যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে জন সংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে জন সংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর । সম্প্রতি বাংলাদেশের বহল প্রচারিত দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত রিপোর্টের প্রতিবাদ পাঠিয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন সংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর । সে প্রতিবাদ লিপিটির কপি আমাদের হাতে পৌছেছে। যা পাঠকদের জন্য হুবহু নিচে তুলে ধরা হলোঃ প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব কে জড়িয়ে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে মানহানির হীন উদ্দেশ্যে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসে । এতে বলা হয় সংবাদে শোয়েব কে জড়িয়ে যেসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তা সত্য নয়। রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগলাভের পরে অনেক অনিয়ম, দুর্নীতি রুখে দেয়ার ফলে অনেকেই তার নামে মিথ্যা, ভুল ও মনগড়া তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
প্রকৃত তথ্য হচ্ছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালা অনুসরণ করেই যোগ্য প্রার্থী হওয়ায় রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া হয়। এতে কোন ব্যক্তি বা মহলের প্রভাব খাটানো হয়নি।
প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ রয়েছে যে, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ তথ্য একান্তই মনগড়া এবং না জেনে তুলে ধরা হয়েছে। ইউজিসির কড়া নির্দেশনা রয়েছে যে, অনুমোদন ছাড়া কোন ধরণের নিয়োগ দেয়া যাবেনা। সে নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যপরিসর বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউজিসির কাছে জনবল চেয়ে অনুরোধ জানানো হয়। ইউজিসির অনুমোদন লাভের পরই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভিত্তিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিযুক্ত করা হয়েছে । এখানে অন্যান্যদের সাথে নিয়ে আর্থিক লেনদেনের যে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে তার মাধ্যমে রেজিষ্ট্রররের সামাজিক পরিচিতি ও ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ মনে করে, একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় অসৎ উদ্দেশ্যে এই সংবাদটি পরিবেশন করা হয়েছে।
২০ জুলাই প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, এমএস না থাকা সত্তেও উপাচার্যের মেয়েকে পদোন্নতি দিতে শিক্ষক পদোন্নতি নীতিমালা সংশোধন করে শুধু কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে শিক্ষকরা এমএস ছাড়া সহকারী অধ্যাপক হতে পারবেন এমন নিয়ম চালু করেন রেজিস্ট্রার। শিক্ষকদের চাকরির নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সঙ্গে রেজিষ্ট্রার কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। এই নীতিমালা সিন্ডিকেটেই পাশ হয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে এমন নিয়ম চালু করা সংবাদে অজ্ঞতাবশত তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়াও উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার অনুগত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করে ২০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যাদেশ প্রদান করেন মর্মে প্রকাশিত বক্তব্য কল্পনাপ্রসূত। এ ধরণের কোন কার্যাদেশ এ পর্যন্ত প্রদান করা হয়নি। ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করে প্রতিবেদক চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং অধিকতর অভিজ্ঞতা থাকায় শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে সহকারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে মফিজুল ইসলাম এবং আবাসিক ছাত্রীদের চিকিৎসার বিষয়টি জরুরী বিধায় যোগ্যতার ভিত্তিতে ডা. রায়হানা হককে ‘চুক্তিভিত্তিক’ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা দুজন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে রেজিষ্ট্রররের সাথে মোটেও পরিচিত ছিলেন না।
সংবাদে উল্লেখ রয়েছে ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই ১৩০ জনকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। আসলে ঐ সময় রেজিষ্ট্ররসহ নিয়োগপ্রাপ্ত সবাইকে সরাসরি স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হয়, ‘এডহক’ ভিত্তিতে নয়। আর নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতনসহ অন্যান্য ব্যয় নির্বাহে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা ও প্রদানকৃত বাজেট থেকেই ব্যয় নির্বাহ করা হয়। কল্যাণ তহবিল ও উন্নয়ন তহবিল থেকে কিছু অর্থ ব্যয় করা হলেও তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্ত বাজেটে সমন্বয় করা হচ্ছে।
এছাড়াও প্রকাশিত সংবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে রেজিষ্ট্রররের হস্তক্ষেপ ও প্রভাব খাটানোর কথা বলা হয়েছে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রেজিস্ট্রার এর ক্ষমতা শুধুমাত্র ভাইস-চ্যান্সেলরের আদেশ জারি করা। এখানে রেজিস্ট্রার হিসেবে প্রভাব খাটানোর সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরণের নিয়োগের ক্ষেত্রে পৃথক বোর্ড রয়েছে। দেশের খ্যাতনামা অধ্যাপক ও সরকারের উর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা এসব বোর্ডের সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসব বোর্ডের সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। তারাই নিয়োগবোর্ডে বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী নির্ধারণ করে দেন। রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে সুপারিশকৃত প্রার্থীর নিয়োগ আদেশ জারি করা হয় মাত্র। এসব প্রার্থী নির্ধারণে রেজিষ্ট্রররের পছন্দ বা প্রভাব খাটানোর যে বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তা অবান্তর এবং অভাবনীয়। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো প্রার্থী নিয়োগের বেলায় পুলিশ/সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্রাক-যাচাইপূর্বক করার বিষয়টিও কর্তৃপক্ষ অনুসরণ করে থাকে । এক্ষেত্রে কোন সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনের কর্মীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলে এর দায়িত্ব রেজিষ্ট্রররের উপর বর্তায় না। কেননা প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের কোন হস্তক্ষেপ থাকেনা। যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সরকার কর্তৃক গঠন করা আইনের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কারো নিজস্ব সিদ্ধান্ত বা পছন্দ কার্যকর হয়না। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক যেকোন দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে উপাচার্য সিদ্ধান্ত বা নির্দেশ দিয়ে থাকেন। ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক ড. মোহন মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্রয় কমিটির সভাপতি এবং কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (গবেষণা) পদে দায়িত্ব প্রদান করার বিষয়টি রেজিষ্ট্রররের এখতিয়ার বর্হিভূত। আর বর্তমানে এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটেরও সদস্য নন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অনুষদীয় ডিন হিসেবে পর্যায়ক্রমে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সিন্ডিকেটের সদস্য হয়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর অনেক অনিয়ম, দুর্নীতি রুখে দিয়েছেন মিঃ শোয়েব। যাদের দুর্নীতি করতে দেননি তারাই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। হয়তো তাদের দেয়া ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নামগড়া কোনো গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্ট্রারকে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রকাশিত সংবাদে প্রতীয়মান যে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে মনগড়া তথ্য জুড়ে দিয়ে রেজিষ্রারের সামাজিক ও কর্মক্ষেত্রের সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। সংবাদে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারো কারো বক্তব্যের বরাত দিয়ে রেজিষ্রারের বিরুদ্ধে যে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন । কর্তৃপক্ষের মতে মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে একটি মনগড়া ও কাল্পনিক সংবাদের আকার বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা সঠিক সাংবাদিকতা নয়। এটা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃকপক্ষ এই সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে ।