ঢাকায় অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় নাসির উদ্দিন গ্রেপ্তার

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আজ দুপুরে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
এর আগে সকালে আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনকে আসামি করে সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন পরীমনি।

মামলায় আসামি হিসেবে ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও আবাসন ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে আরও চারজনের নাম অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৯ই জুন (বুধবারে) রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয়। গতকাল প্রথম ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেন আলোচিত এ অভিনেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান তিনি। পরে রাতে সংবাদ সম্মেলনে ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন তিনি।
এসময় তিনি বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। সংবাদ সম্মেলনে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন পরীমনি। তার অভিযোগ ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বিনোদন ও সংস্কৃতি) নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে। ঢাকা বোট ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাসির একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তিনি উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি। অভিযোগের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নাসির ইউ মাহমুদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এজাহারে যা বলেছেন পরীমনি
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় মামলা দায়ের করেছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। মামলার এজাহারে তিনি বলেন, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি (৩০), অমি (৪০) ও বনিসহ (২০) দুটি গাড়িযোগে তারা উত্তরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পথে অমি বলে বেড়িবাঁধস্থ ঢাকা বোট ক্লাবে তার দুই মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো তারা সবাই রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করান। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। অমি ক্লাবের ভেতরে গিয়ে বলে এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর তোমরা নামলে নামতে পারো। তখন আমার ছোটবোন বনি প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে বোট ক্লাবে প্রবেশ করে ও বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করি।
টয়লেট হতে বের হতেই এক নম্বর বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদেরকে ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ এক নম্বর আসামি মদ্যপানের জন্য জোর করেন। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে এক নম্বর আসামি জোর করে আমার মুখে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই।
এজাহারে বলা হয়েছে, এক নম্বর আসামি (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে এবং আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে উত্তেজিত হয়ে টেবিলে থাকা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুঁড়ে মারেন। তখন কস্টিউম ডিজাইনার জিমি নাসির মাহমুদকে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে নীলাফোলা জখম করে।
পরীমনি বলেন, আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে ফোন দিতে গেলে আমার ফোনটি টান মেরে ফেলে দেওয়া হয়। এসময় দুই নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতনামা চার জন এক নম্বর আসামিকে ঘটনা ঘটাতে সহযোগিতা করে। আমি অজ্ঞাতনামা আসামিদের দেখলে শনাক্ত করতে পারবো। দুই নম্বর আসামি অমি পরিকল্পিতভাবে আমাকে বর্তমান বাসা থেকে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে যায়। সে অজ্ঞাতনামা চার জন আসামি ও নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে এবং জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি আমার সঙ্গীদের সহায়তায় ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পাই। রাত আনুমানিক তিনটার সময় আমি আমার গাড়িযোগে প্রায় অচেতন অবস্থায় অপর সঙ্গীদের সহায়তায় বাসায় ফিরে আসি। পরীমণি অভিযোগ করেন, আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে বিভিন্নপ্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। পরিবার, শিল্পী সমিতি ও অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো বলে উল্লেখ করেন তিনি।


Spread the love

Leave a Reply