জিকা ভাইরাস : আক্রান্ত হতে পারেন ত্রিশ-চল্লিশ লাখ আমেরিকান
বাংলা সংলাপ ডেস্ক
চলতি বছরে ত্রিশ থেকে চল্লিশ লাখ আমেরিকান জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ এইচ ও)। সংস্থাটির প্রধান ডা. মার্গারেট চ্যান বৃহস্পতিবার বলেন, জিকা ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এটি এখন আর সতর্কতামূলক পর্যায়ে নেই, মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করতে সোমবার এক বৈঠকে মিলিত হবার কথাও জানান তিনি। বিবিসি
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা আশা প্রকাশ করেছেন, বছরের শেষ নাগাদ আক্রান্তদের ওপর ভাইরাসের ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করতে পারবেন। সর্বশেষ খবরে বলা হয়, এ পর্যন্ত আমেরিকার ২৩টি আলাদা দেশ ও রাজ্যে জিকার উপস্থিতি নিশ্চত হওয়া গেছে।
জিকা ভাইরোসের প্রথম অস্তিত্ব ধরা পড়ে উগান্ডায়, ১৯৪৭ সালে। তবে সম্প্রতি ব্রাজিলে এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ শিশুকে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৪৯ শিশু। ক্যারিবীয় অঞ্চল ও লাতিন আমেরিকার ১৪টি দেশে গর্ভবতী নারীদের ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ক্যারিবিয়ান ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম জিকা ভাইরাস। গর্ভবতী মায়েরা মশাবাহিত এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে শিশু ছোট ও অপরিপূর্ণ মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মায়, ফলে মাথা খুব ছোট হয়। যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা ইবোলা মোকাবিলা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দ্রুত জিকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের নিয়ে এ বিষয়ে কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
মশাবাহিত জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তবে গবেষকরা বলছেন, তারা একটি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছেন। আগামী দুই বছরের মধ্যে তারা এটি পরীক্ষা করতে পারবেন। তবে ব্যবহারের উপযোগী করে এটি বাজারে ছাড়তে ১০ বছর সময় লেগে যেতে পারে।
জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে প্রকাশিত নিবন্ধে বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল লুসি ও লরেন্স গস্টিন বলেন, এর আগে ইবোলার বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় কয়েক হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে সংস্থাটি যদি আগের মতোই আচরণ করে, তাহলে এটি ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
দুই চিকিৎসাবিজ্ঞানী বলেন, জরুরি ভিত্তিতে একটি কমিটি গঠন করতে হবে, যাতে আন্তর্জাতিক গণস্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থার পরিচালককে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে পারে এই ‘জরুরি কমিটি’। আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ, সহায়তা ও গবেষণাসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে এই কমিটি।