গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
সিলেট অফিসঃ আশপাশের চতুর্দিক পানিতে থই থই করছে। ঘরের ভেতর-বাইরে পানি। ঘরের উনুনটিও পানিতে তলিয়ে গেছে। রান্নাবান্না নেই। নেই শুকনো খাবারও। বর্তমানে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায়। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় অনেক মানুষ ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে। এতে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। উপজেলাবাসী এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি অনেক বছর। আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হু হু করে বাড়ছে বানের জল।
এমতাবস্থায় বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় সেনাবাহিনী নামানো হচ্ছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এক মাসের মাথায় ফের বন্যা দেখা দেওয়ায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানি সারি-পিয়াইন ও ডাউকি নদী দিয়ে এলাকায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এতে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পূর্ব জাফলং, মধ্য জাফলং, পশ্চিম জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, লেঙ্গুড়া, ডৌবাড়ি, ফতেহপুর, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও ও সদর ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে সব কটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় অনেকে ভোগান্তিতে পড়েছে।
আসামপাড়া এলাকার পঞ্চার্ধ্বো আব্দুল হক বলেন, ‘এমন ভয়াবহ বন্যা আগে দেখিনি। খুব দ্রুত গতিতে পানি বাড়ছে। পানি বাড়তে থাকায় ঘরের সমস্ত জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উনুনও জ্বলছে না ঘরে। পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব ভয়ে দিন কাটছে। এ ছাড়া গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি।’
সানকিভাঙা এলাকার সাইদুল ও আয়নুল হক বলেন, ‘চারদিকে শুধু বন্যার পানি। কোথাও বের হওয়া যাচ্ছে না। ঘরে কোমরপানি। রান্নাবান্না সব বন্ধ। এমন বন্যা গত দুই যুগেও দেখিনি।’
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাটের ইউএনও মো. তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘গোয়াইনঘাটে বন্যা তীব্র আকার ধারণ করছে। সবাইকে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করার অনুরোধ করছি। ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ পৌঁছে যাবে। ইতিমধ্যে অনেক বানভাসি মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে, কার্যক্রম চলমান থাকবে।’