কে হাসবেন এমবাপ্পে না হ্যারি কেইন?
স্পোর্টস ডেস্ক: তারা হয়ে জ্বলেছিলেন রাশিয়া বিশ্বকাপে। এবার কাতার বিশ্বকাপে মহাতারকা হওয়ার পথে ছুটছেন কিলিয়েন এমবাপ্পে। এখনো অবধি তাকে থামানোর পরিকল্পনা করেও দলগুলো সফল হতে পারেনি। এবারের আসরে দুটি ম্যাচে জোড়া গোলের দেখা পেয়েছেন। এরই মধ্যে এমবাপ্পে ৫ গোল করে সবার ওপরে রয়েছেন। স্কিলের সঙ্গে গতি এবং ম্যাচে সেটার সফল প্রয়োগ—এমন ফুটবলার খুব কমই আছে। এমবাপ্পে পরিপূর্ণ একটা প্যাকেজ। ক্লাব কিংবা জাতীয় দল সব জায়গাই তিনি দুর্বার। শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় সেমিফাইনালে ওঠার যুদ্ধে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স-ইংল্যান্ড। এই ম্যাচ নিয়ে যতটা আলোচনা হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি কথা হচ্ছে এমবাপ্পেকে নিয়ে। আর হবেই না বা কেন, বয়স ২৪ ছোঁয়ার আগেই তিনি যা করেছেন সেটি অবিশ্বাস্য। রাশিয়া বিশ্বকাপে ৪ গোল করেছিলেন। ফ্রান্সের বিশ্বজয়ের বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। কাতারেও একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। পল পগবা-করিম বেনজেমাদের অনুপস্থিতি বুঝতেই দিচ্ছেন না এমবাপ্পে। বল পায়ে এমবাপ্পে ছুটলে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের পেছন পেছন ছোটা ছাড়া উপায় থাকে না! মনে হয় এমবাপ্পে উসাইন বোল্টের মতো ট্রাক অ্যান্ড ফিল্ডে দৌড়াচ্ছেন।
ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে ওঠার পথে বড় অন্তরায় মনে করা হচ্ছে এমবাপ্পেকে। ইংল্যান্ড কি পারবে তার গতিরোধ করতে? কেউ কেউ মনে করছেন ইংলিশ ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকারে আটকে যেতে পারে এমবাপ্পে। আসলেও কি তাই? কথাটা কানে গিয়েছে ফরাসি মিডফিল্ডার ইউসুফ ফোফানোর। তাই তো তিনি সংবাদ সম্মেলনে ওয়াকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানিয়েছেন, ‘ও যদি কিলিয়েন (এমবাপ্পে) আটকাতে পারে তাহলে ভালো। কিন্তু লিগ ওয়ানের ১৯টি দল এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দলগুলো এই সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে। মাঠেই আসল সত্যিটা বের হয়ে আসবে। কিলিয়েনের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’এরপরই ইংলিশ মিডিয়াকে কটাক্ষ করে ফরাসি মিডফিল্ডার বলেছেন, ‘আপনাদের নিকট দুঃখ প্রকাশ করছি, কিলিয়েন খবরের কাগজ পড়ে না। আপনারা যা লেখেন তা সে পড়ে না, ওর মনোযোগ শুধুই খেলায়। দল এবং নিজেকে কি করতে হবে ও সেদিকেই মনোনিবেশ করে।’ ইউসুফ ফোফানোর কথা নিশ্চিতভাবেই পৌঁছে গিয়েছে ওয়াকারের কানে। এখন দেখার বিষয়, তিনি কীভাবে কড়া পাহারায় রাখেন এমবাপ্পেকে!
ফরাসিদের যেমন এককভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এমবাপ্পে ইংলিশদের বেলায় ব্যাপারটি কিন্তু সেরকম নয়। দলে একাধিক পারফরমার রয়েছে। গেল বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট বিজয়ী হ্যারি কেইন কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোতে তিনটি অ্যাসিস্ট করেছিলেন। কিন্তু নিজে গোল পাচ্ছিলেন না। অবশেষে শেষ ষোলোয় সেনেগালের বিরুদ্ধে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম গোলের দেখা পান হ্যারি কেইন। এই গোল তাকে ওয়েইন রুনির আরো কাছে নিয়ে গিয়েছে। ইংল্যান্ডের হয়ে কেইনের গোলসংখ্যা এরই মধ্যে ৫২টি হয়ে গিয়েছে। আর একটি গোল করলে রুনির পাশে বসবেন। দুটি হলে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হবেন হ্যারি কেইন। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১০টি গোল রয়েছে গ্যারি লিনেকারের। ১৯৮৬ ও ১৯৯০ দুই বিশ্বকাপে ১২ ম্যাচে তিনি এই কীর্তি গড়েছিলেন। রাশিয়া বিশ্বকাপে ৬ গোল করা হ্যারি কেইনের গোলসংখ্যা ৭। লিনেকারকে ছাপিয়ে যেতে আরো ৪ গোল দরকার ইংলিশ অধিনায়কের।
রেকর্ডের চেয়ে হ্যারি কেইন আপাতত ফ্রান্স ম্যাচকেই পাখির চোখ করেছেন। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর আর কখনো বিশ্বকাপ জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। হ্যারি কেইনই ইংলিশদের ভরসা দিতে পারেন, যেমনটা দিয়েছিলেন রাশিয়ায়। তিনি কি পারবেন ফ্রান্স-বাধা টপকে ইংলিশদের ফাইনালে পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিতে?