গাজায় স্কুলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১০০

Spread the love

গাজায় নিরীহ মানুষের ওপর অব্যাহত আছে ইসরাইলের নৃশংসতা। তারা কোনো কিছু মানছে না। সর্বশেষ একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১০০ জনকে হত্যা করেছে। গাজা সিটির দিরাজ এলাকায় আল তাবিন স্কুলটি ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এ নিয়ে ৭ই অক্টোবর থেকে ইসরাইলের নৃশংসতায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার ছুঁই ছুঁই করছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এই সংখ্যা কমপক্ষে ৩৯,৬৯৯। আহতের সংখ্যা ৯১,৭২২। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয়, ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের এজেন্সি ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে- দক্ষিণের খান ইউনুস থেকে ৬০ গাজার থেকে ৭০ হাজার মানুষকে জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। এসব মানুষকে তারা এরই মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ আল মাওয়াসি এলাকার দিকে ঠেলে দিয়েছে।ইরানের রাজধানী তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েকে হত্যা এবং লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হিজবুল্লাহর একজন কমান্ডারকে হত্যার পর মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনাকর অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় ইসরাইলকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম খাতে আরও ৩৫০ কোটি ডলার দেবে ওয়াশিংটন। এর কড়া সমালোচনা করেছেন ইসরাইলি লেখক আকিভা এলডার। তিনি ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেটজে লেখেন।

ফিলিস্তিনি বেসামরিক হতাহতের তুলনায় ইসরাইলি হতাহতের তুলনা করে তিনি বলেছেন ইসরাইল দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করছে। আল জাজিরাকে তিনি বলেছেন, যখন ইসরাইলে বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করা হয় তখন সেটাকে স্বাভাবিকভাবে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু যখন ফিলিস্তিনে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করা হয় তাকে দেখা হয় সামষ্টিক ক্ষতি অথবা দুর্ঘটনাক্রমে নিহত হিসেবে। এরই মধ্যে আল তাবিন স্কুলে বোমা হামলা করা হয়েছে। এলডার আরও বলেন, ইসরাইলের মূলধারার মিডিয়া দেশটির জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। কিন্তু তারা মাঝে মাঝেই ফিলিস্তিনি ভিকটিমদের প্রতি অমানবিক আচরণ করে। ওদিকে বার বার শান্তিচুক্তি করতে গিয়েও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পিছিয়ে আসার সমালোচনা করেছেন হামাসের হাতে এক জিম্মির পিতা হাগাই অ্যাংগ্রেস্ট। তিনি বলেছেন- প্রতিবারই যখন চুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়, ততবারই নেতানিয়াহু অপারেশন চালান। এর মধ্য দিয়ে তিনি সরাসরি চুক্তি করাকে ব্যর্থ করে দেন। কাতার ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর হাসান বারারি বলেন, আল তাবিন স্কুলে হামলায় কমপক্ষে ১০০ মানুষ হত্যার মধ্য দিয়ে ইসরাইলি সেনারা আবারও গণহত্যা চালাচ্ছে। একে ইসরাইলের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং শান্তিচুক্তির প্রেক্ষাপটে দেখা যেতে পারে।

তিনি বলেন, শুক্রবার ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেছেন, তিনি দোহা বা কায়রো যাচ্ছেন। তার যাওয়া উচিত নয়। এ সপ্তাহে মধ্যস্থতাকারী কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তাতে তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানিয়েছে। এতে ইসরাইল ও নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বারারি বলেন, কিন্তু নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চান না। প্রতিটি সুযোগ এলেই তিনি তাকে উড়িয়ে দেন। প্রতিবারই তিনি আল তাবিন স্কুলের মতো হামলা চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। হামাস অধিক পরিমাণ ক্ষুব্ধ হয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এটা হলো নেতানিয়াহুর গেম। হাসান বারারি বলেন, প্রতিবার যখনই আমরা যুদ্ধবিরতির আশা করে ততবারই ইসরাইলিরা কোনো না কোনো রকম নৃশংসতা চালায়। তাতে যুদ্ধবিরতি নিয়ে সংলাপ নষ্ট হয়ে যায়। ওদিকে গাজা সিটিতে স্কুলে হামলা চালানোর নিন্দা জানিয়েছে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।


Spread the love

Leave a Reply