করোনাভাইরাস: আইবুপ্রোফেন কি কাজ করবে?
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যেসব রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদেরকে আরোগ্য লাভে আইবুপ্রোফেন নামে একটি ওষুধ কাজ করবে কিনা তা নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
লন্ডনের গাইস অ্যান্ড সেন্ট টমাস হসপিটাল এবং কিংস কলেজের বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই ওষুধটি মূলত প্রদাহ বন্ধ করতে এবং ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করলেও এটি শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দূর করতে সক্ষম।
তারা মনে করছেন যে, দাম কম হলেও এই ওষুধটি রোগীদেরকে ভেন্টিলেটর থেকে দূরে রাখবে।
লিবারেট নামে এই পরীক্ষাটিতে অংশ নেয়া রোগীদের মধ্যে অর্ধেক রোগীকে অন্য চিকিৎসা সেবার সাথে সাথে আইবুপ্রোফেনও দেয়া হবে। এই পরীক্ষায় বাজারে প্রচলিত ট্যাবলেটের পরিবর্তে বিশেষ ধরণের ফর্মুলায় তৈরি আইবুপ্রোফেন দেয়া হবে। অনেকেই আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসার জন্য এই ওষুধটি নিয়মিত সেবন করে থাকেন।
এরইমধ্যে প্রাণীর উপর পরিচালিত পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে যে, এই ওষুধটি মারাত্মক শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা উপশমে কাজ করে। আর মারাত্মক শ্বাসকষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রমণের গুরুতর লক্ষণগুলোর একটি।
কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক দলটির সদস্য অধ্যাপক মিতুল মেহতা বলেন, “আমরা যা ভাবছি ওষুধটি যে সেভাবে কাজ করে সেটি প্রমাণ করার জন্য আমাদের একটি পরীক্ষা করা উচিত।”
মহামারির শুরুর দিকে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়েছিল যে, আইবুপ্রোফেন সেবন ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে যাদের মৃদু সংক্রমণ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে।
এই হুঁশিয়ারি আরো বেশি পোক্ত হয় যখন ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান বলেন যে, আইবুপ্রোফেনের মতো প্রদাহরোধী ওষুধ সেবন সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং তিনি রোগীদের এধরণের ওষুধের পরিবর্তে প্যারাসিটামল সেবনের পরামর্শ দেন।
হিউম্যান মেডিসিন বিষয়ক কমিশন এ বিষয়ে তাদের মূল্যায়নে বলে যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দিলে প্যারাসিটামলের মতো এই ওষুধটিও সেবন করা যেতে পারে। এই দুটি ওষুধই শরীরের জ্বর কমিয়ে আনতে এবং ফ্লু-এর উপসর্গ উপশমে সহায়তা করে।
করোনাভাইরাসের মৃদু উপসর্গের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এনএইচএস শুরুতেই প্যারাসিটামল সেবনের পরামর্শ দেয়। কারণ আইবুপ্রোফেনের তুলনায় এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম বলে জানানো হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, যদি কারো পাকস্থলীর সংক্রমণ থাকে তাহলে তার আইবুপ্রোফেন সেবন করা উচিত নয়।