না ফেরার দেশে খালেদা পুত্র কোকো
নাজমিন রিয়া, বাংলাদেশ
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মৃত্যুবরণ করেছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কোকোকে মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। আজ বেলা আড়াইটার দিকে গুলশান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ এসকান্দরের স্ত্রী নাসরিন সাঈদ ও শামীম এসকান্দরের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা খালেদা জিয়াকে কোকোর মৃত্যুর সংবাদ দেন।
ছেলে হারানোর শোকে নির্বাক হয়ে যান বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে একান্তে কান্নাকাটি করছেন তিনি। বাইরের কারও সঙ্গে দেখা করছেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
কোকোর মৃত্যুর খবর শুনে খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গুলশানে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তবে কার্যালয়ের গেট না খোলায় মিনিট পাঁচেক অবস্থানের পর প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর ফিরে যায়।
এদিকে গুলশানের কার্যালয়ে গেছেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এসকান্দর, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক প্রমুখ।
কোকোর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক শোক বাণীতে রওশন এরশাদ, মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এ শোক প্রকাশ করেন। শোকবাণীতে তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এছাড়া কোকোর মৃত্যুতে আরো গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ শোক প্রকাশ করেন। শোকবাণীতে খালেদা জিয়া ও তার পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি জানানো হয়।
২০০৭ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হন আরাফাত রহমান কোকো। চিকিৎসার জন্য ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান কোকো। পরে সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়া যান। স্ত্রী সৈয়দ শামিলা রহমান সিঁথি, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে কুয়ালালামপুরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন আরাফাত।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার সাংবাদিকদের বলেছেন, আগামীকাল রবিবার জোহরের নামাজের পর কুয়ালালামপুরের মসজিদে নাগারায় আরাফাতের জানাজা হবে।