চীনে মারা গেছেন ৪২,০০০ মানুষ!
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে চীন কর্তৃপক্ষ ভুল তথ্য দিয়েছে বলে মনে করেন সেখানকার উহান নগরীর বাসিন্দারা। তাদের মতে, উহানে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে মারা গেছেন কমপক্ষে ৪২,০০০ মানুষ। কিন্তু সরকার বলছে, হুবেই প্রদেশে এই মৃতের সংখ্যা ৩৩০০। উহান এই প্রদেশেরই একটি শহর। ডিসেম্বর থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল ওই উহান শহর। ক্রমশ তা গ্রাস করেছে পুরো পৃথিবীকে। তারপর থেকে সারা পৃথিবী লকডাউন হয়ে আছে। কার্যত সব দেশ অচল হয়ে আছে।
যে ভয়াবহ রূপ নিয়ে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে চীনের উহানে তাতে প্রতিদিনই মৃত্যুর খবর আসতে থাকে। বলা হয়, হাসপাতালে জায়গা নেই। মৃতদেহ সৎকারের মানুষ নেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। এ কথারই যেন প্রতিধ্বনি শোনা গেল উহানের স্থানীয়দের কণ্ঠে। তারা বললেন, প্রতিদিন শোকবিধ্বস্ত পরিবারের কাছে, প্রতি ২৪ ঘন্টায় ৩৫০০ মানুষের ছাইভষ্ম ফেরত দেয়া হয়েছে। এই হারে যদি ছাইভষ্ম ফেরত দেয়া হয় তাহলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ১২ দিনের কঠিন সময়ে কমপক্ষে ৪২,০০০ মানুষের ছাইভষ্ম ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।
উচ্যাংয়ের হ্যানকু এবং হানিয়াংয়ের পরিবারগুলোকে বলে দেয়া হয়েছে, তারা তাদের প্রিয় স্বজনের ছাইভষ্ম আগামী ৫ই এপ্রিলের আগে ফেরত পাবেন না। এ তারিখটি হলো কিং মিং উৎসবের দিন। এদিন পূর্বপুরুষদের সমাধিক্ষেত্রে সমবেত হন স্থানীয়রা। স্থানীয় মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, মাত্র দু’দিনে ৫০০০ ব্যক্তির ছাইভষ্মের দুটি শিপমেন্ট গ্রহণ করেছে হ্যাংকু। উহান শহরে দু’মাসের লকডাউন শিথিল করার পর এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যেসব মানুষের কাছে স্বাস্থ্য বিষয়ক গ্রিন সনদ আছে তাদেরকেই শুধু ওই প্রদেশ থেকে ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর চলাচল করতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। গ্রিন সনদ মানে হলো করোনা ভাইরাস নেগেটিভ। ২৩ শে জানুয়ারির পর এটাই ওই প্রদেশের মানুষকে ওই অঞ্চলের বাইরে যাওয়ার অনুমতি। তবে উহান শহরে ভ্রমণ বিষয়ক কঠোরতা আগামী ৮ই এপ্রিল পর্যন্ত বহাল থাকবে।
মারা যাওয়ার সরকারি তথ্যের বিষয়ে উহানের অধিবাসী ঝাং বলেন, এটা সঠিক বলা যাবে না। কারণ, সারাক্ষণই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য চিতা জ¦লেছে। তাহলে কি করে সরকারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী অতো কম সংখ্যক মানুষ মারা গেছেন? মাও নামে আরেকজন অধিবাসী বলেছেন, হয়তো সরকার আস্তে আস্তে প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করবে। যাতে মানুষ আস্তে আস্তে বাস্তবতা বুঝতে পারে। হুবেই প্রদেশ কর্তৃপক্ষের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছেন, অনেক মানুষ তাদের বাড়িতেই মারা গেছেন। সরকারিভাবে তাদের পরীক্ষা করা হয় নি। তাদের সংখ্যা গণনাও করা হয় নি।