট প্রয়োগ করার জন্য। এর ঠিক দুই সপ্তাহ পরেই পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুস্টিত হয়ে গেল বাংলা কাগজের ইন্টারন্যাশনাল এওয়ার্ড সিরিমনি। সেখানেও আমাদের প্রাণচাঞ্চল্যে শেবুল ভাই অসুস্থতা নিয়েও হাজির। সমাজ প্রগতির লড়াইয়ে সব সময় সোচ্চার এবং আজীবন সৃষ্টিশীল আমাদের শেবুল ভাই।
১৯৯১ সালে বৃটেনে আগমনের শুরু থেকেই বার্মিংহামে বসবাস। কিছু দিন তিনি তৎকালীন হ্যান্ডস ওয়ার্থ কলেজ লেখাপড়া করেন । অতঃপর বার্মিংহাম সিটি কলেজ থেকে এ লেভেল করে সুযোগ হয়েছিল আষ্টন ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে লেখাপড়া করার। কিন্তু পরিবারের বড় ছেলে (তিন ভাই দুই বোন এর মধ্যে বড় শেবুল ভাই) হিসেবে নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই তাঁকে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে হয়েছিল । কর্মজীবনের শুরুটা রেস্টুরেন্ট থেকে হলেও বিভিন্ন সময় রেস্টুরেন্ট ব্যবসা, ট্রাভেলস ও মানিএক্সচেঞ্জ, ছাড়াও শিক্ষকতা (বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলের অধীনে সাপ্লাই টিচার সহ বেসকো বাংলা সাপ্লিমেন্টারি স্কুলে প্রায় পাঁচ বছর শিক্ষকতা) এবং স্বাস্থ্য সেবা কর্মী হিসেবে বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের অধীনে (লোক্যাল গভর্নমেন্ট) বিগত এক যুগ ধরে কর্মরত ছিলেন তিনি। লেখালেখির সাথে যুক্ত মূলত ছাত্র জীবন থেকে অনেকটা কাকতালীয় ভাবেই । জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক দায়িত্ব পালন কালে বিভিন্ন প্রেস রিলিজের দায়িত্ব অর্পিত হত তাঁর উপর । সেই থেকে লেখালেখিতে পথচলা শুরু। কিছু দিন ‘গ্রাম সুরমা’র প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক প্রয়াত মহি উদ্দিন শিরু ভাইয়ের সান্নিধ্য লাভ । প্রতিটি কর্মসূচী বাস্তবায়নের পর প্রেস রিলিজ লিখে মহিউদ্দিন শিরু ভাইকে দেখানো তাঁর পর স্হানীয় প্রতিটি পত্রিকা অফিসে নিজ হাতে প্রেরন। বৃটেনের বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক সুরমা’র সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাসন ভাইয়ের সহযোগিতায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনিয়মিত ভাবে লেখালেখি। পরবতীর্তে সাপ্তাহিক জনমত, ইউরো বাংলাতে লেখালেখি এবং সাপ্তাহিক পত্রিকায় নিয়মিত ভাবে “বার্মিংহামের চিঠি” নামে একটি ফিচার প্রকাশিত হত। তাছাড়া দৈনিক বাংলাদেশ এবং পরবতীর্তে বাংলা পোস্টের বার্মিংহাম সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৯৬ সালে বার্মিংহাম থেকে প্রকাশিত “পাক্ষিক শিরোনাম”ম্যাগাজ্বিনের সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছাড়াও নিয়মিত ‘রাজনৈতিক কলাম’ লিখতেন। পরবতীর্তে তাঁর সম্পাদনায় বার্মিংহাম সমাচার নামক ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয় । অতঃপর বৃটেন,স্পেন বাংলা দেশ বিশেয করে কুলাউড়া ও সিলেট থেকে প্রকাশিত বাংলা কাগজ পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। পরবতীর্তে বাংলা কাগজের সাব এডিটর এবং বর্তমানে বাংলা কাগজের সিনিয়র সাব এডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন জনাব শেবুল চৌধূরী। বাংলা কাগজের মুক্তমত বিভাগে নিয়মত কলাম লিখার পাশাপাশি অনিয়মিত ভাবে ‘”কিছু স্মৃতি কিছু কথা” নামে দেশে বিদেশে সফল ব্যক্তিত্বদের সাক্ষাৎকার মূলক জীবনীভিত্তিক কলাম লিখেন তিনি। এ ছাড়া বর্তমান এই সময়ে বাংলা কাগজের অন লাইন পোর্টালে “অমরাবতি’র গল্প” ও “আমার দৃষ্টিতে বাংলা কাগজ” এ দুটো শিরোনামে নিয়মিত কলাম প্রকাশিত হচ্ছে ।
২০১৫ সাল থেকে বৃটেনের প্রথম অনলাইন টিভি লন্ডন বাংলা টিভি (LBTV) বামিংহাম প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন সহ নিয়মিত টকশো’র আয়োজন করে চলেছেন তিনি। LBTV’তে “কিছু স্মৃতি কিছু কথা “নামে তাঁর এই অনুস্টানটি পাক্ষিক ভাবে প্রচারিত হয়। ‘LBTV’র পাশাপাশি ‘SylhetorTV ‘চালু হলে তিনি সিলেটের টিভির মিডলেন্ডসের দায়িত্ব পালন করছেন এবং তাঁর প্রযোজনা ও উপস্থাপনায় “সিলেটর আড্ডা” নামে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়।
শেবুল চৌধূরী বার্মিংহাম বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ১৯৯২ সাল থেকে তিনি ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সদস্য এবং ১৯৯৪ সালে সাধারণ সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে এসিসটেন্ট সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে অ্যাকটিং সেক্রেটারী হিসেবে কিছু দিন দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৯৭ সালে গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট কালচারাল সেক্রেটারী নির্বাচিত এবং পরবর্তীতে ২০০০ সাল থেকে ২০০২সাল পর্যন্ত একই সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বার্মিংহাম ভিত্তিক বেসকো সাপ্লিমেন্টারি ও হোম ওয়ার্ক সাপোর্ট নামে একটি বাংলা স্কুলের শিক্ষক হিসেবে একটানা পাঁচ বছর স্কুলটি পরিচালনা করেন জনাব শেবুল চৌধূরী।
বঙ্গবন্ধু লেখক ও সাংবাদিক ফোরাম ইউ, কের প্রথমে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং পরবর্তীকালে সহ সভাপতি’র দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে প্রায় এক দশক ধরে সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন সাংবাদিক, লেখক জনাব শেবুল চৌধূরী।
ছাত্র জীবনে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের শ্লোগান ধারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিলেট জেলার যুগ্ম সম্পাদকের সক্রিয় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন শেবুল চৌধূরী। তিনি সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন বলেই অবশেষে ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু পরিযদের সাথে যুক্ত হন।
সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিযদের ব্যানারে বামিংহামে ২০০৪ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন নিয়ে একটি সেমিনার আয়োজন করেন তিনি। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য বঙ্গবন্ধু পরিযদ গঠিত হলে তাঁকে (বার্মিংহামের সাধারণ সম্পাদক ও পাশাপাশি) যুক্তরাজ্য বঙ্গবন্ধু পরিযদের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় ।
একসময় তিনি মিডলেন্ডস যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। প্রথমেই প্রচার সম্পাদক এবং পরবর্তীতে মিডল্যান্ডস যুবলীগের সভাপতি’র দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যুক্তরাজ্য যুবলীগের সহ প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দ্বায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তাঁর সম্পাদনায় “জেগে উঠো বাংলাদেশ ” নামে একটি সংকলন প্রকাশিত হয় তাছাড়া শেবুল চৌধূরীর সম্পাদনায় “ঐতিহ্যের ৩৯বছর” নামে সংগঠনের পক্ষ থেকে (যুক্তরাজ্য যুবলীগ) একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।
শেবুল চৌধূরী মিডল্যান্ডস আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দ্বায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু লেখালেখি, সাংবাদিকতায় সক্রিয় থাকার কারণে তাঁর পক্ষে রাজনীতিতে তেমন সময় দেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাগানবিলাসীদের প্রাণের সংগঠন অমরাবতি’র অন্যতম প্রতিস্টাতা শেবুল চৌধূরী। ২০০৮ সালে এই সংগঠনটি প্রতিস্টিত হয়। বর্তমানে সারা বিশ্বে এর হাজার হাজার সদস্য রয়েছে।
শিক্ষানুরাগী শেবুল চৌধূরী বালাগন্জ এডুকেশন ট্রাষ্ট ,গরীব কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলা একাডেমী,স্বরণ, বিজয় ব্যাজ সহ বিভিন্ন সামাজিক, ও মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত রয়েছেন। এ ছাড়া বালাগন্জ কলেজ, দয়ামীর কলেজ, জাফরাবাদ স্কুল এন্ড কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে কাজ করেছেন।
ভ্রমন পিপাসু হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে স্পেন, ইতালি,পর্তুগাল, ফ্রান্স, মরক্কো, দুবাই, বাহরাইন এবং সৌদি আরব ভ্রমন করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। স্ত্রী আখতারুন চৌধূরী গুলশান । তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার বড় মেয়ে ফারহানা চৌধূরী ঈসিতা বায়ো মেডিকেল সায়েন্স বিযয়ে ডিগ্রী’ সমাপ্ত করে বর্তমানে হসপিটালে কর্মরত ।ছেলে ডেন্টিস্ট দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র (কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি লন্ডন), দ্বিতীয় মেয়ে আফসানা চৌধূরী মিশি এ লেভেল ফাইনাল ইয়ারে এবং ছোট মেয়ে সাব্রিনা চৌধূরী ক্লাশ এইটে কিং এডওর্য়াড গালর্স স্কুলে অধ্যয়নরত।
মোঃ শেবুল চৌধূরী ১৯৬৬ সালে সিলেট বিভাগের শ্রীপুর চা বাগানে জন্ম গ্রহন করেন। (উল্লেখ্যে যে বড় মামা প্রয়াত সাইফুর রহমান চৌধূরী ছিলেন শ্রীপুর চা বাগানের টিলা বাবু)। পিতা প্রয়াত আলহাজ্ব মকদ্দছ আলী চৌধূরী (মকই) এবং মাতা প্রয়াত ছায়রা বেগম চৌধূরী ।পিতৃক নিবাস অবিভক্ত বালাগন্জের বর্তমান ওসমানী নগরের দয়ামীর ইউনিয়নের চিন্তামনি গ্রামে । দয়ামীর চিন্তামণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক (এস,এস,সি), তৎকালীন এম, সি কলেজ (বর্তমান সিলেট সরকারী কলেজ)থেকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচ এস সি), তৎকালীন সিলেট বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ(বর্তমান এম সি কলেজ) থেকে স্নাতক ( বি,এ,),এবং তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)এম এ (ইসলামের ইতিহাস) ও একই সময়ে ঢাকা ল কলেজ থেকে এল,এল, বি ১ম পর্ব সম্পন্ন করে যুক্ত রাজ্যে গমন করেন।
কলেজ জীবন থেকে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন শেবুল চৌধূরী । বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের অঙ্গ সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ সিলেট জেলা ছাত্র লীগের যুগ্ম সম্পাদক ।তৎকালীন (আশি দশক) ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাথে সক্রিয় ছাড়া ও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সিলেট এম সি কলেজ , সিলেট বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার প্রচার ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করেন । লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন জনাব শেবুল চৌধূরী। নিজ হাতে গড়া চিন্তা মনি পল্লী উন্নয়ন সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক, লক্ষীপাশা তিমির নাশক সংস্হার সহ সভাপতি এবং সিলেট টাইগার ক্লাবের ই,সি মেম্বার হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাছাড়া সমসাময়িক সকল আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন তিনি শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের সব সময়।
একটি কঠিন ব্যধির সাথে যুদ্ধ করেও তিনি তাঁর সামাজিক কর্মকাণ্ড, পারিবারিক সম্পৃক্ততা, সাংবাদিকতা ও লেখালেখিতে অবিচল সব সময়। এমন আত্মবিশ্বাসী এবং দৃঢ়চেতা মনোভাবের অধিকারী শেবুল চৌধূরীর জীবন ও কর্মের প্রতি আমার অতল শ্রদ্ধা। শেবুল চৌধূরীর কর্মস্পৃহায় উজ্জীবিত হউক আগামী প্রজন্মের স্বপ্নিল পথচলা ‘অমরাবতি’র পুস্পিত আবাহনের মত। আত্মার আত্মীয় শেবুল চৌধূরীর জন্য নিরন্তর শুভ কামনা।
ডক্টর আনিছুর রহমান আনিছ
সাংবাদিক, আইন গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী
E: anisphd@yahoo.com