জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর মুক্তির দাবিতে লন্ডনে মানববন্ধন

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগাম মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের নিন্দা এবং তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন স্টান্ড ফর বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সিলেট মহানগরীর সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম শাহীনের সভাপতিত্বে এবং স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সেক্রেটারি মো: তরিকুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক আইনজীবি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইউকে এবং ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক তুখোড় ছাত্র নেতা ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং পিচ ফর বাংলাদেশের জয়েন্ট সেক্রেটারী মোঃ মাহিন খান, বিশিষ্ট আইনজীবি ও সাবেক ছাত্রনেতা ব্যারিস্টার বদরে আলম দিদার, সাবেক ছাত্রনেতা সলিসিটর মুনশাদ আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা বেলাল রাশীদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা বলেনঃ বাংলাদেশ সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে স্বাধীনতার তিনটি মূলনীতি আছে এবং সেই তিনটি মূল নীতিতে কেন্দ্র করেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়ে ছিল। সেই তিনটি মুলনীতি হলঃ সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচার। এই যদি হয় স্বাধীনতার লক্ষ্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, তাহলে আজকে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দল ও ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দকে কেন জেলে পুরে রাখা হচ্ছে? আমি সরকারকে আবারো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বাতাসের গতি সব সময় একদিকেই বয়ে যায় না। আপনারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন আপনাদের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। আপনাদের ভিসা ক্যান্সেল হচ্ছে! আপনাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে! লক্ষণ দেখে বুঝে নিন। যেই জামায়াতে ইসলামী গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে সেই জামায়াত এই দেশের শত্রু নয়। এই দেশ বিনির্মাণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ মে ২০২১ থেকে জুলুমের শিকার হয়ে কারাবন্দি আছেন জামায়াতের সাবেক এমপি চট্টগ্রাম এলাকার গণমানুষের অবিসংবাদিত নেতা শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ, তার সুচিকৎসা দরকার। যদি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার স্বাধীনতার লক্ষ্য হয়ে থাকে এবং এই আওয়ামী লীগ সরকার সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সত্যিই আন্তরিক হয়ে থাকে, সেটা যদি প্রতারণা না হয়ে থাকে তাহলে একজন শাহজাহান চৌধুরীর মতো বয়োবৃদ্ধ জননন্দিত নেতাকে মুক্তি দিন সাথে সাথে সাম্প্রতিক কালে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদসহ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেনঃ সরকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে রাজনৈতিকভাব ঘায়েল করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধপরাধের নামে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে একটি মহলকে খুশি করার জন্য। দেশকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে জেলে ঢুকিয়ে জুলুম করার মাধ্যমে সরকার দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাচ্ছে। আমরা আজকের এই মানববন্ধনের মাধ্যমে স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষায় জামায়াত-শিবির অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করবে ইনশাল্লাহ। আমরা অবিলম্বে সরকারকে দেশের সকল বেআইনি কর্মকান্ড বন্ধের আহবান জানাচ্ছি। সেই সাথে স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই ঘৃন্য অপকর্মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং সকল রাজবন্দীদেরকে মুক্তির ব্যবস্থা করার মাধ্যমে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহবান জানাই।

অনুষ্ঠানে স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশের সেক্রেটারি মো: তরিকুল ইসলাম বলেনঃ অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকার আমার ভাই আব্দুল্লাহ আল মাহমুদসহ অন্যান্য শিবির নেতাদের গ্রেফতার করে দেশকে জংগী রাস্ট্র বানাতে চায় তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য।কিন্তু তাদের আশা কখনোই সফল হবে না। তিনি অবিলম্বে তাদের মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।

অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক ছাত্র নেতা ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং মানবাধিকার সংগঠন পিচ ফর বাংলাদেশের জয়েন্ট সেক্রেটারী মোঃ মাহিন খান বলেনঃ জননেতা জনাব শাহজাহান চৌধুরী হলেন বীর চট্টলার সিংহ ও বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে রাজনীতি শূন্য পরিবেশ তৈরী করতে চায়। একটি আধিপত্যবাদী বিদেশী অপশক্তির ইশারায় মধ্যরাতের মাফিয়া সরকার বাংলাদেশেকে তাদের তাবেদার রাষ্ট্রে পরিনত করতে বেছে বেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয় নেতাদেরকে অন্যায়, অবিচার ও জেল-জুলুমের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেনঃ স্টান্ড ফর বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত আজকের এই মানব বন্ধন থেকে আমরা সরকারের এহেন আচরনের জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে দেশে সুস্থ ও স্বাভাবিক গনতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অনতি বিলম্বে বর্তমান মধ্য রাতের অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করে সুস্থ নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের জনগনের গনতন্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।

অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির ভাইস প্রেসিডেন্ট খাইরুল ইসলাম, কালচারাল সেক্রেটারি রাইহান চৌধুরী, মিডিয়া সেকেটারী মোঃ আমিনুল ইসলাম, পাবলিসিটি সেক্রেটারি মোঃ ইকবাল হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুর রহমান পারভেজ, সাবেক জামাত কর্মী আহমেদ আলী, ইউবিএইচআরের শাহান বিন নিজাম, নিবাচা লন্ডন মহানগর সেক্রেটারি মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর প্রমুখ।


Spread the love

Leave a Reply