এক সপ্তাহে ব্যবধানে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেড়েছে ১৯ কোটি ডলার
ডেস্ক রিপোর্টঃ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের নিট রিজার্ভ বেড়েছে ১৯ কোটি ডলার। একইসঙ্গে গ্রস রিজার্ভ বেড়েছে ১৫ কোটি ডলার। গ্রস রিজার্ভ থেকে ডলার নিট রিজার্ভে নিয়ে যাওয়ায় নিট রিজার্ভ বেশি বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ মাসের শুরুর দিকে আকুর দেনা বাবদ ১৩৭ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এ ধরনের বড় অঙ্কের দেনা পরিশোধের পর সাধারণ রিজার্ভ ১০০ কোটি ডলারের বেশি কমে যায়। এবার তেমনটা হয়নি। আকুর দেনা পরিশোধের আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ বাড়িয়েছে। যে কারণে দেনা পরিশোধের পর নিট রিজার্ভ ১ হাজার ৯৩৮ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল।
গত সপ্তাহে তা বেড়ে ১ হাজার ৯৪৪ কোটি ডলারে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার নিট রিজার্ভ আরও বেড়ে ১ হাজার ৯৫৭ কোটি ডলারে উঠে যায়। গত সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৫২ কোটি ডলার। গত বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৪৬৮ কোটি ডলার। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২২ কোটি ডলার।
চলতি মাসে ইতিমধ্যে এরচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসে গেছে। মাস শেষে এর পরিমাণ আরও বাড়বে। এদিকে বৈদেশিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বৈদেশিক ঋণও ছাড় হতে শুরু করবে আগামী ডিসেম্বর থেকে। ফলে রিজার্ভ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র জানায়, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রিজার্ভেও নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। ২০২২ সালের আগস্টে গ্রস রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। এরপর থেকে রিজার্ভ কমেছে। ওই সরকার গত ৫ই আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময় নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৯ কোটি ডলার, যা তিন মাসের আমদানির চেয়ে কম। গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৯২ কোটি ডলার।
৫ই আগস্ট সরকার পতন হলে ৮ই আগস্ট নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপরই ওই সময়ের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আর যাননি। তিনি প্রকাশ্যেও আসেননি। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
গত ১৪ই আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি দায়িত্ব নিয়েই বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেন। ফলে ব্যাংক থেকে এলসির মাধ্যমে টাকা পাচার অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যায়। খোলাবাজারেও ডলারের চাহিদা কমে আসে। পাচার কমার কারণে দেশের রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত দেশে কোনো বৈদেশিক মুদ্রার নতুন প্রবাহ আসেনি। তবে কেবল রেমিট্যান্স বেড়েছে। এতেই ডলার বাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। পাচার কমে যাওয়ায় বাজারে ডলারের প্রবাহ বেড়েছে। এতে রিজার্ভও বাড়তে শুরু করেছে।