কবিতা
আগুন চুম্বন
মুতাকাব্বির মাসুদ
আমার ইচ্ছেগুলো
জীবন খোঁজে আহ্লাদী সৈকতে
আমার ইচ্ছেগুলো
স্বপ্ব দেখে নীল সত্ত্বার রক্ত পাথরে
আমার ইচ্ছগুলো
ঘুড়ির মতো সূতো ছিড়ে ওড়ে বেড়ায়
আমার ইচ্ছেগুলো
ভেসে বেড়ায় ঘনসবুজের ঠোঁটে
একসময় ইচ্ছেগুলো
হয়ে গেলো ফড়িংচোষা ধানের ডগা
–
আমার ইচ্ছগুলো
পাল্টে গেলো তোমার বুকে বিবর্ণ ম্লান
আমি একা হাঁটি বনের বিবর্ণ পাতার শিরায়
আমি হেঁটে পৌঁছে গেছি গোরস্তান
বনের রূপালি জোছনায় পিশাচী
হায়েনার ঘর
রক্তনেশায় কুৎসিত নিতম্বে ঢেউ
আমার মাথার উপর
একঘর পিশাচী শকুন
স্বভাবের নিয়মে ডিগবাজি খেলে
উল্লাসী ভঙ্গিতে
আমার ইচ্ছেগুলো
নরকে পোস্টমর্টেম হয়
উদ্ধত সময়ের তামাশায়
ছিন্ন হৃদয় পৌষের পায়রা খোঁজে
দেবদুহিতার ঘরে
–
ছায়া আমার সাথি হলো
ইচ্ছেগুলো মরে গেলো
ঘনসবুজের ঘরে শিমুলের তলে
পাশবিক উল্লাস আর বারুদের ধোঁয়া
কবর কবর গন্ধ
আমার ইচ্ছেগুলো
রক্তচোষার ঘরে বন্দী
মরণ যন্ত্রণায় কাটায় সময়
বেহায়া সময়ের ঠোঁটে
আমি দেখি জনতার ভীড়ে
ভণ্ড নৃপতি চৌকস গলাবাজি
নিষ্ঠার চেতনায় বিষ্ঠার গন্ধ
নিষিদ্ধ গলির পাশে
লোম ওঠা কুকুরের ঘেউঘেউ শব্দে
আমার ইচ্ছেগুলো
বর্তমান খোঁজে ফিরে
নারকসময়ে কষ্ট লাগেনা
আমার ইচ্ছেগুলো
গতকাল মরে গেলো
কষ্ট লাগেনি
আমার ইচ্ছেগুলো
ভবিষ্যতে ওড়তে পারবে না
ভাবতে কষ্ট লাগে
–
তপ্তরোদে কিংবা রাতের
ভয়ঙ্কর ঠোঁটে
অন্ধনিশিতে আমার মগজের নিউরনে
অসংখ্য আনবিকশূন্য এসে জড়ো হয়
রক্তউচ্ছ্বাসের বিদীর্ণ হাহাকারে
বসন্তের রঙকরা পাতা
আগুনচুম্বনে হয় বিবস্ত্র
জীবনের রক্তিমঠোঁট অনাবৃত
নীল সমুদ্রের লবণ স্বাদে
ওড়ে যায় আমার ইচ্ছের ঘুড়ি
সূতো ছিড়ে জীবন ছোঁয়ে
নিমেষে অদৃশ্য পথে
আমার ইচ্ছেগুলো
পড়ে থাকে সাদা কফিনের
নিথর ঠোঁটে
অসংখ্য আগুনপিপড়ার
বিষাক্ত হুলে…
নীল জোছনা
মুতাকাব্বির মাসুদ
কোন এক কুমারীভোরে
মা যে আমার পদ্মজলে
পড়েছিল কাদাচুলে
তোমায় খুঁজি শাপলাদলে
.
কোকিল চোখে রক্তবনে
তোমায় বুকে নেবো টেনে
জলশালিকের ওম যেখানে
কেউ জানবেনা মনে মনে
.
সবুজ বনের লাল কমল
তোমার গালের তিল
আমর মায়ের চোখের সাথে
তোমার চোখের মিল
.
আজকে ভাঙবো তোমার সাথে
দীর্ঘ প্রেমের আড়ি
তোমার চোখের চিড়ল পাতায়
তোলবো আমার বাড়ি
.
জোছনা রাতে তোমার সাথে
ঘুরবো চাঁদের গায়
আগুন প্রেমে সিক্ত হবে
নূপুর দেবো পায়
.
তুমি হাসবে জোছনা মেখে
তুমি চাঁদের হাসি
তোমার চোখে জোছনা হাসবে
তুমি মায়ের হাসি
.
চাঁদের নোলক সোনার নাকে
সোনার ঝিলিক কাব্যচোখে
তুমি নদীর ঢেউ
আমার মতো ভালো তোমায়
বাসবেনা আর কেউ
.
আজকে তোমার চোখের তারায়
আমার প্রেমের সুর
নীল জোছনায় সবুজ শাড়ি
কাটবেনা আর ভোর
.
জোছনা বনের কুসুমঠোঁটে
সবুজ শাড়ির ঘর
তোমার বুকে ঢেউ উঠেছে
লাল পলাশের ঝড়
.
গোস্বা করে যাচ্ছো কোথায়
কৃষ্ণনদীর পাড় ?
কৃষ্ণবাঁশি উঠবে গেয়ে
রাধাবনের ধার
.
তোমার জন্যে মরতে পারি
ভাববো কত আর
তোমার হাসি গলায় ফাঁসি
ঝুলবো নদীর পাড়
.
একটু মুখের হাসির জন্য
দিয়ে দেবো প্রাণ
তুমি হাসলে মা হাসে
আর করোনা মান।
ড.মুতাকাব্বির মাসুদ, অধ্যাপক- তাজপুর ডিগ্রী কলেজ,সিলেট