চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিতির দায়ে বাংলাদেশে ছয় ডাক্তার বরখাস্ত
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃবাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছে এমন একটি হাসপাতালের মোট ছয়জন ডাক্তারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এদের মধ্যে দুজন সরাসরি কোভিড-নাইনটিন আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। অন্যরা এই হাসপাতালে কাজে যোগ দেয়ার তারিখ থেকে অনুপস্থিত রয়েছেন। একজন ডাক্তার পদত্যাগ করেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান এই ছয় জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার খবর নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল হচ্ছে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত প্রধান হাসপাতাল। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের মূলত এই হাসপাতালেই চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
বাংলাদেশে অনেক ডাক্তার করোনাভাইরাসের লক্ষণযুক্ত বা করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে চাইছেন না বলে গত কিছুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছে।
অন্যদিকে চিকিৎসকরা পাল্টা অভিযোগ করছিলেন যে করোনভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য যে ধরণের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী বা পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) দরকার, সেগুলো তাদের নেই।
এই বিতর্কের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে বেশ কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যেসব চিকিৎসক দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সেদিন এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “যারা করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় জীবন বাজি রেখে কাজ করছে , তাদের সরকার পুরস্কৃত করবে। কিন্তু যারা পালিয়ে আছেন তারা এই প্রণোদনা পাবেন না। ভবিষ্যতে তারা ডাক্তারি করতে পারবেন কিনা, সে চিন্তাও করতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির পর আজ কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালের ছয় ডাক্তারের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হলো।
এর আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই ছয় জনের নাম সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এরা হচ্ছেনঃ
•ডাঃ হীরম্ব চন্দ্র রায়, জুনিয়র কনসালট্যান্ট,
•ডাঃ ফারহানা হাসনাত, মেডিকেল অফিসার,
•ডাঃ শারমিন হোসেন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট,
•ডাঃ উর্মি পারভিন, মেডিকেল অফিসার
•ডাঃ কাওসারউল্লাহ, মেডিকেল অফিসার
•ডাঃ মুহাম্মদ ফজলুল হক, আরপি
যে ছয় জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল বিবিসি বাংলার তরফ থেকে। এদের একজন ডাঃ শারমিন হোসেন দাবি করেন, তার নাম ভুল করে এই তালিকায় গেছে।