কোহিনূর বিষয়ে ভারত সরকারের উল্টো সুর!
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
দূর্লভ হীরা কোহিনূর চুরি কিংবা কেড়ে নেয়া হয়নি, স্বেচ্ছায় ব্রিটেনকে উপহার দেয়া হয়েছিল। তাই ব্রিটিশদের কাছ থেকে ওই হীরা ফেরত চাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠেনা—সর্বোচ্চ আদালতে এমন বিবৃতি দেয়ার চব্বিশ ঘন্টা না পেরোতেই সুর বদলালো ভারত সরকার। জনমতের চাপে সরকার এখন বলছে, কোহিনূর ফেরত আনার দাবি ছেড়ে দেয়া হচ্ছে না। বরং রত্নটি ফেরত আনতে সম্ভাভ্য সবকিছুই করবে সরকার। বুধবার সিএনএন-এর এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস ফ্রন্ট নামের একটি সংগঠনের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে কোহিনূর ফেরত আনার জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং আরো কী প্রচেষ্টা চালানো হবে তা ৬ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে আদালতে জানাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছিলো।
গত সোমবার সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে ভারত সরকারের সলিসিটর জেনারেল রণজিৎ কুমার ওই বিষয়ে সরকারের মনোভাবের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অভিমত, কোহিনূর লুট হয়নি, চুরি করেও নিয়ে যাওয়া হয়নি। পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ১৮৪৯ সালে কোহিনূর উপহার দিয়েছিলেন। অতএব ফেরত চাওয়ার দাবি অর্থহীন।
সলিসিটর জেনারেলের এই অভিমত জানার সঙ্গে সঙ্গেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর তাঁকে সতর্ক করে বলেছিলেন, আরও ভেবেচিন্তে তিনি যেন সরকারের অভিমত জানান। কারণ, একবার চূড়ান্ত মতামত জানিয়ে দিলে এসব অমূল্য প্রত্নসামগ্রী দেশে ফেরানোর আর কোনো উপায় থাকবে না।
প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্যের পরেই সরকার নড়েচড়ে বসে। ততক্ষণে দেশে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। সংঘ পরিবার হতবাক। দলেও নানাজনে এই প্রশ্ন তুলতে থাকেন। কোন ভিত্তিতে এই অধিকার ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্নে সরকার বিব্রত হতে থাকে। ফলে পরের দিনই সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, কোহিনূর, টিপু সুলতানের তরবারি বা আংটি ফেরত আনার দাবি সরকার ছাড়ছে না। সবদিক খতিয়ে দেখে ও বিচার করেই সরকার সর্বোচ্চ আদালতকে চূড়ান্ত অভিমত জানাবে। অবশ্য এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে চূড়ান্ত মনোভাব জানাতে সরকারকে ছয় সপ্তাহের সময় বেধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।