দুর্নীতি দমন মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পারিবারিক বন্ধু সালমানপুত্র শায়ানের বাংলাদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ

Spread the love

ডেস্ক রিপোর্টঃ দ্য মেইল ​​অন সানডে প্রকাশ করেছে যে টিউলিপ সিদ্দিকের একজন পারিবারিক বন্ধু, যিনি রাজা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।

সিদ্দিক পরিবারের সাথে আহমেদ শায়ান রহমানের সম্পর্ক কয়েক দশক ধরে পুরনো, এবং মন্ত্রীর মা লন্ডনে তার ১.৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বাড়িতে ভাড়া ছাড়াই থাকেন।

কোটিপতি ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান – যা ২০০৭ সালে চার্লস দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

বাকিংহাম প্যালেসে এক নৈশভোজে চার্লস বলেন: ‘আমরা আমাদের সাথে কাজ করা লোকদের মতোই ভালো। তাই আমি আনন্দিত যে বাংলাদেশে আমাদের নতুন কর্মসূচি আমাদের বাংলাদেশ উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান শায়ান রহমানের তত্ত্বাবধানে এবং সমর্থনে থাকবে।’

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) জানিয়েছে যে তারা দুর্নীতির অভিযোগে ৪২ বছর বয়সী মিঃ রহমান এবং তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে।

তারা মিঃ রহমানের বাবা সালমানের অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে, যিনি বেক্সিমকো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং মিসেস সিদ্দিকের খালা শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সরকারের একজন মন্ত্রী ছিলেন, যিনি আগস্টে পতনের আগে পর্যন্ত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ শাসন করেছিলেন।

সালমান এফ রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত আগস্ট মাসেই সালমান, তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করেছে।

শনিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ‘পারিবারিক বন্ধু’।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, টিউলিপের খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন সফরের সময় শায়ানের ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বাড়িতে ‘বিনা ভাড়ায়’ অবস্থান করতেন। এছাড়া, টিউলিপের মা শেখ রেহানা লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে যে বাড়িতে বিনাভাড়ায় থাকেন, সেটিও শায়ান রহমানের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অফশোর কোম্পানির মালিকানায়।

ডেইলি মেইল আরও জানিয়েছে, দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে ব্রিটিশ রাজা চার্লসের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় দাতব্য সংস্থা ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’। শায়ান রহমান বর্তমানে এই সংস্থার উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

একসময় তিনি তাদের পারিবারিক ব্যবসা বেক্সিমকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ছিলেন। তবে, ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে এখনও তার পরিচয় বেক্সিমকো গ্রুপের সিইও হিসেবে উল্লেখ করা রয়েছে।

শায়ানের প্রশংসা করে বাকিংহাম প্যালেসের এক নৈশভোজে রাজা চার্লস বলেছিলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যারা কাজ করে, আমরা তাদের মতই ভালো। তাই আমি আনন্দিত যে, শায়ান রহমান বাংলাদেশে আমাদের নতুন প্রকল্পটি দেখভাল করার পাশাপাশি তাতে সহযোগিতা করবেন।’

ডেইলি মেইল লিখেছে, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন শায়ান।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট বলেছে, ‘আমরা শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে অবগত। আমরা বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছি।’

অভিযোগের বিষয়ে শায়ানের এক মুখপাত্রের বক্তব্যও তুলে ধরেছে ডেইলি মেইল। তিনি বলেন, ‘শায়ান রহমানের জন্ম যুক্তরাজ্যে। তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি কিংবা তার স্ত্রী কখনো কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে অন্য ৩০০ জনের সঙ্গে কেবল বাংলাদেশেই তাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ।’

ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান রয়েছে শায়ানের। সম্প্রতি সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেই অনুদানের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও। শায়ানের ‘দানশীলতা’ নিয়ে তিনি রসিকতাও করেন।

শায়ান এক সময় আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনে তিনি পরিচালক পদও হারান।


Spread the love

Leave a Reply