থেরেসা মের পক্ষে ভোট দিলেন এমপিরা
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ নতুন পরিকল্পনার ওপর ভোটাভুটিতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের পক্ষে ভোট দিলেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যেরা। এমপিরা এই শর্তে ভোট দেন যে থেরেসা মেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে আইরিশ ‘ব্যাকস্টপের’ পরিবর্তন নিয়ে শক্ত অবস্থানে যেতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার পার্লামেন্টে নতুন পরিকল্পনার পক্ষে ৩১৭ জন এমপি ভোট দেন।
এর আগে গত সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দলের আইনপ্রণেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থার পরিবর্তন চেয়ে আনা সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য দলের আইনপ্রণেতাদের অনুরোধ জানান। কনজারভেটিভ পার্টির পেছনের সারির এমপিদের সংগঠন ‘১৯২২ কমিটি’র চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্রাডির আনা ওই সংশোধনী প্রস্তাবে ‘ব্যাকস্টপ’ ধারার বদলে বিকল্প কোনো উপায়ে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার কথা বলা হয়েছে। ব্যাকস্টপ হলো বিচ্ছেদের পর ইইউ সদস্যভুক্ত স্বাধীন আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার নিশ্চয়তা। এর ফলে নর্দান আয়ারল্যান্ডকে ইইউ আইনের অধীনে থাকতে হবে। এই ধারার বিরোধীরা বলছেন, এতে আইনগতভাবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তবে এত সমালোচনা সত্ত্বেও অনড় মে। পার্লামেন্টে থেরেসা তাঁর ব্রেক্সিট খসড়া যাতে পাস করাতে পারেন, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বলা হচ্ছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড নিয়ে ইইউয়ের কাছ থেকে খসড়ায় বদল নিশ্চিত করতে।
দুই সপ্তাহ আগে ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া নিয়ে ভোটাভুটিতে বিশাল ব্যবধানে হেরে যান প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। যুক্তরাজ্য সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে সদস্যদের ভোটাভুটিতে ২৩০ ভোটে হেরে যান তিনি। ব্রেক্সিট চুক্তি পাসে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন তাৎক্ষণিকভাবে থেরেসা মের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সংসদের অন্যান্য বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটস, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি, প্লাইড কামরি ও গ্রিন পার্টি এই অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থন করে। পরে আস্থা ভোটে টিকে যান তিনি। গতকাল আবার ভোটাভুটিতে ইইউয়ের সঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তি পুনরায় আলোচনা করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন এমপিরা।
২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইইউয়ের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কচ্ছেদের রায় হয়। ভোটে হারের পর রক্ষণশীল দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে থেরেসা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে বিচ্ছিন্নতার পথরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন। এর আগে ইইউতে থাকার বিষয়েই প্রচার চালাতেন মে। তবে ওই রায় মেনে নেওয়া যে জরুরি, তা তিনি মানুষকে বোঝাতে শুরু করেন।