গাফফার চৌধুরীর কুরুচী মন্তব্য : সিলেটিরা “লাঙ্গল টু লন্ডন” ( ভিডিও সহ )

Spread the love

20111228122043বাংলা সংলাপ রিপোর্ট:সিলেটী কমিউনিটি “লাঙ্গল টু লন্ডন” কলামিষ্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরীর বেফাঁস এই মন্তব্যে লন্ডনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে । সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে ইসলাম ও হজ্ব নিয়ে কটুক্তিমূলক মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনায় পড়েছিলেন গাফফার চৌধুরী । কিছু দিন যেতে না যেতেই চ্যানেল আই ইউরোপে তাকে নিয়ে আয়োজিত জন্ম দিনের লাইভ অনুষ্ঠানে এবার সিলেটি কমিউনিটি ,সাবেক মেয়র লুতফুর রহমান ও কমিউনিটি নেতা সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করলেন তিনি। গত ১২ ডিসেম্বর আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গাফফার চৌধুরী বলেন সিলেটি কমিউনিটি লাংগল টু লন্ডন সংস্কৃতির ধারক বাহক । এই অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিতরা ব্রিটেনে অনেক কিছু করেছে । তিনি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল এস এর মালিককে অর্ধশিক্ষিত বলেও মন্তব্য করেন । সাবেক মেয়র লুতফুর রহমান সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন , লতিফুর রহমান যখন লুতফুর না লতিফুর রহমান ,লুতফুর রহমান যখন এখানে মেয়র এবং দৃশ্যতঃ সে টাওয়ার হ্যামলেটসকে একটা ইসলামিক রিপাবলিক তৈরী করে রেখেছে ।জামাতিদের সহায়তায় প্রগতিশীল রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে তখন একটা আর্টিকোল লিখেছিলাম ।আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমি এটা জনমতে দিব কি না ।ইসহাক কাজল সাহেব এখানে আছেন বলেছিলেন ,না দিবেন না , বুঝতে পাড়ছেন , লন্ডনের কোন বাংলা কাগজ আমার সেই লেখা ছাপতে রাজি হয়নি । ( তারা ভয় পায় ! উপস্থাপক ) ভয় পায় না ,লতিফুর রহমানের (তার ভাষায় সাবেক মেয়র লুতফুর রহমানের বিকৃত নাম ) টাকার অজস্র বিস্তার  ,সেই বিস্তারের কাছে সবাই মাথা নত করে আছে । … সুতরাং এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে । এখন লিখতে পারি । লুতফুর রহমানের ব্যাপের লিখেছি ঢাকায় ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছে । আমি বলেছি যে,লুতফুর রহমানের অবস্থান বাংগালি সমাজের জন্য ক্ষতিকর ।সে তিনটি ট্রাম কার্ড ইউজ করেছে ,একটা হলো সিলেটী, একটা বাংগালি , একটা ইসলাম । তিনটি ট্রাম কার্ড এক সাথে পলিটিক্সে ব্যবহারের নজির খুবই কম । যাক ,তার পতন হয়েছে । এইভাবে অনেক ব্যাপার আছে … । ল্যাঙ্গুয়েজ প্রবলেম । আমার এক বন্ধু সিলেটী ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য এখানে অন্দোলন শুরু করেছিল । কি লিখবো যে ,সিলেটী ভাষাটা হচ্ছে একটা উপভাষা ,ভাষা নয় । এভাবে বরিশালে যদি বলি এটা একটা উপভাষা ,চাটগাইয়া ভাষা ,এটাও একটা উপভাষা ।এভাবে সাধু ভাষা মানে বর্তমানে যেটা কথ্য ভাষা ।এটা আমাদের শিখতে হবে । বাণাড শ আইরিশ কবি ছিলেন ,তিনি আইরিশ ভাষায় লিখে নোবেল পাননি ,তাকে ইংরেজি ভাষায় লিখতে হয়েছে । এভাবে সিলেটী ,নোয়াখালি, বরিশালি যে যেখানে আছেন তাদেরকে তাদের আঞ্চলিক ভাষার পাশাপাশি শুদ্ধ ভাষা শিখতে হবে ,সেটা না করলে আবার রুট থাকে না । শিকড় থাকে না কিন্তু সেই সংগে পরিশীলিত ভাষাতে আসতে হবে এবং তার বক্তব্য বা লেখাতে লিখতে হবে । এগুলো বলা এখানে মুশকিল …।

গাফফার চৌধুরী সিলেটিদের অনেক প্রশংসা্ও করেন । প্রশংসার এক পর্যায়ে বলেন ,আমার চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতা হল আমি যখন বাংলার ডাক বের করি ,ব্রিকলেইনে অনেক বাধা এসেছে বিএনপি কর্মীদের কাছ থেকে ।তবে সাহায্য করেছে টাকা দিয়েছে সিলেটীরা । আমার মিটিং গার্ড দিয়াছে যারা সিতাব মিয়া থেকে শুরু করে সবাই সিলেটি ।আমি সাহায্য চেয়ে চিঠি লিখি তখন আমার মনে হয় প্রায় ৭০ জন ডাক্তার নন সিলেটী এবং এভাউট হান্ড্রেড ইংঞ্জিনিয়ার এবং অন্যন্য পেশার এদেরকে চিঠি পাঠিয়েছিলাম ,এরা কেউ জবাব দেয়নি ।এরা কিন্তু সবাই নন সিলেটি এবং শিক্ষিত , এদেশে থাকে । সব গুলো বার্মিঙ্ঘাম ,লিডস , শেফিল্ড সব জায়গা থেকে যারা উত্তর দিয়েছে বেশিরভাগই গ্রোসারি শপের মালিক এবং সিলেটী লোক এবং তাদের পয়সায় এটা হয়েছে ।এবং এই যে বংঙ্গবন্ধুর উপর ছবি করেছি ,বিশ হাজার পাউন্ড গেছে ,এর মধ্যে আমার সামনে সুলতান ভাই আছেন উনাদের আওয়ামীলীগের কন্ট্রিভিউট হচ্ছে আড়াই হাজার পাউন্ড বাকিটা সব সিলেটীদের টাকা । এদের ভিতরে সেক্টরিয়াম গ্রুপ আছে ,যারা বলে আমরা সিলেটি ,বাংগালি না । কিন্তু মেক্সিমাম সিলেটি নিজেদের বাংগালি মনে করেন । এবং সিলেট এক সময় বাংলাদেশেরই অংশ ছিল এবং এই সিলেটিরাই বর্হিবিশ্বে । আমি যেখানে গিয়েছি আলাস্কায় গিয়ে দেখি বাংলাদেশের দোকান খুলে বসে আছে । পান বিক্রি করে খবরের কাগজ বিক্রি করে এই যে এটাতো শিক্ষিত বাংগালিরা করে নাই । এরাতো এই আপনার সিলেটের যারা বলে যে লাংগল টু লন্ডন তারাই এই সংস্কৃতির ধারক বাহক অভিবাবক । এই কমিউনিটি সম্পর্কে লিখতে পারলে ভাল হতো । কিন্তু সব সময় সাহস হয়না এই জন্য তারা ভুল অর্থ করে এমনভাবে লোক ক্ষেপাবে যে দেশ থেকে বিতারিত এখানে থাকতে পারবে না ।

আমার তো মনে আছে যে আমার এক বন্ধু মারা গেছেন । ড শফিউল্লাহ । তার ইচ্ছা ছিল কবর না হয়ে যেন চিতা হয় ,চিতাই হবে । তার ছেলে মেয়েরা ধরলো ,এই আমাদের আগের প্রেস মিনিস্টার তার জামাই । তারা আমাকে ধরলো ,আপনি যে মাদ্রাসায় পরেছেন আমার শশুরের জানাজাটা পড়িয়ে দিন (আমি আবার মাদ্রাসায় পড়েছি )। আমি বললাম উনিতো কবরে যাবেন না ,তা না যাউক ,আমরা মুসলমান , অন্তত জানাজা টা হউক , তো আমি জানাজা পড়িয়ে দিলাম । দেওয়ার পরতো তাকে গোলাডার্স গ্রিনের চিতায় নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হলো । একেবারে ধারা ইয়েতে … এই যে আবু তাহের সিংকাপনি চৌধুরী কি না একটা আছে সর্বত্র সে তখন আসলে জামাতের লোক কিন্তু তা এখন স্বীকার করে না সে । সে পোসটার লিখে দিয়েছে , আমি বেদাতি কাজ করেছি ,মুরতাদ হয়ে গেছি ,আমার কল্লা নেয়া দরকার । চিতায় যাকে পুড়িয়েছি তাকে জানাজা পড়িয়েছি বলে লিপলেট বের করে দিল । ব্রিক্লেইন আসা আমার বন্ধ হওয়া উপক্রম ।…হাহাহ। এই জন্য কমিউনিটির জন্য সবাই বলে লিখেন , লিখবো ।যে ক দিন আছি এখন এখানকার পলিটিক্সের সংগে বিশেষ করে আজকে ইস্ট লন্ডন যেভাবে জামাতিরা দখল করেছে ,ইট ইজ এ আমার জন্য ফরজে কেফায়া টু ফাইট দেম । যে কদিন বেঁচে আছি নিশ্চয় লিখবো ।

গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের নিন্দা:

বাংলাদেশের মহান বিজয়ের ৪৪তম বার্ষিকী পালন করেছে গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল ইউকে। মঙ্গলবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারপার্সন নূরুল ইসলাম মাহবুব।

সভার শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত ও যারা যুদ্ধে অংশনিয়েছিলেন সেই সমস্থ মুক্তিযোদ্ধাদেও প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং সম্প্রতি গাফ্ফার চৌধুরী কর্তৃক সিলেদ বিদ্বেষী বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান, ব্যারিস্টার মাসুদ চৌধুরী, কেএম আবু তাহের চৌধুরী, সাইদুর রহমান রেন, আবুল কালাম, হাজী ফারুক মিয়া, হাজী কলা মিয়া, আব্দুল ওয়াহিদসহ অনেকে।
বিজয় দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদান সকলের জানা। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে প্রবাসীরা আন্দোলন সংগ্রাম করে বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নিজেদের রোজগারের টাকা পয়সা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। যুক্তরাজ্যে এসব প্রবাসীদের দেশের ঠিকানা সকলের জানা। একটা অঞ্চলের মানুষ হওয়াতে তাদেরকে হেয় বা কটাক্ষ করতে উঠেপড়ে লাগার এক মাত্র কারণ সিলেট বিদ্বেষী মনোভাব।

বক্তারা আরো বলেন গাফফার চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্টানে তিনি সিলেট অঞ্চলের মানুষকে নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর শব্দ উচ্চারণ করেন। তাও আবার একটা লাইভ টেলিভিশনের অনুষ্টানে। গাফফার চৌধুরী বা তার কিছু অন্ধ সমর্থক তাকে বাংলা সাহিত্য বিশারদ মনে করেন ! কিন্তু কোনো ব্যক্তিকে পরিচিত করানোর ক্ষেত্রে অর্ধ শিক্ষিত, অশিক্ষিত কোনো রুচিশীল শব্দ কি না অথবা এসব শব্দের প্রয়োগ পসিটিভ অর্থে ব্যাবহৃত হয় কি না সেটা কি গাফফার চৌধুরী জানেন না ? না জেনে থাকলে তিনি সবচেয়ে বড় অজ্ঞ আর জেনেশুনে বলে থাকলে তিনি সবচেয়ে বড় নিমকহারাম ও সিলেট বিদ্ধেষী। তার আচরণ থেকে আবারো প্রমানিত হলো ‘নিজের দুর্বলতা ঢাকতে অন্যের অনুগ্রহপ্রাপ্ত মানুষই পরবর্তী সময়ে নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে ‘। আর এই সিলেট বিদ্ধেষী ব্যক্তিকে শুধু সিলেট অঞ্চলের মানুষ নয় অন্য যে কোনো রুচিশীল মানুষেরই ঘৃনা করা উচিত। বক্তারা তার এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতবাদ জানান।

video link here : https://youtu.be/RZLd3qJuzTk


Spread the love

Leave a Reply