তারেক রহমান গোস্তাকি মাফ করবেন…

Spread the love

suheb bhaiরেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী সোয়েব:
গত ২ জুলাই বৃহস্পতিবার ছিল লন্ডনের সাংবাদিকদের সাথে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এর মতবিনিময় এবং ইফতার মাহফিল। দাওয়াত পেয়েছিলাম আগেই, যাব কিনা ভাবছিলাম, কারন যেখানে যাই সেখানেই সমস্যা দেখা দেয় ! অতএব না যাওয়াই ভালো, কিন্তু বাঁধ সাধলেন বিএনপির যুক্তরাজ্য কমিটির নেতৃবৃন্দ- তাদের কথা যেতেই হবে। নির্ধারিত সময়ের ৪০ মিনিট পর পৌঁছেছিলাম ইফতার পার্টিতে। পূর্ব লন্ডনের সোনারগা রেষ্টুরেন্টে গিয়ে দেখি প্রচুর সাংবাদিক, এক সময় লন্ডনে ছিলেন হাতে গোনা সাংবাদিক, এখন সাংবাদিকদের সংখ্যা পত্রিকার সংখ্যার চেয়েও বেশি।
যাই হোক, ইফতার মাহফিলে তারেক রহমান সাহেব তার স্বভাব সুলব ভঙ্গিতে বক্তব্য রাখলেন। বক্তৃতা শেষে শুরু হলো প্রশ্ন উত্তর পর্ব। কখনো হেসে খেলে উড়িয়ে দিচ্ছেন, কখনো সিরিয়াসলী উত্তর দিচ্ছেন, তবে মনের মধ্যে চাপা একটা ক্ষোভ ও অভিমান কাজ করছিল তারেক রহমানের। শেষ পর্যন্ত আমার পালা, আমি প্রশ্ন করতে চাইনি, কারন আমি বসা ছিলাম ষ্টেইজে। আমি ভেবেছিলাম ধন্যবাদ দিয়ে বসে পড়বো, কারন ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসছিল। অডিয়েন্স থেকে বলা হচ্ছিল দোয়া করে শেষ করার জন্য। কিন্তু বলতে হলো, বলতে গিয়ে আমি ইটিভির প্রসংঙ্গ টেনে আনলাম, আমার বক্তব্য ছিল, আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির মধ্যে পার্থক্য কি? আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে দৈনিক আমার দেশ বন্ধ করে চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে একুশে টিভি বন্ধ করে। এই ছিল আমার বক্তব্য, আমি জানিনা তারেক রহমান সাহেব আমার বক্তব্যকে কিভাবে নিয়েছেন, ইফতারের পর চা আড্ডা হলো, জুনিয়র সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন, অনেকক্ষন আড্ডা দিয়েছেন তারেক রহমান, আমি আর কথ্ াবলিনি। ঘটনার এখানেই শেষ হওয়ার কথা , কিন্তু সেটি ঘটেনি। ৬ জুলাই যুক্তরাজ্য বিএনপির ইফতার মাহফিল হলো, সেখানে তারেক রহমান তার আনুষ্টানিক বক্তব্যে আমার ঐ বক্তব্যের প্রসংঙ্গ টেনে আনলেন, ব্যাক্তিগতভাবে আক্রমনও করলেন আমাকে! বললেন মোটা-সোটা মানুষ হলেই মাথা ক্লিন থাকেনা, ইটিভি নিয়ে আমি যা বলেছি তা বললেন, এবং আমি বিএনপির ইফতারে দাড়িয়ে বিএনপির নেতাকে প্রশ্ন করেছি, আওয়ামীলীগের ইফতারে দাড়িয়ে আমার হিম্মতে নাকি কুলাবে না প্রশ্ন করার- ইত্যাদি। যেদিন তিনি বক্তব্য রাখলেন সেদিন রাতে চ্যানেল আই লন্ডন এর অফিসে বসে কি কাজ করছি, হঠাৎ রিপোর্টার আব্দুর রশীদের ফোন। রশীদ ব্যাক্তিগত ভাবে আমার ভাগ্নে সম্পর্কে, স্ত্রীর পক্ষের আতœীয়। ,বললো মামা তারেক রহমান সাহেব আপনার ব্যপারে বক্তব্য রেখেছেন। জিজ্ঞাস করি ফুটেজ আছে, উত্তরে রশীদ বললো আছে। সে অফিসে আসলো , আমি তারেক রহমানের সাহেবের বক্তব্য শুনলাম। নিউজ এডিটর মুনজের চৌধুরীকে ফোন করলাম, মুনজের বললো- বস, এসব নিয়ে আর মাথা ঘামানোর দরকার নেই। তারেক রহমান সাহেব হয়তো কষ্ট পেয়েছেন আপনার বক্তব্যে, বাদ দেন। আমি মুনজেরের কথায় বাদই দিলাম, কারন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের আমি বুঝিনা। আমাকে অনেকেই সহজ সরল বোকা মানুষ বলেই জানে। আমি অবশ্য সব কিছু সহজভাবে বুঝি, ভেতরে কোনো জটিলতা নেই। জেনে-বুঝে বা পরিকল্পনা করো কারো কোনো ক্ষতি এ পর্যন্ত আমি করিনি, বাকী জীবনে পারলে কারো লাভ করে যেতে চাই,ক্ষতি নয়। কিন্তু তারেক জিয়া সাহেবের এ বক্তব্য কিছুতেই আমি মন থেকে সরাতে পারছিনা। একবার ভাবলাম, তারেক জিয়ার মুখোমুখি হবো, পরক্ষনেই চিন্তা লাভ কি?
আজ সিদ্ধান্ত নিলাম লিখবো,সাংবাদিকতার মানুষ আমি,লিখলে আত্বার প্রশান্তি পাই।
২.
প্রিয় পাঠক,আমি আওয়ামীলীগও করিনা বিএনপিরও করিনা। দলদাস সাংবাদিক সাজতে পারিনি কোন আমলেই। তারেক রহমান সাহেবের ইফতার মাহফিলের নিউজ আওয়ামী গৃহপালিত দু একজন সাংবাদিক লিখেছেন জামাত এবং বিএনপি পন্থী কিছু সাংবাদিক নাকি গিয়েছিলেন, যারা লিখেছেন তারা মিথ্যা লিখেছেন। সব সাংবাদিক গিয়েছিলেন সেখানে। যারা লিখেছেন শুধু তারা যাননি,সেই দু-তিনজন আমন্ত্রনও পাননি,সঙ্গত বা অসঙ্গত কারনে।
সে যাক, তারেক রহমান সাহেবের চরিত্রের সাথে লন্ডন মেয়র বরিস জনসনের হয়তো কিছুটা মিল আছে। বরিস যা বুঝেন তাই বলেন যা বুঝেন না, তার ধার ধারেন না। তারেক রহমান সাহেবের ক্ষেত্রেও আমার কেন জানি মনে হয়েছে এ রকমেরই একজন মানুষ তিনি। জানিনা আমি হয়তো ভূল হতে পারি। আমার নিজের চরিত্র ও অনেকটা তাই, এক সময় আমার স্ত্রী আমাকে অনেক জায়গায় নিয়ে যেতে ভয় পেত। ২০০৬ সালের কথা, রয়েল লন্ডন কলেজ অব ফিজিসিয়ানের এক প্রোগ্রামে গেলাম স্ত্রীর সাথে, বাংলাদেশী এক ডাক্তার, মাগরীবের নামাজ পড়ে এসে আমাকে জিজ্ঞাস করলেন আপনি নামাজ পড়েছেন বললাম জি-না, বললেন নামাজ পড়বেন,নানা তফসীর ব্যাখ্যা করে নামাজের ফজিলত আর কিয়ামতের ভয়ভীতি সম্পর্কে বললেন আমায়। যেহেতু তারেক জিয়া সাহেবের ভাষায় আমি মোটা-সোটা মানুষ, বসতে পারিনা বসলে উঠতে পারিনা, অতএব সব জায়গায় স্যুট পড়ে নামাজ পড়তেও পারিনা। সে যাক কিছুক্ষন পর দেখি ঐ ডাক্তার রেড ওয়াইন পান করছেন। দেখে আমার মেজাজ গেল বিড়ড়ে। তাকে আমি রাগত স্মরে বলি, একটু আগে আমাকে বললে নামাজ পড়তে এখন দেখি মদ খাস, আমার এমন ব্যাবহারে আমার স্ত্রী কিছুটা নয় অনেকটা বিব্রত। কেননা কথাগুলো আমি একটু জোর গলায়ই বলেছিলাম। এর পর থেকে স্ত্রী বলেছিল তুমি আমার সাথে কোথাও যাবেনা, সেই থেকে আসলেও আমি যাইনা, ২০০৮ সালে স্ত্রী যখন বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষনে গিয়েছিল সাথে ছিলাম আমি। তখন বৃটিশ হাইকমিশনের বাসায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষন দলের নেতার সাথে কথা কাটা-কাটি হয়েছিল। তারপর আমার স্ত্রী, ব্যারোনেস পলা উদ্দিন এবং ব্যারোনেস স্যান্ডি বর্মা যখন শ্রদ্ধেয় শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন, আমি আর যাইনি !
সে যাক, তারেক রহমান সাহেবের চরিত্র হয়তো এ রকমই, যাকে যা বলার সহজভাবে বলে ফেলেন। কিন্তু এ বলাটা কটাক্ষ করার পর্যায়ে যেতে পারে হয়তো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি,আমার মত ক্ষুদ্র আর সাধারন মানুষের প্রতি নয়।
যারাঁ আমাকে চেনেন,তারা জানেন,বছরে প্রায় শত হাজার পাউন্ডের লগ্নির টিভি চালানোর পেশার তারে জীবনকে জড়িয়েছি অর্ধ-যুগেরও বেশি। কিছু দেনা ভাই-স্ত্রী আর দুএকজন বন্ধুর কাছে থাকলেও এখনো আমার কোন ব্যাংক লোন নেই। আমার টিভির স্ক্রীন কখনো এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। ধার-দেনা নেই,দেনার দায়ে যেহেতু নিজের নাম পাল্টানোর কোন ঘটনাও ঘটেনি,এ কারনে রাতে ঘুম ভালো হয়,পরচর্চা আর মেরে কেটে খাবার দুশ্চিন্তা নেই বলেই এই পশ্চাশ ছুইঁ ছুঁই বয়সেও আমার কোন রোগ বালাইও নেই আলহামদুলিল্লাহ। মনে দুশ্চিন্তা,কুচিন্তা নেই। আর এই টাকার দেশে,হা-হুতাশের দেশে এমন অবস্থা হলো স্বাস্থ্যের আর উপায় কী ভাল থাকা ছাড়া। ছোটবেলায় পড়েছিলাম,স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল। তৎকালীন আর্মি অফিসার পিতাও তাই বলতেন। এখন দেখি এই স্বাস্থ্যের জন্যও বড় মানুষদের কাছ থেকে কটু কথা শুনতে হয়!
৩.
পাঠক বাংলাদেশের বাস্তব যে অবস্থা সে অবস্থায় আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির বাইরে কিছু চিন্তা করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। আমরা এ দু দলের বাইরে কাকে দিয়ে দেশ চালাব? আমরা তো আর মঙ্গল গ্রহ থেকে কাউকে এনে দেশ চালাতে পারবোনা, এ দুদলের নেতাদের চরিত্র আর নৈতিকতা যত উন্নত হবে ততই দেশের মঙ্গল ।
তারেক রহমান সাহেবকে আরো অনেক সহনশীল হতে হবে। আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের বক্তব্য নিয়ে আমাকে উদ্দেশ্য করে পাবলিক মিটিংএ বক্তৃতা করলে তা কোন বিচারে ইতিবাচক সেটি তিনিই ভালো জানেন। তবে তিনি যদি তার নিজের দলের খোজঁ-খবর আরো বেশি রাখতেন,তাহলে পদ-বানিজ্য,ফটোরাজনীতি, আর সরকারের সাথে আতাতের রাজনীতির অন্ধগলি ছেড়ে অনেকদুর এগিয়ে থাকতো বিএনপি। প্রিয় তারেক রহমান, পারলে একবার যুক্তরাজ্য বিএনপির বর্ষিয়ান নেতা মিয়া মনিরুল আলমের খোজঁ নিয়েন। আপনার দুর্দিনে,দলের দু:সময়ে শক্ত হাতে হাল ধরা এই অভিমানী নেতা এখন রোগে-শোকে কাবু। কেবল তিনি নন,আমাদের সব পর্যায়ের বর্ষীয়ান মুরব্বীরা যেন আপনার,আপনাদের দল বা দলগুলো থেকে সন্মান নিয়ে বিদায় নিতে পারেন,সেটি তো দেখতে হবে আপনার মতো নেতাকেই।
বিএনপির মত বিশাল দলে ডায়নামিক লিডারশীপের দরকার। জনাব তারেক রহমান আপনাকে কিছু কথা বলা দরকার, আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন গনমাধ্যমের জন্য কি গঠনমুলক দীর্ঘমেয়াদী কিছু করেছিলেন? গিয়াস উদ্দিন আল মামুনরা টিভি চ্যানেল পেলেন,পাওয়ার তো কথা ছিল সাংবাদিকদের,পেয়েছিলেন কী? মাহমুদুর রহমান সাহেব গায়ে পড়ে কলামিষ্ট হলেন, তারপর আমার দেশের দায়িত্ব নিলেন, শফিক রেহমান সাহেব এর ব্যাপারে লিখে লাভ নেই, তিনি বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যায়যায়দিন দৈনিক করলেন, জমি নিলেন, সে অনেক কথা, তারেক রহমান সাহেব আমাকে ইটিভির ব্যাপারে জ্ঞান দান করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু ইটিভি নিয়ে কি হয়েছিল? নুরুল ইসলাম ছোটন সাহেব কি আছেন ,জনাব তারেক জিয়া আমার জানতে খুবই ইচ্ছে করে? আমার জানতে ইচ্ছে করে আপনি সেদিন ইটিভি নিয়ে কি ভেবেছিলেন ! আপনি তো বই এর ভাষায় (স্বাধীন !) আদালতের ভাষ্যে আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন সেদিন, আমিও বুঝলাম! আমি তো কথা বাড়াইনি।
জনাব তারেক রহমান আপনারা যতদিন ক্ষমতায় ছিলেন ততদিন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিলনা। আপনার দল তো রাজনীতির ইনিষ্টিটিউশনে পরিণত হওয়ার কথা ছিল। আপনি লন্ডনে আছেন আজ প্রায় আট বছর হতে চলল, অনেকে প্রশ্ন তুলেন,এখানে ভিন্ন পরিবেশে ইতিবাচক যাত্রায় এই আট বছরে পরিশীলনের রাজনীতি কী এগিয়েছে? বিএনপির গঠনতন্ত্রে ভাইস চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রাখার বিধান না থাকলেও ক্ষতি নেই ! আপনার মরহুম পিতার গড়া দল এটা,আপনি গঠনতন্ত্রের বাইরে বা ব্যাক্তিগত ভাবে উপদেষ্টা করতেই পারেন। কিন্তু আপনার উপদেষ্টা তালিকায় রাজনীতিবিদের বেশে কিছু বুদ্ধি প্রতিবন্ধি, আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে থাকা লোকজন হয়তো থাকতে হয়,রাখতে হয়-এটাই বুঝি একুশ শতকের নতুন ধারার আধুনিক রাজনীতি।
বয়স ৫০ ছুঁই ছুঁই করছে, কিন্তু নিজেকে বদলাতে পারলাম না। যাকে যা বলার নয় তাকে তাই বলি, অবশ্য যাতে না বলা যায় তার জন্য অনেক প্রোগ্রামে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।
আমি আগে বিশ্বাস করতাম বিপ্লব দীর্ঘজীবি হউক, মেহনতি মানষের জয় হউক,চ্যানেল আই ইউরোপের দায়িত্ব নেয়ার পর বুঝতে পারলাম বিপ্লব দীর্ঘজীবি হয়না, মেহনতি মানুষেরও জয় হয়না, তোষামোদী দীর্ঘজীবি হয়, তোষামোদকারীদেরই জয় হয়।
জনাব তারেক রহমান, আপনি যে দেশে বাস করেন সেদেশের লেবার পার্টির ইতিহাস আপনাকে পড়তে হবে। আপনার এক এডভাইজার আছেন যাকে আমি চিনি তিনি লেবার পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত, লেবার পার্টি ১৯ শতকের পুরোটি সময় জুড়েই ক্ষমতার বাইরে ছিল ১৯৯৭ ইংরেজীর দিকে লেবার পার্টিতে চার খলিফার আর্ভিবাভ হয়েছিল, এই চার খলিফার মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন, সাবেক শিল্পমন্ত্রী পিটার মেন্ডেলসন, এবং সাবেক ফরেন সেক্রেটারী রবিন কুক, এ চারজনের কারনেই লেবার পার্টি ক্ষমতার মসসনদে বসেছিল। আপনার দল বিএনপি আজ বাংলাদেশের রাষ্টক্ষমতার বাইরে, এ জন্য কোনো অসুবিধে নেই। আওয়ামীলীগ ক্ষমতার বাইরে ছিল ২১ বছর, অনেক ঝড় ঝাপ্টা আওয়ামীলীগকে পাড়ি দিতে হয়েছে। তারপরও আওয়ামীলীগ হাল ছেড়েনি।
আপনার দলের বিদেশ নীতিটা কি আমি বুঝিনা, বিদেশনীতি কে দেখাশুনা করেন তা ও জানিনা, যারা বিদেশনীতি নিয়ে কথা বলেন তারা কতটুকু সফল? আমি জানিনা, এ ব্যাপারে আপনি ভালোই জানেন। আপনি কি জানেন আপনার দলকে বহি:বিশ্ব কি বলে জানে? আমি বলতে চাইনা, আমার বিশ্বাস আপনি জানেন! না জানার কথা নয়। জনাব তারেক রহমান আপনার দলকে নিয়ে অনেকেই জানতে চান, সম্প্রতি শ্রদ্ধেয় আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মন্তব্য নিয়ে আপনার দল কি বলেছে? সারা জীবন যিনি লন্ডনে কাটালেন তিনি নিউইয়র্কে গিয়ে কেন বক্তব্য রাখবেন? কার ইঙ্গিতে কিসের জন্য তিনি বক্তব্য রাখবেন বুঝতে হবে।
৪.
ব্যার্থতার পরও সরকার যদি দাড়িয়ে থাকে তবে জনগনের কাছে সেটি একান্তই বিরোধীদলের ব্যার্থতা। এই সরকার তেমনি তাদের ভুলগুলো নিয়ে সদর্পে দাড়িয়ে আছে বিএনপির ব্যার্থতার পাহাড়ে,এমন কথা আলোচনার টেবিলে,সর্বত্রই। আপনার দলের ড্রইংরুম উইংগের সরকারদলের সাথে মিলে দাপটে ব্যাবসা করা নেতারা বলেন- সরকারের দমন-নিপীড়ন আর পুলিশের গুলিবাজির জন্য বিরোধীদল আন্দোলন করতে পারছে না। কিন্তু ৯০ এর গনবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে স্বৈরাচারের ট্রাক রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল,কিন্তু স্বৈরাচার পরাজিত হয়েছিল জনতার আন্দোলনে। বিএনপি বিরোধী বলেন, তারেক রহমান তারঁ রাজনৈতিক জীবনে ৫ জানুয়ারীর সেই নির্বাচনের আগে-পরে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন-সেই আন্দোলন ব্যার্থ হয়েছে,সেই ব্যার্থতার দায় কী তারেক রহমান এড়াতে পারেন এমন প্রশ্ন তুলেন তারা। আমি বলি এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিএনপির উপলব্ধির জায়গা সৃষ্টি হয়েছে,দলের সাংগঠনিক শক্তি কতটুকু সে সম্পর্কে সম্ভবত দলের ‘মালিকরা‘ অবহিত হতে পেরেছেন। জনগন বিএনপির সাথে আছে,কিন্তু জনগনের সাথে বিএনপি নেই-এ কথাটিকে মিথ্যা প্রমান করার দায়,আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দলের কর্মীদের নয়,বরং মালিকের ইচ্ছায় দলের গঠনতন্ত্র পাল্টানোর রাজনীতিতে সহনশীলতার সুবাতাস এখন বড়ো দরকার।
প্রিয় তারেক রহমান আপনি আমার মত ছোট খাটো একজন মানুষের বক্তব্য নিয়ে এতটা আপসেট হওয়ার দরকার নেই। চেতনা ব্যবসা আর ধর্মীয় ব্যবসা দুটোই ব্যবসা, যিনি ব্যবসায় ঠিকে থাকেন তিনিই সফল, আমার ব্যবসাটা কি? রাজনীতির ব্যবসা থেকে আমার ব্যবসাটার কিছু পার্থক্য আছে, আমি চেতনা ব্যবসা আর ধর্মীয় ব্যবসা করতে পারিনি বলেই মিডিয়ার ব্যবসায় এসেছি, আমাকে রাজনীতির ব্যবসার সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হবে। আপনি অনেক বড় মানুষ, অনেক বড় মাপের মানুষ , আপনি স্বপ্ন দেখেন একদিন দেশের নেতৃত্ব দিবেন। আমি চাই আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক, আপনি সফল হউন। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা। ভালো থাকবেন জনাব তারেক রহমান।
পাদটীকা:
ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিহাস হচ্ছে ইতিহাস থেকে আমরা শিক্ষা নেই না।
খালেদা জিয়া যখন গৃহবন্দি,তখন তার পুত্রসম দাবীদার দাপুটে তারঁই দলের নেতা আমান উল্লাহ আমান ছেলের বিয়ে দেন বিশ হাজার মানুষের খাবারের আয়োজন করে খোদ সংসদ চত্বরে। এইসব আমান সাহেবরা একদিনে ৪৪টি মামলায় জামিন পান। আর খালেদা জিয়াকে আতাতের নেতাদের দল ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রের ভয়ে ওমরাহর নিয়্যত করেও তীর্থযাত্রা বাতিল করতে হয়। যে দলের লাখ লাখ মাঠের কর্মী হামলা মামলায় বিপর্যস্ত,পরিবার বিছিন্ন,আর নেতারা ঘুমান এসি রুমে আর আতাতের কারাবরনের হাসপাতালবাসে…। আর পুড়ে সাধারন মানুষ,ব্যার্থ আন্দোলনের দগদগে অগ্নিদাহ বয়ে বেড়ায় রিক্সাওয়ালার হাড় জিরজিরে দেহ।
সেই দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবে জনাব তারেক রহমান যদি বাহাদুরি করেন,সেটা অবশ্যই সঙ্গত, কিন্তু আমার মত ছাপোষা সাংবাদিকের জন্য সেটি বোধকরি নিতান্তই বেয়াদবি…তাই গোস্তাকি মাফ করবেন তারেক রহমান।
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী সোয়েব-সাংবাদিক,আহবায়ক-ইউকে-বাংলা প্রেস ক্লাব।


Spread the love

Leave a Reply