গ্রীসের সাথে বিরোধের জেরে মেসিডোনিয়াকে নাম বদলে ফেলতে হলো
মেসিডোনিয়ার নাম নিয়ে প্রতিবেশী গ্রীসের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধের অবশেষে মীমাংসা হয়েছে এক ঐতিহাসিক চুক্তির মাধ্যমে।
এই চুক্তির অধীনে এখন থেকে মেসিডোনিয়ার নতুন নাম হবে ‘রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া’। নাম পরিবর্তনের ফলে এখন ‘নর্থ মেসিডোনিয়া’ ইউরোপীয় ইউনিয়নে এবং নেটো জোটে যোগ দিতে পারবে।
এতদিন পর্যন্ত গ্রীসের আপত্তির কারণে তারা ইইউ বা নেটোর সদস্য হতে পারছিল না।
সাবেক ইয়োগোশ্লাভিয়া ভেঙ্গে যখন মেসিডোনিয়া আলাদা রাষ্ট্র হয়, তখন থেকেই নাম নিয়ে তাদের সঙ্গে গ্রীসের তীব্র বিরোধ চলছে।
গ্রীস এই কারণে মেসিডোনিয়া নামের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল যে তাদের উত্তরাঞ্চলীয় একটি রাজ্যের নামও মেসিডোনিয়া। একই নামের কারণে সেখানে সীমানা নিয়ে বিরোধ তৈরি হতে পারে বলে তাদের আশংকা ছিল।
আর এ কারণেই গ্রীস ইউরোপীয় ইউনিয়নে এবং নেটো জোটে মেসিডোনিয়াকে সদস্য করার বিরুদ্ধে আপত্তি জানায়।
মেসিডোনিয়ানরা যখন তাদের রাজধানী স্কোপিয়ের বিমানবন্দরটি প্রাচীন গ্রীক বীর আলেক্সান্ডারের নামে রাখে, সেটি দুদেশের মধ্যে আরও তিক্ততা তৈরি করে।
কারণ খ্রীষ্টপূর্ব চতুর্থ শতকে ম্যাসিডোনিয়ার আলেক্সান্ডার এবং তার বাবা দ্বিতীয় ফিলিপ গ্রীস থেকে শুরু করে আরও বহু দূরের রাজ্য শাসন করতেন।
গ্রীকরা মনে করে, মেসিডোনিয়া হচ্ছে হেলেনিক ঐতিহ্যের অংশ। এর যে প্রাচীন রাজধানী আইগাই, সেটি আধুনিক গ্রীসের ভার্জিনার কাছাকাছি। অন্যদিকে আলেক্সান্ডারের জন্মস্থান হচ্ছে পেলায়।
বিরোধী মীমাংসায় দু দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে একথাটা স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যে উত্তর মেসিডোনিয়ার সঙ্গে প্রাচীন গ্রীক সভ্যতার কোন সস্পর্ক নেই এবং তাদের ভাষা আসলে স্লাভ ভাষাগোষ্ঠীর অংশ, এর সঙ্গে গ্রীক ঐতিহ্যের কোন সম্পর্ক নেই।
দুদেশের মধ্যে করা চুক্তি অনুযায়ী মেসিডোনিয়ার নাম এখন হবে ‘রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া’।
দেশটির ভাষা হবে মেসিডোনিয়ান এবং নাগরিকদেরও ডাকা হবে মেসিডোনিয়ান বলে।
গ্রীস তো বটেই, বিশ্বের আরও প্রায় ১৪০টি দেশে এই নামেই মেসিডোনিয়াকে স্বীকৃতি দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।