‘ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা আরও ৫০ হাজার মানুষের লাশ ফেলতে প্রস্তুত ছিল’

Spread the love

শেখ হাসিনার বিচারসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ হয়।

এ সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে। আমরা চাই, পুরো বিশ্ব দেখুক, সে কত বড় একজন খুনি ছিল। কীভাবে এ দেশের মানুষকে শুধুমাত্র ক্ষমতায় বসে থাকার জন্য খুন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘সেদিন ঢাকা শহরের প্রতিটি প্রান্ত থেকে যদি লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় না নামতো, এই সংখ্যাটা যদি হাজারে হতো, খুনি হাসিনা বিভিন্ন ফোর্সকে বাধ্য করতো গুলি চালাতে।’

সারজিস আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এখন আর শিশু নেই। বাংলাদেশের ওই গ্রামের মানুষ এখন যা বোঝাবেন তাই বুঝবে, এই দিন আর নেই।’

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিবিপ্লবের কথা বলা হচ্ছে—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে সারজিস বলেন, ‘কেউ যদি প্রতিবিপ্লবের কথা ভুলেও মুখে নেয়, তার মানে বাংলাদেশের পুরো ছাত্র-জনতার বিপক্ষে ঘোষণা দিচ্ছে। এই ঘোষণা যারা দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়। তাদের উদ্দেশ্য এ দেশের ছাত্র-জনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, বরং দেশের মানুষকে শোষণ করার সঙ্গে সম্পৃক্ত। দেশের বাইরে কিছু অপশক্তির হাতে আংশিক বা সম্পূর্ণ বিক্রি করে দেওয়া যে তাদের স্বার্থ, সেটি আমরা বুঝে যাই। কেউ যদি পুনরায় এই সাহসটুকু করে, প্রতিবিপ্লবের চেষ্টাটুকু করে; ৫ আগস্ট দেখেছেন, এর পরে যা হবে, আপনাদের অস্তিত্বও থাকবে না।’

সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে যে অভ্যুত্থান হয়েছে, সেটি নিয়ে বেশ কটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘অতীতের অনেক ঘটনা, যেগুলো রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে ঘটেছে, সেগুলোকে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে ভারতীয় গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, গতবার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে এক ধরনের হিস্যা দিয়ে বাংলাদেশে সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। যেটি জয়ের (সজীব ওয়াজেদ জয়) বক্তব্যে স্পষ্ট হয়। গণবিমুখ হয়ে তারা মোদিমুখী হয়েছে। ক্ষমতায় আসার জন্য তারা মোদির ওপর নির্ভর করছে। জয় মোদিকে অনুরোধ করছেন, ৯০ দিনের মধ্যে যেন নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন—জনগণ থেকে তারা কতটা বিচ্ছিন্ন। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার এখন দেশে-বিদেশে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।’

‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যখন মানুষের কাছে আবেদন না করে মোদির কাছে আবেদন করে, সেখানে আমাদের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই, আমেরিকায় বসে দেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আপনাদের কোনো ধরনের অধিকার নেই। আপনাদের নৌকা অনেক আগেই ফুটো হয়ে গেছে। নৌকার পাটাতন নেই, সুতরাং বৈঠা গুঁজে লাভ নেই। মোদির বৈঠা দিয়ে বাংলাদেশে নৌকা চালাবেন সেই আশা আপনারা আর করবেন না,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আগে বিচার নিশ্চিত হবে। স্বীকার করতে হবে তারা ভুল করেছে। গণক্ষমার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক শুদ্ধাচারে যদি মানুষ তাদের গ্রহণ করে, সেটি বিবেচনা সাপেক্ষ। এটি মানুষের বিষয়।’

সারজিস বলেন, ‘সবাইকে বিচারের আওতায় আসতে হবে। এই ১৬ বছরে মানুষের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তার হিসাব দিতে হবে। তারপর জনগণ নির্ধারণ করবে সে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে নাকি পারবে না।’


Spread the love

Leave a Reply