ডুবছে সিলেট,পানিবন্দি ৫০ লাখ মানুষ, ভেসে গেছে গবাধিপশু, সিলেটের মন্ত্রী-এমপিরা চুপ, সরকারের নেই আগ্রহ
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ ডুবছে সিলেট , হু হু করে বাড়ছে পানি, আগামী দুদিন বৃষ্টি চলবে তার মানে পানি আরও বাড়তে থাকবে । গ্রামাঞ্চলে ভেসে গেছে লাখ লাখ গবাধিপশু। পানিবন্দি প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন । কারোর খবর নিতে পারছেন না স্বজনরা, বিদ্যুৎ নেই, খাদ্য সংকট , আশ্রয়কেন্দে ঠাঁই নেই,বাড়ছে বিপদ, বাড়ছে উৎকণ্ঠা , কোন কোন আশ্রয়কেন্দ্র পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে । কিন্তু মনে হচ্ছে সরকারের কোন আগ্রহ নেই, নিষ্ঠুর মন্ত্রী ,এমপি ও প্রশাসন, এখনও অবধি সিলেটে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়নি। কয়েক শত সেনা দিয়ে ৫০ লাখ মানুষকে উদ্ধার করা ,বা তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া কখনও সম্ভব না। সিলেটের পররাষ্ট্র মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী, প্রবাসী মন্ত্রীরা আজ নিরব । তারা ঢাকায় বসে আরাম করছেন ,আর সিলেটের জনগন বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে। এটা খুবই নিষ্ঠুরতা । সরকারকে সিলেটবাসীর প্রতি সদয় হওয়া উচিত, জরুরী ভিত্তিতে উদ্ধার তৎপরতা বাড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রী অল্পসংখ্যক সহায়তা ঘোষণা করেছেন। এটা কোন অবস্থায় যতেষ্ট না। আরও সহায়তা বাড়াতে হবে। জনবল বাড়িয়ে উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করতে হবে । সিলেটকে অতি দ্রুত জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
বিদ্যুৎ না থাকায় ভুতুড়ে পরিস্থিতি। বাজার-হাটে পানি উঠায় দেখা দিয়েছে খাদ্যপণ্যের সংকট। অনেকে না খেয়ে সময় পার করছেন। একদিন আগেই বিমান চলাচল বন্ধ হয়েছিল। রেলস্টেশন ডুবে যাওয়ায় শনিবার থেকে বন্ধ সরাসরি ট্রেন চলাচল। সড়ক যোগাযোগ টিকে থাকায় হাজার হাজার মানুষ সিলেট ছেড়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলায় সমানতালে বানের পানি প্রবেশ করায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে মানুষ। উদ্ধারের অপেক্ষায় থাকা মানুষের অপেক্ষা বাড়ছে।
তবে পর্যাপ্ত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ মানুষের তুলনায় জলযানের অভাব দেখা দিয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দুর্গত মানুষকে উদ্ধারে। টানা বৃষ্টির কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় বিঘ্ন ঘটছে। এ পর্যন্ত সিলেট জেলার প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা গাঁদাগাঁদি করে সেখানে অবস্থান করছেন। অনেকে নিজেদের গবাদিপশুও সঙ্গে নিয়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। বিপর্যয়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে সিলেট। এ ধরনের পরিস্থিতি সিলেটজুড়ে কেবল সাহায্যের আবেদন। দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সভা করেছে বিভাগীয় দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা। ছিলেন বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান জানিয়েছেন, সিলেটে সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। তার সঙ্গে গতকাল সকাল থেকে নতুন করে বিমান ও নৌবাহিনীর কয়েকটি টিম উদ্ধারে নেমেছে। একই সঙ্গে বিজিবি’র সদস্যরাও পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে।
প্রথমেই বন্যায় আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বলা হচ্ছে; সিলেটের ৮০ ভাগ এলাকাই পানির নিচে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা গোয়াইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুরে। সিলেট সদরেও লাখো মানুষ পানিবন্দি। নেটওয়ার্ক নেই এসব এলাকায়। বিদ্যুৎও নেই। ফলে কে কোথায় আটকে আছেন কিংবা আশ্রয় নিয়েছেন বলা মুশকিল। যারা নিরাপদে আছেন তারা স্বজনদের খোঁজ পাচ্ছেন না। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা দুর্গম এলাকায় গিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। তিন দিন ধরে অভুক্ত মানুষ। জীবন বাঁচানোর জন্য ডাঙ্গার খোঁজে রয়েছেন তারা। সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, সিলেটে শুক্রবার রাতে কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি কম ছিল। কিন্তু শনিবার ভোররাত থেকে তীব্র বজ্রবৃষ্টি শুরু হয়। বিকাল পর্যন্ত নতুন করে এক থেকে দেড় ফুট পানি বেড়েছে। এতে নতুন করে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। অনেক মানুষ পানিবন্দি। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে।
বিশেষ করে খাদ্য গুদামগুলোও পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আমরা ওই খাদ্য গুদাম রক্ষায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে। এদিকে- ব্ল্যাকআউট হয়ে গেছে সিলেট। গতকাল দুপুর থেকে গোটা সিলেটে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর আগে কুমারগাঁওয়ের ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুৎ লাইন রক্ষায় সিলেটের মেয়র, সেনাবাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা কাজ করেছিলেন। কিন্তু সকাল থেকে তুমুল বর্ষণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, পানি উঠে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এখন গোটা সিলেটেই বিপর্যয়ের মুখে। বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনে পানি ঢুকেছে। আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া সিলেট নগরীতেও আরও আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। দক্ষিণ সুরমার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পাশে কদমতলী এলাকায় বুকসমান পানি।
গতকাল সকাল থেকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, বিশ্বনাথের একাংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সিলেটের সঙ্গে সড়কপথে কেবল যোগাযোগ রয়েছে। আকাশপথ ও রেলপথ বন্ধ। পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে দক্ষিণ সুরমা কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। রাতে পানি বাড়লে বাস যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পণ্য সংকটের কারণে খাবারও সংকট। তিন দিন ধরে অভুক্ত মানুষ। জেলায় প্রায় ৫ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না। আশ্রয়কেন্দ্রেও তীব্র খাবার সংকট। পানিও মিলছে না। সিলেটের প্রশাসনের হাতে থাকা শুকনো খাবারও সংকট চলছে। এ কারণে গতকাল বিকালে মৌলভীবাজার থেকে অতিরিক্ত শুকনো খাবার নিয়ে আসা হচ্ছে। ঢাকা থেকে খাবার নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- সেনা, নৌ, বিমান, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার কার্যক্রমের পাশাপাশি কিছু কিছু এলাকায় শুকনো খাবার দিচ্ছেন। যেসব মানুষ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন কিংবা নিজ বাড়িতেই আটকা পড়েছেন তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এদিকে- প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যায় আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে বিমান বাহিনী হেলিকপ্টার ব্যবহার করবে। কিন্তু অনেক স্থানে দেখা গেছে হেলিকপ্টার অবতরণেরও স্থান নেই। ফলে নৌ-পথেই উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। গতকাল দিনভর সিলেট ও সুনামগঞ্জের কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া, সিলেটের বাইরে থেকে তিনটি জাহাজ এনে সিলেট ও সুনামগঞ্জে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হবে। সেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সিলেট নগর ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ সিলেট ছাড়ছেন মানুষ। যে যেভাবে পারছেন সিলেট থেকে চলে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আকাশপথ বন্ধ। গতকাল দুপুরে রেল যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপর দূরপাল্লার বাস হচ্ছে ভরসা। সিলেট ছাড়তে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। ভয়াবহ বন্যায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সিলেট। নগরীতেই আটকা পড়েছেন লাখো মানুষ।
স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। জরুরি সেবাও চালু করা যাচ্ছে না। খাবার, পানি সংকট চরমে। অর্ধশতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হচ্ছে না মানুষের। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। অভুক্ত অবস্থায় করছেন দিন যাপন। টাকা দিয়েও মিলছে না খাদ্যপণ্য। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে পানি হানা দিচ্ছে। এই অবস্থায় গতকাল ভোররাত থেকে নতুন করে বিপর্যয় দেখা দেয়। ভারী বর্ষণ। সেই সঙ্গে বজ্রপাত। পানিবন্দি মানুষ। ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। এই অবস্থায় দিনভর চলে ভারী বৃষ্টি। একবারের জন্যও বৃষ্টি কমেনি। এ কারণে নগরেই এক ফুট পানি বেড়ে যায়। নতুন নতুন এলাকাও প্লাবিত হয়। বিশেষ করে সুরমা নদীর তীরবর্তী ১৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা পানিবন্দি। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোমর পর্যন্ত পানি। ৫টি ছাত্রাবাসে আটকা পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে ছাত্রীরা পড়েছেন বিপর্যয়ে। হলে পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, খাবারও নেই। এ কারণে ভোর হতেই বৃষ্টির মধ্যে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। বিজিবি সদস্যরা এই উদ্ধার কাজে অংশ নেন। হাজারো শিক্ষার্থী বিকালের মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়েন। অনেকেই এক কাপড়ে হল ছেড়ে চলে যান।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীরা পানিবন্দি। হাসপাতাল চত্বরে পানি উঠেছে। দুটি হলে থাকা শিক্ষার্থীরাও পড়েন খাবার সংকটে। এ কারণে তারাও দুপুরের দিকে হল থেকে বেরিয়ে যান। বিকালের মধ্যে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ভিড় করেন বাস টার্মিনাল এলাকায়। সরকারি, বেসরকারি অনেক চাকরিজীবীও সিলেট ছাড়তে বাস টার্মিনালে ভিড় করেন। বিকাল তখন ৩টা। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা। পাশেই হচ্ছে রেলওয়ে স্টেশন। রাস্তায় বুক সমান পানি। রেল লাইনে পানি উঠে গেছে। স্টেশন ম্যানেজার নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রেল লাইনে পানি উঠে যাওয়ার কারণে দুপুর থেকে রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও থেকে রেল ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে যাবে। এদিকে- রেল বন্ধের ঘোষণায় হাজার হাজার মানুষ বৃষ্টির মধ্যে অবস্থান নেন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। সেখান থেকে যে যেভাবে পারছেন সিলেট ছাড়ছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দু’দিন ধরে তারা হলে অভুক্ত অবস্থায় রয়েছেন। ক্যাম্পাসে কোমর পানি। ক্যাম্পাস থেকে উদ্ধার হওয়ার পর তারা সিলেট ছাড়ছেন।
গভীর রাত পর্যন্ত বাস টার্মিনাল এলাকায় ছিল লোকজনের ভিড় আর ভিড়। এখনো সিলেটের সঙ্গে বাস যোগাযোগ স্বাভাবিক থাকায় কিছুটা স্বস্তি। তবে যেকোনো সময় এই যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর কারণ দুটো। একটি হচ্ছে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে সিলেট অংশে অনেক স্থানে পানি উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অন্যটি হচ্ছে জ্বালানি সংকট। সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বন্যাকবলিত হওয়ার কারণে সিএনজি ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বেশি টাকাও দিয়ে জ্বালানি মিলছে না। সিলেট শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল কমে এসেছে। ৯০ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল বন্ধ। অর্ধেক দোকানে পানি ঢুকেছে। বিশেষ করে পাইকারি আড়ত কালীঘাটে পানি। ব্যবসায়ীরা গতকাল পর্যন্তু ঢলে বেঁচে যাওয়া পণ্য সরাতে ব্যস্ত ছিলেন। এছাড়া সুবাহানীঘাট কাঁচাবাজার, কাজিরবাজারের মাছ ও চালের বাজারে সব দোকান খোলা সম্ভব হয়নি। সিলেটের কালীঘাটের চাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ জানিয়েছেন, আমরা এখন চাল বিক্রিতে নেই। বন্যা থেকে চাল বাঁচাতে ব্যস্ত। ইতিমধ্যে চাল, পিয়াজসহ নানা পণ্য পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। পানি থাকার কারণে কালীঘাটে এসে পণ্যবাহী ট্রাক এসে ঢুকতে পারছে না। আজ-কালের মধ্যে বিকল্প চিন্তা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে সংকটের কারণে ত্রাণের পণ্যও ক্রয় করতে পাওয়া যাচ্ছে না। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, সরকারিভাবে অনেক চাল সিলেট ও সুনামগঞ্জের গুদামে রয়েছে। এখন এই গুদাম রক্ষায় সেনাবাহিনী কাজ করছে। পাশাপাশি তারা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। এদিকে সকাল হতেই সিলেট নগরীতে বন্যা চরম আকার ধারণ করে। নগরীর জিন্দাবাজার, বারুতথানা, আদালতপাড়া, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। জরুরি সেবা স্বাভাবিক রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, সিলেটের কুমারগাঁওয়ের ৩৩ হাজার বিদ্যুৎ লাইনে সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। দুপুরের দিকে পানি বেড়ে যাওয়ায় গোটা সিলেটের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। সন্ধ্যায় কিছু কিছু এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে।
তবে এখনো সিলেটের ৮০ ভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। এদিকে সিলেটে বন্যাদুর্গতদের জন্য অর্ধশতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হচ্ছে না মানুষের। জেলার ৫ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রও মানুষে ভর্তি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অভুক্ত অবস্থায় রয়েছেন মানুষ। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধারের পাশাপাশি কিছু শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। সিলেট সদরের জালালাবাদ, টুকেরবাজার, হাটখোলা, উমাইরগাঁওসহ কয়েকটি এলাকার রাস্তায় বুক সমান পানি। অনেক মানুষ আটকে আছে। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, নেটওয়ার্কও নেই। এজন্য কে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বলা যাচ্ছে না।