এমপি পদ থেকে টিউলিপের পদত্যাগের দাবিতে কনজারভেটিভ পার্টির প্রচারণা শুরু
ডেস্ক রিপোর্টঃ মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেও রেহাই মিলছে না টিউলিপ সিদ্দিকের। মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেও তার এমপি পদ বহাল আছে। তাই বৃটেনের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি সপ্তাহান্তে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি পদ থেকে তার পদত্যাগ দাবিতে প্রচারণা শুরু করেছে। এ বিষয়ে তারা মাঠে নেমে পড়েছেন। ক্যামডেনে দলটির সিনিয়র নেতা ডেভিড ডগলাস বলেন, সবাই ভেবেছিলেন টিউলিপ একটি চমৎকার ছোট্ট মেয়ে। কিন্তু তিনি আর সেই চমৎকার মেয়ে নেই। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ৩৯০ কোটি পাউন্ড সরিয়ে আনার জন্য অভিযোগ উঠেছে টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। তিনি শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে। এরই ঘটনা পরিক্রমায় এ মাসে ট্রেজারি মিনিস্টার পদ ত্যাগ করেন টিউলিপ। তবে তিনি অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। মিনিস্টারিয়েল স্ট্যান্ডার্ডস বিষয়ক নিরপেক্ষ উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন টিউলিপ। পর্যালোচনা শেষে ম্যাগনাস বলেছেন, উপহার হিসেবে লন্ডনের কিংস ক্রসে ফ্ল্যাট পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন টিউলিপ। এর মধ্যদিয়ে তিনি জনগণকে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ডেইলি মেইল বাংলাদেশে বড় রকমের দুর্নীতির তদন্তের মুখোমুখি টিউলিপ- এমন রিপোর্ট প্রকাশ করে। এর ২৬ দিন পরে ১৪ই জানুয়ারি ট্রেজারি মিনিস্টারের পদ ত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। ট্রেজারি মন্ত্রী হিসেবে তিনি সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার দায়িত্ব ছিল দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ড দেখাশোনা করা। কিন্তু টিউলিপ সিদ্দিক নিজেই এই অভিযোগের মুখে পড়েন। অভিযোগ করা হয়, টিউলিপের ক্ষমতার খুঁটি হলেন স্টারমার। তার ঘনিষ্ঠতা তাকে রক্ষা করতে পারেনি। বাংলাদেশে টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার শাসনতন্ত্রের সঙ্গে তার জড়িত থাকার কারণে লেবার দলের এই নেতাকে কার্যত পরামর্শ দেয়া হয় টিউলিপকে বরখাস্ত করতে। এমন এক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে টিউলিপ পদত্যাগ করেন। তিনি পদত্যাগ করার পর টেলিগ্রাফের রিপোর্টের প্রথম লাইনটিতেই বলা হয়েছে, টিউলিপ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
লন্ডনের কিংস ক্রসে ৭০০,০০০ পাউন্ড মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী প্রশ্নের মুখোমুখি হন, যা তার খালা হাসিনার সাথে সম্পর্কিত একজন ডেভেলপার তাকে উপহার দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর নীতিশাস্ত্র উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস বলেন, এটা ‘দুঃখজনক’ যে মিসেস সিদ্দিক বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার পারিবারিক সম্পর্কের সুনাম ঝুঁকির বিষয়ে ততটা সতর্ক ছিলেন না।শেখ হাসিনার সাথে সম্পর্কিত তার ব্যবহৃত বাড়িগুলির কর এবং তহবিল ব্যবস্থা ‘সুষ্ঠু’ ছিল কিনা তার চূড়ান্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে তার অক্ষমতাকে তিনি দুঃখজনক বলেও বর্ণনা করেছেন।মিসেস সিদ্দিককে কে তাকে ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছে সে সম্পর্কে দ্য মেইল অন সানডেতে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনার পর, স্যার লরি বলেন যে এটি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ যে তাকে রেকর্ড সংশোধন করতে বাধ্য করা হয়েছে।তিনি উপসংহারে পৌঁছেছেন যে যদিও তিনি মন্ত্রীর কোড ভঙ্গ করেননি – এবং তিনি ‘অন্যায্যতার প্রমাণ সনাক্ত করেননি’ – তবুও দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হিসেবে স্যার কেয়ারের ‘তার চলমান দায়িত্ব বিবেচনা করা উচিত’।স্যার লরির জঘন্য পরামর্শ সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী – মিসেস সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত বন্ধু এবং রাজনৈতিক মিত্র – তার উত্তরে তাকে বলেছিলেন যে ‘আপনার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার দরজা খোলা রয়েছে’।তিনি বলেন যে তিনি তার নগর মন্ত্রীর পদত্যাগপত্র ‘দুঃখের সাথে’ গ্রহণ করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ নিয়েছেন।মিসেস সিদ্দিকের আচরণ প্রাক্তন পরিবহন সচিব লুইস হাইয়ের আচরণের থেকে স্পষ্টতই আলাদা, যিনি জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্নের পরপরই পদত্যাগ করেছিলেন। গত রাতে, লেবার পার্টি কোনও মন্তব্য করেনি।
এদিকে বিতর্কিত সাংসদ টিউলিপ লন্ডনের হামস্টারড-কিলবার্ন এম পি পদ থেকে পদত্যাগ করলে তার আসন থেকে কনজারভেটিভ দল থেকে প্রার্থী হতে চান ব্রিটিশ বাংলাদেশি এডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন টিটো। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ রাজনৈতিক পরিবারের সাথে যুক্ত থাকার কারনেই নৈতিকভাবে টিউলিপের ব্রিটিশ এম পি পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ দাবী করে তিনি বলেন এসব ময়লা আবর্জনাদের ব্রিটিশ রাজনীতিতে স্থান হতে পারে না ।
কনজারভেটিভ পার্টির প্রচারণা, ফাইল ছবি।